পবিত্র কুরআন সম্পর্কে ইরানি প্রেসিডেন্টের বক্তব্য; বিশ্বব্যাপী আলোড়ন সৃষ্টি
জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে ইরানের প্রেসিডেন্ট সাইয়্যেদ ইবরাহিম রায়িসি ইউরোপ ও আমেরিকায় পবিত্র কুরআন অবমাননার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে যে বক্তব্য রেখেছেন তা গোটা বিশ্বে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। আরব দেশগুলোতেও তা প্রশংসিত হচ্ছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে এ সংক্রান্ত খবরে লাইক ও ইতিবাচক কমেন্টের বন্যা বইয়ে যাচ্ছে।
আন্তর্জাতিক মঞ্চে দাঁড়িয়ে ইরানি প্রেসিডেন্ট পবিত্র কুরআন হাতে নিয়ে যে বক্তব্য দিয়েছেন তা স্বাভাবিকভাবেই বিশ্বের প্রায় সব গণমাধ্যমেই প্রকাশিত হয়েছে। স্থান ও কালের গুরুত্বের কারণে জাতিসংঘের ওয়েবসাইটসহ ইউরোপ ও আমেরিকার গণমাধ্যমও তা এড়িয়ে যেতে পারেনি। এর মধ্যদিয়ে কুরআন অবমাননার বিরুদ্ধে মুসলিম বিশ্বের অবস্থান ও বক্তব্য অমুসলিম সমাজের কাছেও পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হয়েছে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পাঠক-শ্রোতারা এ সংক্রান্ত খবরে যেসব মন্তব্য করেছেন তা থেকে স্পষ্ট- মুসলিমদের পাশাপাশি শান্তিকামী মানুষেরাও কোনো পবিত্র গ্রন্থ অবমাননাকে সমর্থন করে না। পবিত্র কুরআনের প্রতি মুসলমানদের যে শ্রদ্ধাবোধ তা অন্য কিছুর সঙ্গে তুলনাযোগ্য নয়। যারা মুসলমানদের মনে ক্ষোভের আগুন জ্বালিয়ে শান্তি, সম্প্রীতি ও মানবাধিকারের শ্লোগান দেয় তারা কখনোই শান্তিকামী হতে পারে না; তাদের এসব বক্তব্য কেবলই লোকদেখানো। এসব শ্লোগান-সর্বস্ব দেশ ও ব্যক্তি চরম সাম্প্রদায়িক ও বর্ণবাদী।

ইরানের প্রেসিডেন্ট জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে দাঁড়িয়ে পবিত্র কুরআনের প্রতি সর্বোচ্চ শ্রদ্ধা প্রদর্শন করেন। তারপর পবিত্র কুরআনকে চুমু দেন, মাথার উপর তুলে ধরে জানিয়ে দেন- এই ঐশী গ্রন্থ সব কিছুর ঊর্ধ্বে, এই পবিত্র গ্রন্থের অবমাননা মানে গোটা মুসলিম উম্মাহর অবমাননা।
তিনি প্রশ্ন করে বলেন, পবিত্র কুরআন এমন কি বলেছে যে সাম্রাজ্যবাদীরা এত বেশি বিদ্বেষী হয়ে উঠেছে? এবারই প্রথম নয় যে, তারা আল্লাহর বাণীতে আগুন দিয়েছে। তারা ধারণা করছে এর ফলে ঐশী বাণী ও আহ্বান চিরতরে স্তব্ধ হয়ে যাবে। কিন্তু মানবজাতির জন্য পবিত্র কুরআনের যে শিক্ষা তা কখনোই পুড়ে যাবে না। অপমান ও অবমাননার আগুন কখনোই সত্যের সামনে টিকতে পারবে না।

তিনি আরও বলেন, পবিত্র কুরআন অন্যের চিন্তা-বিশ্বাসকে অবমাননা করতে নিষেধ করেছে এবং ধর্মগুলোর প্রতি সম্মান প্রদর্শনকে মহানবী (স.)'র প্রতি সম্মান প্রদর্শন বলে ঘোষণা করেছে।
পবিত্র কুরআন ও ইসলাম ধর্মের বিরুদ্ধে যে ঘৃণা ছড়ানো যে একটি বিশাল ষড়যন্ত্রের অংশ তা স্পষ্টভাবে তুলে ধরেন ইরানের প্রেসিডেন্ট। তিনি বলেন, এই ঘৃণা ছড়ানোর পেছনে বড় ধরণের ষড়যন্ত্র কাজ করছে। সম্প্রতি সুইডেনসহ কয়েকটি ইউরোপীয় দেশ এবং যুক্তরাষ্ট্রে বেশ কয়েকবার প্রকাশ্যে পবিত্র কোরআন অবমাননা করা হয়েছে। কিন্তু বিশ্বের বিশাল জনগোষ্ঠীর কাছে পরম শ্রদ্ধেয় এই মহাগ্রন্থের অবমাননাকারীদের বিরুদ্ধে বাক স্বাধীনতার দাবিদার রাষ্ট্রগুলো তেমন কোনো পদক্ষেপ নেয়নি বরং কোনো কোনো ক্ষেত্রে সরাসরি পৃষ্ঠপোষকতা দিয়েছে।#
পার্সটুডে/এসএ/২১
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।