এবার নেপালি সংসদের উচ্চকক্ষেও মানচিত্র সংশোধনী বিল পাস
নেপালি সংসদের উচ্চকক্ষ ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলিতে পাস হল মানচিত্র সংশোধনী বিল। আজ (বৃহস্পতিবার) বিলটি সর্বসম্মতিতে পাস হয়ে যায়। এদিন সংসদে উপস্থিত ৫৭ জন সদস্যের প্রত্যেকেই ওই বিলের পক্ষে সমর্থন জানান। সেদেশের নয়া রাজনৈতিক মানচিত্রে ভারতের উত্তরাখণ্ডের লিমপিয়াধুরা, লিপুলেখ এবং কালাপানি অঞ্চলকে নিজেদের বলে দেখানো হয়েছে।
নেপালের ক্ষমতাসীন কেপি শর্মা ওলি সরকার ভারতের আপত্তি অগ্রাহ্য করে বিতর্কিত ওই বিলটি প্রথমে প্রতিনিধি পরিষদ এবং তারপরে জাতীয় পরিষদে পাস করালো।
এরআগে গত (শনিবার) নেপালি সংসদের নিম্নকক্ষে বিলটি পাস হয়েছিল। তখনই ওই বিষয়ে আপত্তি জানিয়ে নেপাল কৃত্রিমভাবে ভারতীয় এলাকার উপরে নিজেদের দাবি প্রতিষ্ঠা করতে চাচ্ছে বলে ভারতের পক্ষ থেকে মন্তব্য করা হয়। কিন্তু সেই আপত্তিতে কান না দিয়ে এবার নেপালী সংসদের উচ্চকক্ষেও পাস হল ওই বিল।
এরআগে ওই ইস্যুতে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র অনুরাগ শ্রীবাস্তব বলেছিলেন, ‘আমরা বিষয়টির দিকে নজর রেখেছি। ওই বিষয়ে আমাদের অবস্থান আগেই স্পষ্ট করা হয়েছে। কৃত্রিমভাবে এই এলাকা বৃদ্ধির দাবির ঐতিহাসিক কোনও ভিত্তি নেই। এটা মোটেই সমর্থন করা যায় না।’
নেপালের প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলির বামপন্থী সরকারের আনা ওই বিলকে প্রধান বিরোধীদল নেপালী কংগ্রেস, রাজতন্ত্রপন্থী রাষ্ট্রীয় প্রজাতন্ত্র পার্টি এমনকি, ভারতীয় বংশোদ্ভূত মদেশীয়দের রাজনৈতিক সংগঠন জনতা সমাজবাদী পার্টিও সমর্থন করেছে।
সম্প্রতি প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং বলেছিলেন, ‘ভারত-নেপাল সম্পর্ক সাধারণ নয়। আমাদের রোটি-বেটির সম্পর্ক। বিশ্বের কোনও শক্তি আমাদের বিচ্ছিন্ন করতে পারবে না।’ ভারত এবং নেপাল মা কালীর বন্ধনে আবদ্ধ বলেও তিনি মন্তব্য করেন। গোটা বিষয়টিকে ‘কিছু ভুল বোঝাবুঝি’ বলে উড়িয়ে দিয়ে আলোচনার মাধ্যমে সব মিটে যাবে বলেও রাজনাথ সিং মন্তব্য করেন।
এ প্রসঙ্গে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের ‘বন্দিমুক্তি কমিটি’র সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য ভানু সরকার আজ (বৃহস্পতিবার) রেডিও তেহরানকে বলেন, ‘মোদির নেতৃত্বে আরএসএস-বিজেপি সরকার ক্ষমতায় আসার পরে তারা প্রতিবেশি সমস্ত দেশের সঙ্গে সম্পর্ক খারাপ করেছে। শ্রীলঙ্কার সঙ্গে সম্পর্ক ভালো নয়, পাকিস্তানের সঙ্গে চিরকাল রাজনৈতিক কারণে সম্পর্ক খারাপ। এতদিন এরা নেপালকে ‘হিন্দু রাষ্ট্র’ বলে দাবি করত, নেপালে হিন্দু ফলে তাঁদের সঙ্গে সম্পর্ক সবসময় ভালো থাকবে। সেই যে ‘মিথ’ তা ভেঙে গেছে। প্রতি ক্ষেত্রেই কেন্দ্রীয় মোদি সরকারের বৈদেশিক নীতি সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ।’
ভানু সরকার আরও বলেন, ‘চীনের লাদাখের যে ঘটনা, নেপালের ঘটনা, প্রতিবেশি সমস্ত দেশের সঙ্গে সম্পর্ক খারাপ। প্রতিবেশিদের সঙ্গে ঝগড়া করলে সাধারণ নিয়মে সুখে থাকা যায় না।’ ভারত মোদির আমলে প্রতিবেশি দেশের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখার নীতি ছেড়ে দিয়েছে বলেও ভানু বাবু মন্তব্য করেন।#
পার্সটুডে/এমএএইচ/এমবিএ/১৮
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।