মেঘালয়ে মুখ্যমন্ত্রীর বাসভবনে পেট্রোল বোমা হামলা, শিলংয়ে দু’দিনের কারফিউ জারি
ভারতের মেঘালয়ের মুখ্যমন্ত্রী কনরাড সাংমার বাসভবনে বিক্ষোভকারীরা পেট্রোল বোমা দিয়ে হামলা চালিয়েছে। গতকাল (রোববার) ওই হামলা চালানো হয়। হামলায় কোনও ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।
আজ (সোমবার) বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল এনডিটিভি হিন্দি ওয়েবসাইটে প্রকাশ, পুলিশের গুলিতে মেঘালয়ের সাবেক বিদ্রোহী নেতা চেরিস্টারফিল্ড থাংখুয়ের মৃত্যুর ঘটনায় সেখানে সহিংসতা শুরু হয়েছে। সহিংসতা ও বিক্ষোভের ফলে শিলংয়ে দু’দিনের কারফিউ জারি করা হয়েছে। ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের খবরের পরে রাজ্যের অনেক জায়গায় মোবাইল ইন্টারনেট পরিসেবা বন্ধ করা হয়েছে।
এরআগে সহিংস ঘটনার জেরে রোববার সন্ধ্যায় রাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী লখন রিম্বুই পদত্যাগ করেন। রাজধানী শিলংয়ে সম্পূর্ণ কারফিউ জারি করা হয়েছে। শিলং এবং রাজ্যের অন্যান্য অংশে ইন্টারনেট পরিসেবা স্থগিত করা হয়েছে। রাজ্য সরকারের এক নির্দেশনায় বলা হয়েছে, ১৭ আগস্ট পর্যন্ত কারফিউ বলবৎ থাকবে। সরকার জানিয়েছে, আগামীকাল (মঙ্গলবার) ভোর ৫ টা পর্যন্ত কারফিউ চলবে।
রোববার বিকেলে অজ্ঞাত ব্যক্তিরা শিলংয়ের জাও এলাকায় মাওকিনরোহ পুলিশ চৌকির একটি পুলিশের গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়। ফাঁড়ির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ গাড়িতে থাকা পুলিশ সদস্যরা অল্পের জন্য রক্ষা পেয়েছেন। প্রাক্তন বিদ্রোহী নেতা চেরিস্টারফিল্ড থাংখুয়ের বাড়িতে পুলিশের অভিযানের সময়ে তার মৃত্যুর পর শিলংয়ের কিছু অংশে অস্বস্তিকর পরিবেশ সৃষ্টি হয়। থ্যাংখুয়ের পরিবার তার মৃত্যুকে ‘পুলিশের নৃশংস হত্যাকাণ্ড’ বলে অভিহিত করেছে। তার শেষকৃত্যে কয়েকশো মানুষ কালো পতাকা নিয়ে শামিল হয়। শনিবার, মেঘালয়ের মুখ্যমন্ত্রী কনরাড সাংমা বলেছিলেন, বিদ্রোহী গোষ্ঠী হিন্নেইট্রেপ ন্যাশনাল লিবারেশন কাউন্সিলের (এইচএনএলসি) প্রাক্তন নেতার মৃত্যুর বিষয়ে রাজ্য সরকার ম্যাজিস্ট্রেট পর্যায়ের তদন্তের নির্দেশ দেবে।
রোববার স্বাধীনতা দিবস হওয়া সত্ত্বেও, অনেক লোককে শিলংয়ের রাস্তায় কালো পতাকা নিয়ে সারিবদ্ধ থাকতে দেখা গেছে। তারা থাংখুয়ের মৃত্যুর ঘটনায় পুলিশ এবং রাজ্য সরকারের ভূমিকার নিন্দা জানিয়েছে। অনেক লোককে তাদের বাড়ির ছাদে প্ল্যাকার্ড নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়।
শহরের কিছু অংশে পাথর নিক্ষেপের ঘটনাও ঘটেছে। এরআগে শনিবার পুলিশের একটি টহলদারি গাড়িতে পাথর নিক্ষেপ করা হয়। পুলিশ জানায়, থ্যাংখুই পালানোর চেষ্টা করেছিল এবং পুলিশ সদস্যদের উপরে ছুরি দিয়ে হামলা করেছিল, এর পাল্টা জবাবে হিসেবে তার উপরে গুলি চালানো হয়েছিল।
লৈতুমখারায় বিস্ফোরণের সঙ্গে জড়িত থাকার ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার রাতে তার বাড়িতে পুলিশি অভিযান চালানো হয়। পুলিশ বলছে, পুলিশের দল যখন তার বাড়িতে ঢোকার চেষ্টা করেছিল, তখন সে পালানোর চেষ্টায় ছুরি দিয়ে পুলিশ দলকে আক্রমণ করেছিল। আত্মরক্ষার্থে পুলিশ এক রাউন্ড গুলি চালিয়েছিল যাতে সে মারা যায়। প্রাক্তন বিদ্রোহী নেতা ২০১৮ সালের অক্টোবরে আত্মসমর্পণ করেছিল।#
পার্সটুডে/এমএএইচ/মো.আবুসাঈদ/১৬
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।