অসম সরকার নির্বাচনের মুখে মদের শুল্ক কমালো
-
আব্দুল কাদের কাশেমী
ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে পেট্রোল-ডিজেলের দাম অগ্নিমূল্য হলেও এবার অসম সরকার রাজ্যে আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে পেট্রোল ও ডিজেলের দাম প্রতি লিটারে পাঁচ টাকা কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর পাশাপাশি মদের উপরেও ২৫ শতাংশ শুল্ক হ্রাস করেছে।
অসমে বর্তমানে প্রতি পেট্রোলের দাম ৯০ টাকা ৪১ পয়সা। এবং লিটার প্রতি ডিজেলের দাম ৮৪ টাকা ২৯ পয়সা।
আজ (শুক্রবার) অসমের অর্থমন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মা বিধানসভায় এসব পণ্যের নয়া হার ঘোষণা করেছেন। আজ মধ্যরাত থেকে ওই ঘোষণা কার্যকর হবে।
অসমে আগামী মার্চ/এপ্রিল মাসে বিধানসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সেজন্য সর্বানন্দ সনোয়ালের নেতৃত্বাধীন বিজেপি সরকার ক্ষমতার চেয়ার ধরে রাখতে ওই সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
অসম সরকার গতবছর কোভিড-১৯ মহামারীর মধ্যে পেট্রোল ও ডিজেলের উপরে আরোপিত পাঁচ টাকার অতিরিক্ত শুল্ক প্রত্যাহার করে নিয়েছে। শুক্রবার অর্থ ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মা তিন দিনের বিধানসভা অধিবেশনের দ্বিতীয় দিনে বলেন, জ্বালানি তেলের দাম হ্রাস সকলের জন্য এক বিরাট স্বস্তি হবে। তিনি বলেন, শুক্রবার মধ্যরাত থেকে অ্যালকোহলে ২৫ শতাংশ অতিরিক্ত সেসও অপসারণ করা হবে, যা মহামারীর মধ্যে স্বাস্থ্যসেবায় ব্যয় করার জন্য আদায় করা হচ্ছিল।
অর্থমন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মা বলেন, ‘যখন করোনা মহামারী চরমে উঠেছিল তখন পেট্রোল, ডিজেলের উপরে কর বাড়ানো হয়েছিলে। বর্তমানে করোনাভাইরাস পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসায় এবং স্বাস্থ্য খাতে অতিরিক্ত বোঝা হ্রাস পাওয়ার কারণে রাজ্য মন্ত্রিসভা জ্বালানি তেলের উপরে অতিরিক্ত শুল্ক প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’
গতবছর অসম ও মেঘালয় সরকার পেট্রোল ও ডিজেলের দাম বাড়িয়েছিল। আসাম ও মেঘালয়ে পেট্রোলিয়াম পণ্যাদির দাম বাড়ার পরে প্রতিবেশী নাগাল্যান্ড কোভিড-১৯ এর সেস বাবদ পেট্রোলে প্রতি লিটারে পাঁচ টাকা এবং ও মোটর স্পিরিটের উপর ৬ টাকা ধার্য করেছিল। অন্যান্য উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোও মহামারীর কারণে অর্থনৈতিক সঙ্কটের পরিপ্রেক্ষিতে পেট্রোল এবং ডিজেলের উপরে অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করেছে।
এ সম্পর্কে আজ (শুক্রবার) অসম রাজ্য জমিয়তে উলামায়ে হিন্দের অতিরিক্ত সাধারণ সম্পাদক এবং ‘এআইইউডিএফ’-এর কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক মাওলানা আব্দুল কাদির কাশেমি রেডিও তেহরানকে বলেন, ‘এই মুহূর্তে পেট্রোল-ডিজেলের দাম কমানো আসলে রাজনৈতিক চমক। সাধারণ মানুষকে প্রতারণা করার একটা কৌশল। এছাড়া এখানে কোনও সৎ উদ্দেশ্য ওনাদের নেই। রাজনৈতিকভাবে তারা বিভিন্ন চমক সৃষ্টির চেষ্টা করছেন। সম্প্রতি যেসব সিদ্ধান্ত এই সরকার নিয়েছে সেগুলকে নির্বাচনমুখী পদক্ষেপ বলে আমরা মনে করি।’
তিনি আরও বলেন, ‘এসব সিদ্ধান্তের ফলে ভোট বাক্সে বিশেষ ফায়দা হবে বলে মনে হচ্ছে না। আসলে বিগত পাঁচ বছের সরকার তাদের প্রতিশ্রুতি পূরণে ব্যর্থ হয়েছে, সেজন্য আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের মুখে জনগণের সামনে তারা কী বলবে সে ধরণের কোনও ইস্যু ওদের সামনে নেই।’
‘সাধারণ মানুষ এখন যথেষ্ট সচেতন, সরকার কোন সময়ে কী কাজ করছে, কীজন্য করছে তা বুঝতে পারে’বলেও ‘এআইইউডিএফ’-এর কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক মাওলানা আব্দুল কাদির কাশেমি মন্তব্য করেন। #
পার্সটুডে/এমএএইচ/ মো.আবুসাঈদ-১২
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।