পণ্য বর্জনসহ সমন্বিত কঠোর পদক্ষেপ জরুরি
ইউরোপে কুরআন অবমাননা: মুসলমানদের কী করা উচিত
বিশ্বের প্রায় দুইশ' কোটি মুসলমানের সবচেয়ে সম্মানিত গ্রন্থ পবিত্র কুরআনকে একের এক পর অবমাননা করা হচ্ছে ইউরোপে। গত কয়েক দিনে সুইডেন ও ডেনমার্কে পূর্ব ঘোষণা দিয়ে প্রকাশ্যে ঐশী এই গ্রন্থকে পোড়ানো হয়েছে। পদ দলনের ঘটনাও ঘটেছে। এর মাঝে জার্মানিতেও রাতের আধারে কুরআনে আগুন দিয়ে পালিয়েছে দুর্বৃত্তরা।
'যা ইচ্ছা তাই বলার স্বাধীনতা'র শ্লোগান তুলে এসব করা হচ্ছে। কিন্তু তারা একবারও ভেবে দেখছে না এর ফলে কত মানুষের হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হচ্ছে। বিশ্বের মোট জনসংখ্যার প্রায় ২৫ শতাংশ মুসলমান। কুরআন হচ্ছে তাদের কাছে সবচেয়ে সম্মানের। মুসলমানদের জন্য এর চেয়ে বড় আঘাত আর হতে পারে না।
ইউরোপ ও আমেরিকায় গত কয়েক দশক ধরে ইসলামবিরোধী প্রচারণা বাড়ানো হয়েছে। পাশ্চাত্যের ষড়যন্ত্রে মুসলিম দেশগুলোতে যে জঙ্গিবাদ সৃষ্টি করা হয়েছে তা দিয়েই মুসলমানদের ঘায়েল করার চেষ্টা হয়েছে বেশ কয়েক বছর। তবে এখন জঙ্গিবাদ নিয়ন্ত্রণে আসার পর নতুনকরে মুসলিম বিরোধী ইস্যু তৈরির চেষ্টা চলছে শত্রু মহলে। মুসলমানদের তৃতীয় পবিত্র স্থান আল-আকসা মসজিদের প্রকাশ্য দখলদার ইসরাইল এসব ষড়যন্ত্রে ব্যাপক মদদ দিয়ে যাচ্ছে।
বাক স্বাধীনতার কথা বলে পশ্চিমা দেশগুলোতে মুসলমানদের বিরুদ্ধে যা ইচ্ছা তাই করা হলেও ইহুদিবাদীদের সৃষ্ট হলোকাস্টের কাহিনী নিয়ে কোনো সমালোচনাই করতে দেয় না তারা। পাশ্চাত্যের চিরায়ত দ্বিচারিতা এক্ষেত্রেও স্পষ্ট।
পাশ্চাত্যের দেশগুলো বিশ্বে শান্তি ও স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠার শ্লোগান দিলেও বাস্তবে পবিত্র কুরআন অবমাননার মাধ্যমে সর্বত্রই অশান্তি ছড়িয়ে দিতে চাইছে। বিশ্বের মোট জনসংখ্যার এক-চতুর্থাংশের সবচেয়ে সংবেদনশীল ও সম্মানের জায়গাটিতে আঘাত করার মাধ্যমে কখনোই শান্তি প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়। ক্যাথলিক খ্রিস্টানদের ধর্মগুরু পোপ ফ্রান্সিস মনে করেন, অন্যকে অবমাননা করার জন্য কখনোই বাক স্বাধীনতাকে অজুহাত হিসেবে ব্যবহার করা উচিৎ নয়। এই অজুহাতে ধর্মীয় গ্রন্থ পোড়ানোর অনুমতি নিন্দনীয় ও অগ্রহণযোগ্য।
এ অবস্থায় সুইডেন ও ডেনমার্কে পবিত্র কুরআন অবমাননার বিরুদ্ধে বিশ্বের সব মুসলিম দেশ ও সংস্থার কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ জরুরি হয়ে পড়েছে। একইসঙ্গে বিশ্বের অমুসলিম দেশ ও সংগঠনগুলোকেও এ ধরণের প্রবণতার ভয়াবহ পরিণতি সম্পর্কে সচেতেন করে এই আন্দোলনে শরিক করার চেষ্টা চালাতে হবে। সুইডেন ও ডেনমার্কের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে এই দুই দেশের পণ্য বর্জনসহ সমন্বিত নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিৎ যাতে পাশ্চাত্যের দেশগুলো এ ধরণের ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ থেকে বিরত থাকতে বাধ্য হয়।#
পার্সটুডে/এসএ/২৩
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।