বাবরী মসজিদের পর এবার মথুরা-কাশীর দাবিতে সোচ্চার 'আখাড়া পরিষদ'
https://parstoday.ir/bn/news/india-i82094-বাবরী_মসজিদের_পর_এবার_মথুরা_কাশীর_দাবিতে_সোচ্চার_'আখাড়া_পরিষদ'
ভারতের উত্তর প্রদেশের অযোধ্যায় বাবরী মসজিদের জায়গায় হিন্দুদের রামের জন্মস্থানের দাবি আন্দোলনে আইনি লড়াইয়ে সফল হওয়ার পরে এবার মথুরা ও কাশী ইস্যুতে নয়া দাবিতে সোচ্চার হয়েছেন হিন্দুত্ববাদী নেতারা। একসময়ে যে জায়গায় কয়েকশ’ বছরের পুরোনো বাবরী মসজিদ ছিল গত ৫ আগস্ট সেখানে রাম মন্দিরের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়েছে। যদিও থেমে নেই উগ্র হিন্দুত্ববাদীরা।
(last modified 2025-09-11T14:06:22+00:00 )
আগস্ট ০৭, ২০২০ ১৯:৪১ Asia/Dhaka

ভারতের উত্তর প্রদেশের অযোধ্যায় বাবরী মসজিদের জায়গায় হিন্দুদের রামের জন্মস্থানের দাবি আন্দোলনে আইনি লড়াইয়ে সফল হওয়ার পরে এবার মথুরা ও কাশী ইস্যুতে নয়া দাবিতে সোচ্চার হয়েছেন হিন্দুত্ববাদী নেতারা। একসময়ে যে জায়গায় কয়েকশ’ বছরের পুরোনো বাবরী মসজিদ ছিল গত ৫ আগস্ট সেখানে রাম মন্দিরের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়েছে। যদিও থেমে নেই উগ্র হিন্দুত্ববাদীরা।

এবার ভারতের সাধু-সন্তদের সর্বোচ্চ সংগঠন 'অখিল ভারতীয় আখাড়া পরিষদ' ঘোষণা করেছে, কাশী-মথুরায় সনাতন ধর্মের ধ্বজা প্রতিষ্ঠা করা হবে। বিষয়টি নিয়ে কার্যত ব্যাপক শোরগোল পড়ে গিয়েছে। আন্দোলন শুরু করার জন্য সাধু-সন্তরা শিগগিরি বৈঠকে বসবেন বলে আখাড়া পরিষদ জানিয়েছে।

গণমাধ্যমে প্রকাশ, মথুরাকে ‘মুক্ত’ করতে ‘কৃষ্ণ জন্মভূমি ট্রাস্ট’ গঠন করেছে দেশের ১৪টি রাজ্যের ৮০ জন শীর্ষ সাধু। আখাড়া পরিষদের সভাপতি মহন্ত নরেন্দ্র গিরি বলেন, ‘বহু লড়াই ও দীর্ঘ সংগ্রামের ফল রাম মন্দিরের ভূমিপুজো ও শিলান্যাস। সমস্ত হিন্দু সমাজের জন্য এ এক গর্বের মুহূর্ত। এবার আমরা কাশী-মথুরাতে সনাতন ধর্মের ধ্বজা আমরা প্রতিষ্ঠা করতে চাই। দুই পবিত্র ধর্মীয়স্থলকে মুক্ত করতে হবে।’

কাশী বিশ্বনাথ মন্দির

সম্প্রতি বিজেপি নেতা বিনয় কাটিয়ার বলেন, এবার মথুরায় শ্রীকৃষ্ণ জন্মভূমি মন্দির থেকে শাহী ঈদগাহ এবং কাশী বিশ্বনাথ মন্দির চত্বর থেকে জ্ঞানবাপী মসজিদ হটানোর পালা।

বিশ্ব হিন্দু পরিষদের বক্তব্য, অযোধ্যার পাশাপাশি শ্রীকৃষ্ণ জন্মভূমি মন্দির ও কাশী বিশ্বনাথ মন্দিরকে ‘মুক্ত’ করতে দীর্ঘদিন ধরে দাবি তুলে আসছে তারা। তার জন্য এবার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

ড. ইমানুল হক

এ প্রসঙ্গে বিজেপিকে টার্গেট করে পশ্চিমবঙ্গের ‘ভাষা ও চেতনা সমিতি’র সম্পাদক ও কোলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজের সাবেক অধ্যাপক বিশিষ্ট সমাজকর্মী ড. ইমানুল হক আজ (শুক্রবার) রেডিও তেহরানকে বলেন, ‘ওঁরা যেটা চাচ্ছেন গোটা দেশে চরম নৈরাজ্য সৃষ্টি হোক এবং দেশে একটা রাজতন্ত্র কায়েম করতে চাচ্ছেন। ওঁরা মুখে হিন্দু রাষ্ট্রের কথা বললেও আসলে ব্রাহ্মণ্য রাজ করতে চাচ্ছেন। সেজন্য তারা থামবেন না। একটার পর একটা নতুন ইস্যু তুলবেন। আগে বলেছিলেন, বাবরী মসজিদ চাই। এখন বলবেন যে কাশী-মথুরা চাই। তারপর বলবেন তাজমহল চাই,  তারপরে আদীনা মসজিদ চাই। এভাবে একটার পরে একটা তালিকা ওঁরা বাড়াতেই থাকবেন। কারণ দিনের পর দিন ওঁদের কাছে আর কোনও ইস্যু নেই।’

১৯৯১ সালে তৎকালীন কেন্দ্রীয় পি ভি নরসিংহ রাওয়ের সরকার উপাসনাস্থল সংক্রান্ত একটি আইন পাস করেছিল। সেই আইনের চার নম্বর ধারায় বলা হয়েছে, স্বাধীনতার দিন থেকে দেশে যেসব ধর্মীয় কাঠামো রয়েছে, তার চরিত্র কোনওভাবেই পাল্টানো যাবে না। কোনও মন্দিরের জায়গায় যেমন মসজিদ বানানো যাবে না, তেমনই মসজিদ সরিয়ে মন্দিরও বানানো যাবে না। কিন্তু পাঁচ নম্বর ধারায় বলা হয়, ওই আইন রাম জন্মভূমি-বাবরী মসজিদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে না। কারণ ওই আইনি লড়াই স্বাধীনতার আগে থেকে চলছিল।

গত জুন মাসে বিশ্বভদ্র পুজারী পুরোহিত মহাসঙ্ঘ ওই আইনের চার নম্বর ধারাকে অসংবিধানিক বলে ঘোষণা করার দাবিতে সুপ্রিম কোর্টে গেছে। সংগঠনের দাবি,  স্বাধীনতার আগে যে সব হিন্দু মন্দির, মঠ জবরদখল  হয়েছিল, ওই আইনের ফলে সেগুলোর পুনরুদ্ধার অসম্ভব হয়ে পড়েছে। ফলে ওই ধারাটি প্রত্যাহার করা হোক।#

 

পার্সটুডে/এমএএইচ/এআর/৭

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।