ইয়েমেনের ব্যাপারে জাতীয় জরুরি অবস্থার মেয়াদ নবায়ন করলেন বাইডেন
https://parstoday.ir/bn/news/iran-i107800-ইয়েমেনের_ব্যাপারে_জাতীয়_জরুরি_অবস্থার_মেয়াদ_নবায়ন_করলেন_বাইডেন
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ইয়েমেনের ব্যাপারে আমেরিকার জাতীয় জরুরি অবস্থার মেয়াদ আবারো নবায়ন করেছেন। হোয়াইট হাউজ থেকে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে তিনি বলেছেন, ইয়েমেনের সাবেক সরকারের কোনো কোনো সদস্য ও আরো অন্যান্য ব্যক্তির নীতি ও আচরণ ইয়েমেনের শান্তি, নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতার জন্য হুমকি হওয়ায় এবং সেইসাথে আমেরিকার জাতীয় নিরাপত্তার জন্যও হুমকি হওয়ায় জরুরি অবস্থা বহাল রাখা হয়েছে।
(last modified 2025-07-29T12:16:04+00:00 )
মে ১১, ২০২২ ১৬:৪৭ Asia/Dhaka

মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ইয়েমেনের ব্যাপারে আমেরিকার জাতীয় জরুরি অবস্থার মেয়াদ আবারো নবায়ন করেছেন। হোয়াইট হাউজ থেকে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে তিনি বলেছেন, ইয়েমেনের সাবেক সরকারের কোনো কোনো সদস্য ও আরো অন্যান্য ব্যক্তির নীতি ও আচরণ ইয়েমেনের শান্তি, নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতার জন্য হুমকি হওয়ায় এবং সেইসাথে আমেরিকার জাতীয় নিরাপত্তার জন্যও হুমকি হওয়ায় জরুরি অবস্থা বহাল রাখা হয়েছে।

বাস্তবতা হচ্ছে, ইয়েমেনে গণআন্দোলন শুরুর পর আলী আব্দুল্লাহ সালেহর সরকারের পতন এবং হুথি আনসারুল্লাহর নেতৃত্বে ন্যাশনাল সালভেশন সরকার গঠনের পর মার্কিন সরকার জাতীয় জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছিল। আলী আব্দুল্লাহ সালেহর শাসনামলে ইয়েমেন উপকূলে বিস্ফোরণ এবং এ ঘটনায় সানা ও ওয়াশিংটন সম্পর্কে উত্তেজনা তৈরি হয় এবং আমেরিকা ইয়েমেন ইস্যুতে জাতীয় জরুরি অবস্থা ঘোষণা করে।

এরপর উত্তর আফ্রিকা থেকে শুরু করে মধ্যপ্রাচ্যে স্বৈরসরকারগুলোর বিরুদ্ধে গণজাগরণ শুরু হলে সালেহ সরকারেরও পতন ঘটলে ওয়াশিংটন-সানা সম্পর্ক আরো জটিল আকার ধারণ করে এবং এ অবস্থা এখনো অব্যাহত রয়েছে। ইয়েমেনের গণআন্দোলনে আলী আব্দুল্লাহ সালেহর ৩০ বছরের শাসনের অবসান ঘটলেও পরবর্তীতে আমেরিকার পছন্দের সরকার গঠিত না হওয়ায় শুরু থেকেই তারা হুথি আনসারুল্লাহ সমর্থিত ন্যাশনাল সালভেশন সরকারের বিরোধিতা করে আসছে।

এরপর জনপ্রিয় হুথি সরকারকে দুর্বল করার বা পতন ঘটানোর জন্য আমেরিকা উগ্র আল কায়দা সন্ত্রাসী গ্রুপকে লেলিয়ে দেয়। অন্যদিকে সৌদি সরকারও ইয়েমেনের গণজাগরণের ধাক্কা সৌদি আরবের অভ্যন্তরেও আছড়ে পড়তে পারে সেই আশঙ্কায় ইয়েমেনের জনপ্রিয় হুথি আনসারুল্লাহ সমর্থিত সরকারের পতন ঘটানোর জন্য সর্বাত্মক সামরিক আগ্রাসন শুরু করে। প্রথমে তারা বাহরাইনের মতো ইয়েমেনে তাদের অনুগত ব্যক্তিদের নিয়ে সরকার গঠনের চেষ্টা করে। কিন্তু এতে ব্যর্থ হয়ে তারা ইয়েমেন জুড়ে ব্যাপক বিমান হমালা শুরু করে এবং এ হামলায় সংযুক্ত আরব আমিরাতও অংশ নেয়। আমিরাত ও সৌদি আরব ভেবেছিল তারা কয়েক সপ্তাহের মধ্যে ইয়েমেন দখল করে হুথি সরকারের পতন ঘটাতে পারবে কিন্তু সেই যুদ্ধ সপ্তম বছরে গড়িয়েছে এবং আজো তারা লক্ষ্য অর্জনে সফল হয়নি।

মার্কিন সরকার তাদের কথাবার্তায় এমন ভাব দেখানোর চেষ্টা করে যে এ যুদ্ধে তাদের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে রক্তক্ষয়ী এ যুদ্ধে আমেরিকা সবচেয়ে বড় ভূমিকা পালন করছে। কেননা সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ওবামার আমল থেকেই তাদের সর্বাত্মক সাহায্য সমর্থন নিয়ে সৌদি আরব ইয়েমেনে আগ্রাসন চালিয়ে যাচ্ছে। আমেরিকার অস্ত্র এবং পরিকল্পনা ছাড়া এ যুদ্ধে সৌদি আরব এতদিন টিকে থাকতে পারতো না এবং যুদ্ধও দীর্ঘায়িত হতো না। প্রকৃতপক্ষে সৌদি আরব চায় ইয়েমেন দখল করে সমগ্র উপকূলীয় ওই অঞ্চলের ওপর নিজের একক আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করতে। এতে আমেরিকা ও সৌদি আরব উভয়ের স্বার্থ রয়েছে। এ কারণে আমেরিকা সৌদি আগ্রাসন বন্ধে কোনো পদক্ষেপ তো নেয়নি এমনকি রিয়াদের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে যাবতীয় অস্ত্রশস্ত্র দিয়ে ইয়েমেনের জনপ্রিয় আনসারুল্লাহ সরকারের পতন ঘটানোর চেষ্টা করছে। এ কারণে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ইয়েমেনের ব্যাপারে আমেরিকার জাতীয় জরুরি অবস্থার মেয়াদ আবারো নবায়নের যে ঘোষণা দিয়েছেন তাতে অবাক হওয়ার কিছু নেই বলে পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন।#

পার্সটুডে/রেজওয়ান হোসেন/১১

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।