মধ্যপ্রাচ্যে প্রতিরোধ শক্তি গড়ে তোলার ক্ষেত্রে শহীদ সোলাইমানির অবদান
শহীদ জেনারেল সোলাইমানির গুরুত্বের একটি বড় দিক হচ্ছে তিনি পশ্চিম এশিয়ায় ইসলামি প্রতিরোধ সংগঠনগুলোর মজবুত অবস্থান তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন।
দখলদার ইসরাইল ও সাম্রাজ্যবাদী শক্তির বিরুদ্ধে সংগ্রাম, স্বৈরাচারের বিরুদ্ধাচরণ, অধিকার প্রতিষ্ঠা, শান্তি প্রতিষ্ঠা, সম্মান অর্জন, স্বাধীনচেতা অবস্থান ধরে রাখা প্রভৃতি প্রতিরোধ সংগঠনগুলোর কিছু বৈশিষ্ট্য। শত্রুর শত ষড়যন্ত্র সত্বেও গত এক দশকে মধ্যপ্রাচ্যের ইসলামি প্রতিরোধ শক্তিগুলো দুর্বল তো হয়নি বরং তারা আগের চেয়ে আরো শক্তিশালী হয়েছে এবং তাদের যেসব লক্ষ্য রয়েছে সেদিকে এগিয়ে যাচ্ছে।
শত্রুরা গত এক দশকে বহুবার প্রতিরোধ শক্তিগুলোর মুখোমুখি হয়েছে। আমেরিকা, মধ্যপ্রাচ্যে তাদের আরব মিত্ররা এবং ইসরাইল সিরিয়া দখলের জন্য ২০১১ সালে উগ্র তাকফিরি সন্ত্রাসী গোষ্ঠী দায়েশ বা আইএস জঙ্গিদেরকে লেলিয়ে দিয়েছিল। সিরিয়াকে টার্গেট করার প্রধান কারণ হচ্ছে এ দেশটি ইসরাইল বিরোধী প্রতিরোধ যুদ্ধে সম্মুখ সারিতে রয়েছে এবং অন্যান্য প্রতিরোধ সংগঠনগুলোর পৃষ্ঠপোষক। এ কারণে আমেরিকা ও তার মিত্ররা সিরিয়ার বর্তমান সরকারের পতন ঘটানোর জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা চালায়। এক দশক পর এখন আমরা দেখতে পাচ্ছি পশ্চিম এশিয়ায় প্রতিরোধ শক্তিগুলো যে শক্তিশালী অবস্থানে পৌঁছেছে তার পেছনে শহীদ জেনারেল সোলাইমানির বিরাট অবদান ছিল।
ইরানের ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনী বা আইআরজিসির সাবেক কমান্ডার ও রাজনৈতিক কর্মী হোসেন কেনআনি মোকাদ্দাম বলেছেন, জেনারেল সোলাইমানি সামরিক ক্ষেত্রে অসামান্য নৈপুণ্যের অধিকারী ছিলেন এবং তিনি ছিলেন অসাধারণ কৌশলী ও তীক্ষ্ণ মেধা শক্তির অধিকারী। আমেরিকার একজন অবসর প্রাপ্ত সামরিক কর্মকর্তা ও জাতীয় নিরাপত্তা ও সন্ত্রাসবাদ বিষয়ক বিশ্লেষক জেনারেল মার্ক হারাতলিঙ্ক বলেছেন, সোলাইমানি ছিলেন একেবারেই ব্যতিক্রমর্ধী একজন দক্ষ সমরবিদ এবং তার কোনো তুলনা হয় না'।
বাস্তবতা হচ্ছে, শহীদ সোলাইমানি যুদ্ধের ময়দানে শত্রুদেরকে নাস্তানাবুদ করে ছেড়েছিলেন। সোলাইমানি সিরিয়ায় অবস্থান করে দায়েশ বা আইএস জঙ্গিদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে শক্তিশালী প্রতিরোধ সংগঠন গড়ে তোলেন। তার এ উদ্যোগের কারণে পাশ্চাত্য, আরব, ইসরাইল ও তুর্কির সমন্বয়ে গঠিত সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোর সমস্ত ষড়যন্ত্র ভেস্তে যায় এবং সিরিয়ায় তারা কোনো লক্ষ্যই অর্জন করতে পারেনি। বর্তমানে সিরিয়া সরকারের অবস্থান শুধু যে শক্তিশালী হয়েছে তাই নয় একইসঙ্গে সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধেও তারা সাফল্যের পরিচয় দিয়েছে।
শত্রুরা মধ্যপ্রাচ্যের প্রতিরোধ শক্তিগুলোর ওপর আঘাত হানার জন্য ইরাকসহ আরো কয়েকটি মুসলিম দেশেও আইএস জঙ্গিদেরকে লেলিয়ে দিয়েছিল। শত্রুরা চেয়েছিল আইএস জঙ্গিদের কর্মকাণ্ড যেন শুধু সিরিয়ার মধ্যেই সীমাবদ্ধ না থাকে। তাই লেবানন, ইরাক ও এমনকি ইরানেও নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডে আইএস জঙ্গিদেরকে ব্যবহার করা হয়েছে। কিন্তু জেনারেল সোলাইমানির সাহসিকতা ও প্রজ্ঞার কারণে শত্রুরা কোনো লক্ষ্যই অর্জন করতে পারেনি। শেষ পর্যন্ত মার্কিন সেনারা ইরাকের মাটিতে সোলাইমানি ও তার অন্য সহযোগীদেরকে নৃশংসভাবে শহীদ করে। #
পার্সটুডে/রেজওয়ান হোসেন/০২
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।