"সরকার কী ‘চীনা গ্রামে’ বুলডোজার চলাবে, না স্বেচ্ছাচারিতা সহ্য করবে?": প্রশ্ন শিবসেনার
ভারতে শিবসেনার মুখপত্র 'সামানা'র সম্পাদকীয়তে অরুণাচল প্রদেশের সীমান্তে চীনা অনুপ্রবেশের সংবাদকে বেদনাদায়ক বলে মন্তব্য করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে অরুণাচলে ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলো কেবল উদ্বেগই বাড়িয়ে তুলবে না, বিরক্তিও বাড়িয়ে তুলবে।
শিবসেনা বলেছে, চীন, দেশের সীমান্তে প্রবেশ করে অরুণাচল প্রদেশে একটি গোটা গ্রামে বসতি স্থাপন করেছে। তারা এরকম একটি গ্রাম প্রতিষ্ঠা করেছে, না দুই বা তিনটি গ্রাম তৈরি করেছে, তাও স্পষ্ট নয়। গতকাল (বুধবার) ‘সামনা’য় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে এ বিষয়ে পরিস্থিতি স্পষ্ট করতে বলা হয়েছে।
গণমাধ্যমে প্রকাশ, চীন প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা থেকে কমপক্ষে সাড়ে ৪ কিলোমিটার ভিতরে অরুণাচল প্রদেশের মধ্যে তাসরি চু নদীর তীরে একটি গ্রাম তৈরি করেছে বলে অভিযোগ। সেখানে ১০১টি বাড়ি রয়েছে বলেও দাবি। ওই ইস্যুতে আগেই প্রধান বিরোধীদল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে কেন্দ্রীয় সরকারের সমালোচনা করা হয়েছে। এবার এ ব্যাপারে সরকারের ভূমিকার সমালোচনা করল শিবসেনা।
অরুণাচল প্রদেশে চীনা গ্রাম স্থাপন প্রসঙ্গে শিবসেনা মুখপত্রে বলা হয়েছে, এই সমস্ত কিছু এক রাতে ঘটেনি, বহু মাস ধরে চীনা সেনা এবং সেখানকার 'লাল বানর' সরকার এটি বসাতে ব্যস্ত ছিল। প্রশ্ন হ'ল- চীন যখন আমাদের সীমানার মধ্যে একটি নতুন গ্রাম প্রতিষ্ঠা করছিল, তখন আমাদের ‘প্রধান সেবক’ ও ‘চৌকিদার’ বলা শক্তিশালী সরকার কী করছিল? একটি গ্রামে বাড়ি তৈরি করতে ইট, পাথর, সিমেন্ট, স্টিল এবং বালি ইত্যাদি আনতে হয়। পণ্য যাতায়াত শুরু হয়। এখানে কেবল একটি বা দুটি বাড়ি নয় গোটা গ্রামই স্থাপন করেছে, কোনও আওয়াজ হয়নি!
‘সামানা’য় আরও বলা হয়েছে, এভাবে চীন লাদাখে কয়েক কিলোমিটার ঢুকে দেশের কয়েক হাজার বর্গকিলোমিটার ভূখণ্ড দখল করেছে। কিন্তু দুর্ভাগ্য এটাই যে, তখন কেন্দ্রীয় সরকার দাবি করেছিল যে চীনা সেনারা আমাদের সীমান্তে অনুপ্রবেশই করেনি। কারণ চীন সরকার গালওয়ান উপত্যকায় অনুপ্রবেশের কথা আগেই অস্বীকার করেছিল। বদনামের ভয়ে আমাদের সরকারের প্রাথমিক ভূমিকা এরকমই ছিল।
শিবসেনা মুখপত্রে কেন্দ্রীয় সরকারের উদ্দেশ্যে বলা হয়েছে, কোনও পৌরসভার মধ্যে নির্মিত অবৈধ নির্মাণগুলো কর্পোরেশনের কর্মকর্তারা বুলডোজার লাগিয়ে ভেঙে ফেলে দেয়, সেভাবে সমস্ত আন্তর্জাতিক আইনকে একপাশে রেখে আমাদের সীমান্তে নির্মিত অবৈধ গ্রামগুলো ভেঙে ফেলার অধিকারও ভারতের রয়েছে। আমরা কী ওই অধিকারটি প্রয়োগ করতে যাচ্ছি? না চুপচাপ চীনের ক্রমবর্ধমান স্বেচ্ছাচারিতা সহ্য করছি? প্রশ্ন কেবলমাত্র এটাই।

অন্যদিকে, মজলিশ-ই-ইত্তেহাদুল মুসলেমিন প্রধান ব্যারিস্টার আসাদউদ্দিন ওয়াইসি এমপি ওই ইস্যুতে বলেছেন, স্যাটেলাইট চিত্র থেকে দেখা গেছে যে চীন অরুণাচলে স্থায়ীভাবে নির্মাণ করেছে। প্রধানমন্ত্রী দুর্বলতা দেখাচ্ছেন, প্রধানমন্ত্রী কেন চীনের নাম নিচ্ছেন না? চীনের নাম নিতে প্রধানমন্ত্রী ভয় পান। পিএম একজন দুর্বল প্রধানমন্ত্রী, কারণ তাঁর দলেরই এমপি বলেছেন যে চীন অরুণাচলের ভূমি দখল করেছে বলেও ব্যারিস্টার আসাদউদ্দিন ওয়াইসি এমপি মন্তব্য করেন।
অন্যদিকে, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সরকার ভারতের সুরক্ষা সম্পর্কিত প্রতিটি উন্নয়ন নিয়মিত পর্যবেক্ষণ এবং নিজেদের আঞ্চলিক অখণ্ডতা বজায় রাখতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করে।#
পার্সটুডে/ এমএএইচ/ বাবুল আখতার/এআর/২১
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।