অসমে বজরং দলের বাইক মিছিলকে কেন্দ্র করে সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষ, কারফিউ, ফ্ল্যাগমার্চ
ভারতের বিজেপিশাসিত অসমে বজরং দলের বাইক মিছিলকে কেন্দ্র করে সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষে কমপক্ষে ১৪ জন আহত হয়েছে। এছাড়া অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুরের ঘটনায় বেশকিছু যানবাহনের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
উত্তর প্রদেশের অযোধ্যায় প্রস্তাবিত রাম মন্দির নির্মাণের জন্য ভূমিপুজো ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনকে কেন্দ্র করে গতকাল বুধবার অসমে উগ্র হিন্দুত্ববাদী বজরং দল বাইক মিছিল বের করে উত্তেজক স্লোগান দিলে উভয়পক্ষের মধ্যে প্রথমে বচসা ও পরে সংঘর্ষ হয়।
আজ (বৃহস্পতিবার) ‘আজতক’ হিন্দি টিভি চ্যানেলের ওয়েবসাইটে প্রকাশ, গতকাল (বুধবার) ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রশাসনের পক্ষ থেকে কারফিউ জারি করে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া হয়েছে। জেলা প্রশাসন এব্যাপারে ঠেলামারা ও ঢেকিয়াজুলি থানা এলাকায় কারফিউ জারি করেছে। শোণিতপুরের জেলা কর্মকর্তা মানবেন্দ্র প্রতাপ সিং কারফিউয়ের ঘোষণা করেন। আইনশৃঙ্খলা জনিত পরিস্থিতির জন্য কারফিউ জারির আদেশ দেওয়া হয়েছে বলে তিনি জানান।
এদিকে, আজ (বৃহস্পতিবার) গোলযোগপূর্ণ এলাকায় সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে ফ্লাগমার্চ করা হয়েছে। জেলা পুলিশ কর্মকর্তা নুমল মহাতো বলেন, জেলা প্রশাসনের অনুরোধে সেনা জওয়ানরা ফ্ল্যাগমার্চ করেছে। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। ওই ঘটনায় ২ জনকে আটক করা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীকে উদ্ধৃত করে গণমাধ্যমে প্রকাশ, বজরং দলের সদস্যরা বাইক মিছিল করার সময় উত্তেজক স্লোগান দেওয়ার অভিযোগকে কেন্দ্র করে দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে বিবাদ সৃষ্টি হয়। পুলিশ এসময় প্রথমে বাপক লাঠিচার্জ ও পরে শূন্যে কয়েক রাউন্ড গুলি চালানোর পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ ও আধাসামরিক বাহিনী সিআরপিএফ পাঠানো হয়।

এব্যাপারে অল অসম মাইনরিটি স্টুডেন্টেস ইউনিয়নের (আমসু) পক্ষ থেকে উচ্চপর্যায়ের তদন্তসহ দোষীদের শাস্তির দাবি জানানো হয়েছে। আজ (বৃহস্পতিবার) ‘আমসু’র মুখ্য উপদেষ্টা আজিজুর রহমান রেডিও তেহরানকে বলেন, ‘করোনা পরিস্থিতিতে লকডাউনের মধ্যে কীভাবে বজরং দলের ওই মিছিল অনুষ্ঠিত হল তার তদন্ত হওয়া প্রয়োজন। তিনি গোটা বিষয়ের নিরপেক্ষ তদন্ত দাবি করেছেন।
‘আমসু’ কর্মকর্তা আজিজুর রহমান বলেন, ‘আমরা কোনও অশান্তি চাই না। হিন্দু-মুসলিম জাতিধর্ম নির্বিশেষে যত মানুষ আছে সকলেই আমরা মিলেমিশে বাস করি। অযোধ্যার বিষয়ে সুপ্রিম কোর্ট যে রায় দিয়েছে আমরা তা মেনে নিয়েছি। অযোধ্যায় রাম মন্দির হবে, সেখানে কোনও প্রতিক্রিয়া নেই। কিন্তু এখানে অসমে কেন এরকম ঘটনা ঘটল সে ব্যাপারে আমাদের মনে হয় এর নেপথ্যে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য আছে। নিরপেক্ষ তদন্ত হলে তা স্পষ্ট হবে।’ এদিকে বুধবার সন্ধ্যা থেকে গোলযোগপূর্ণ এলাকায় পুলিশের পক্ষ থেকে ক্যাম্প করে প্রহরা বাড়ানো হয়েছে।#
পার্সটুডে/এমএএইচ/এনএম/৬
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।