উত্তর প্রদেশে সিএএ-বিরোধীদের ছবি সরানোর নির্দেশ, 'ধাক্কা খেল' যোগী সরকার
https://parstoday.ir/bn/news/india-i78127-উত্তর_প্রদেশে_সিএএ_বিরোধীদের_ছবি_সরানোর_নির্দেশ_'ধাক্কা_খেল'_যোগী_সরকার
ভারতের উত্তর প্রদেশের লক্ষনৌয়ের বিভিন্ন রাস্তার মোড়ে মোড়ে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের (সিএএ) প্রতিবাদে আন্দোলনকারীদের ছবি সম্বলিত হোর্ডিং সরানোর নির্দেশ দিয়েছে এলাহাবাদ হাইকোর্ট। আজ (সোমবার) প্রধান বিচারপতি গোবিন্দ মাথুর ও বিচারপতি রমেশ সিনহার সমন্বিত বেঞ্চ ওই নির্দেশ দিয়েছে।
(last modified 2025-09-11T14:06:22+00:00 )
মার্চ ০৯, ২০২০ ১৯:৫০ Asia/Dhaka
  • এলাহাবাদ হাইকোর্ট
    এলাহাবাদ হাইকোর্ট

ভারতের উত্তর প্রদেশের লক্ষনৌয়ের বিভিন্ন রাস্তার মোড়ে মোড়ে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের (সিএএ) প্রতিবাদে আন্দোলনকারীদের ছবি সম্বলিত হোর্ডিং সরানোর নির্দেশ দিয়েছে এলাহাবাদ হাইকোর্ট। আজ (সোমবার) প্রধান বিচারপতি গোবিন্দ মাথুর ও বিচারপতি রমেশ সিনহার সমন্বিত বেঞ্চ ওই নির্দেশ দিয়েছে।

রাজ্যে সিএএ’র বিরুদ্ধে আন্দোলনে যে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে হোর্ডিংয়ে ছবি দেওয়া আন্দোলনকারীদের কাছ থেকে তা আদায় করতে চাচ্ছে রাজ্য প্রশাসন। কিন্তু আজ আদালতের রায়ের ফলে বিজেপিশাসিত যোগী আদিত্যনাথ সরকার ‘বড় ধাক্কা’ খেয়েছে এবং এতে রাজ্য সরকারের মুখ পুড়েছে বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন।

এ ব্যাপারে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের ‘বন্দি মুক্তি কমিটি’র সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য ভানু সরকার রেডিও তেহরানকে বলেন, ‘উত্তর প্রদেশের হাইকোর্ট যে রায় দিয়েছে, এই যে ভয়ঙ্কর চিত্র ওরা (বিজেপি) তৈরি করতে দেশে যে, প্রতিবাদীদের দেশদ্রোহী বলা, পিটিয়ে হত্যা করা, এসব চিত্রের বিরুদ্ধে রায় গেছে এটা খুবই ভালো। চারদিকে অন্ধকার তারমধ্যে এটা আশাবাদ। আসলে উত্তর প্রদেশ সরকারের যে দুষ্কর্ম করার দরকার তারা সেটা করে ফেলেছে। ছবি টাঙিয়ে সিএএ-এনআরসি-এনপিআরের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী মানুষজনদের অন্যভাবে খুন করার জন্য আরএসেএসের যে খুনি বাহিনী আছে তাদেরকে সম্পূর্ণ পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয়েছে।’

ভানু সরকার

‘সিএএ-এনআরসি-এনপিআরের বিরুদ্ধে আন্দোলন নিয়ে পুলিশ প্রশাসন যুদ্ধাপরাধ করেছে, সেজন্য ওদের বিচার হওয়া উচিত’ বলেও ভানু সরকার মন্তব্য করেন।    

এলাহাবাদ হাইকোর্ট আজ রাজ্য সরকারকে সমস্ত জায়গা থেকে সব হোর্ডিং সরিয়ে ফেলার নির্দেশ দিয়েছে। একইসঙ্গে আগামী ১৬ মার্চের মধ্যে হাইকোর্টের  রেজিস্ট্রার জেনারেলকে রিপোর্ট দিতে হবে।

হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, ওই ঘটনা ‘সাধারণ মানুষের গোপনীয়তায় অনুচিত হস্তক্ষেপ করা হয়েছে। প্রশাসনের ‘নির্লজ্জ’ কর্মকাণ্ড বলেও মন্তব্য করেছেন বিচারপতিরা। 

আদালতের রায়ে বলা হয়েছে, ‘এই মামলা এমন নয় যে, কোনও ব্যক্তি অন্য কারও ব্যক্তিগত ক্ষতি করেছে যাঁদের ব্যক্তিগত তথ্য ব্যানারে দেওয়া হয়েছে। বরং সাংবিধানিক মূল্যবোধে আঘাত করেছে এবং প্রশাসনের নির্লজ্জ প্রদর্শন হয়েছে। এটা সরকারের অগণতান্ত্রিক কাজ, যাঁদের দায়িত্ব হল সব সময় জনগণের সঙ্গে সম্মান ও সৌজন্যমূলক আচরণ করা যাতে সাংবিধানিক ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ রক্ষিত হয়।’ 

লক্ষনৌয়ের বিভিন্ন রাস্তার মোড়ে মোড়ে সিএএ'র প্রতিবাদে আন্দোলনকারীদের ছবি 

রাজ্য সরকারের পক্ষে আদালতে সাফাই দেওয়ার চেষ্টা হয়, ‘জনস্বার্থে হস্তক্ষেপ করছে আদালত।’ কিন্তু ক্ষুব্ধ বিচারপতিদের প্রতিক্রিয়া, ‘ন্যায় বিচারের জন্যই আদালত। চোখের সামনে কারও সঙ্গে অন্যায় বা অবিচার হলে কোনও আদালতই চোখ বন্ধ করে বসে থাকতে পারে না।’ 

উত্তর প্রদেশে ‘সিএএ’ প্রতিবাদীদের আন্দোলনকে কেন্দ্র করে অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুরের জেরে যে সরকারি সম্পত্তির ক্ষতি হয়েছিল সেই ক্ষতিপূরণ ওই সব অভিযুক্তদের কাছ থেকে আদায় করা হবে বলে প্রশাসন স্থির করেছিল। এজন্য তাঁদের ছবি বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ রাস্তার মোড়ে মোড়ে টাঙানো হয়েছিল। কিন্তু হাইকোর্টের রায়ে রাজ্য প্রশাসন বড় ধাক্কা খেয়েছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।#

পার্সটুডে/এমএএইচ/এআর/৯

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।