ফেব্রুয়ারি ২১, ২০২৩ ১৭:০৫ Asia/Dhaka

পাশ্চাত্য ইরানের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক চাপ সৃষ্টির অংশ হিসেবে আবারো দেশটির শান্তিপূর্ণ পরমাণু কর্মসূচির ব্যাপারে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন অভিযোগ উত্থাপন করেছে। এবার তারা অভিযোগ করেছে ইরান ৮৪ শতাংশ মাত্রায় ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করেছে বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে।

মার্কিন গণমাধ্যম ব্লুমবার্গ দাবি করেছে, আইএইএ'র পরিদর্শকরা গত সপ্তাহে ইরানের পরমাণু স্থাপনাগুলোতে শতকরা ৮৪ মাত্রায় ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করার প্রমাণ পেয়েছেন। তবে তারা এ বিষয়ে নিশ্চিত হতে পারেননি যে, এই মাত্রায় ইউরেনিয়ামের যে কণা তারা পেয়েছেন তা পরিকল্পিতভাবে সমৃদ্ধ করা হয়েছে নাকি এটি ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করার জন্য স্থাপিত শত শত দ্রুতগতির সেন্ট্রিফিউজ থেকে দুর্ঘটনাক্রমে ঘটে যাওয়া নিঃসরণ। আইএইএ'র পরিদর্শকরা এখন এ বিষয়ে নিশ্চিত হওয়ার চেষ্টা করছেন।

এ ব্যাপারে এক প্রতিক্রিয়ায় আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা বা আইএইএ জানিয়েছে, এই সংস্থা ইরানে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ বিষয়ে গণমাধ্যমগুলোর প্রচারিত তথ্যগুলোর ওপর নজর রাখছে। সংস্থার প্রধান রাফায়েল গ্রোসি বর্তমানে ইরানের সঙ্গে পরমাণু বিষয়ে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছেন এবং তিনি আইএইএর নির্বাহীবোর্ডে আলোচনা ও পরমাণু স্থাপনা পরিদর্শনের ফলাফল তুলে ধরবেন। বাস্তবতা হচ্ছে ইরান সবসময়ই কোন্‌ মাত্রায় ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করছে সে সম্পর্কে আইএইএকে অবহিত করে থাকে। সর্বশেষ ঘটনায় ইউরোপ ও আমেরিকা পরমাণু সমঝোতা নিয়ে তাদের প্রতিশ্রুতি লঙ্ঘন করার পরও ইরান আইএইএকে অবহিত করে ৬০ শতাংশ মাত্রায় ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের কাজ শুরু করে এবং ইরান এখানে কোনো লুকোচুরি করেনি।

বেহরুজ কামালবান্দি

এ সম্পর্কে ইরানের আণবিক শক্তি সংস্থার মুখপাত্র বেহরুজ কামালবান্দি বার্তা সংস্থা ইরনাকে বলেছেন, তার দেশের পরমাণু কর্মসূচি সম্পর্কে বিকৃত তথ্য তুলে ধরতেই পশ্চিমা গণমাধ্যমে এ খবর প্রকাশিত হয়েছে।

তিনি আরো বলেছেন, তার দেশের কোনো পরমাণু স্থাপনায় এখন পর্যন্ত শতকরা ৬০ ভাগের চেয়ে বেশি  মাত্রায় ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করা হয়নি। তিনি বলেন, কোথাও ৬০ এর চেয়ে বেশি মাত্রার ইউরেনিয়ামের কণা পাওয়ার অর্থ এই নয় যে, ইরান ওই মাত্রায় ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করেছে। ইরান এর আগে ঘোষণা দিয়ে শতকরা ৬০ মাত্রায় ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করে আসছিল। কামালবান্দি আরো বলেছেন, সেন্ট্রিফিউজের কার্যক্ষমতা সম্পর্কে যাদের ধারনা আছে তারা জানেন ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ প্রক্রিয়ায় এ ধরনের কণার অস্তিত্ব পাওয়া সম্পূর্ণ স্বাভাবিক ঘটনা।

বাস্তবতা হচ্ছে, পাশ্চাত্য ও ইসরাইলি কর্মকর্তাদের চাপে পড়ে আইএইএ এ পর্যন্ত বহুবার ইরানের শান্তিপূর্ণ পরমাণু কর্মসূচীর বিরুদ্ধে মত দিয়েছে। যদিও এসব নেতিবাচক মন্তব্য ইরান ও আইএইএর মধ্যকার গঠনমূলক সহযোগিতার সঙ্গে মানানসই নয়। ইরান সবসময়ই আইএইএকে সহযোগিতা করে এসেছে এবং ইরানের দাবি হচ্ছে এই সংস্থার উচিত হবেনা রাজনৈতিক চাপের কাছে নতি স্বীকার করা। কিন্তু সম্প্রতি ইরানের বিরুদ্ধে পাশ্চাত্য মিডিয়ার মিথ্যা দাবি থেকে বোঝা যায়, আইএইএ গোপনে ওইসব মিডিয়ার কাছে তথ্য সরবরাহ করে ইরান বিরোধী চাপ অব্যাহত রাখতে  ভূমিকা রাখছে। এভাবে যদি এই সংস্থার মর্যাদা ক্ষুন্ন হয় তাহলে ইরানের সাথে তাদের সহযোগিতায় নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।#

পার্সটুডে/রেজওয়ান হোসেন/২১ 

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।

ট্যাগ