এপ্রিল ১৮, ২০২৪ ১৮:৩০ Asia/Dhaka
  • এক নজরে ইরানের ইস্ফাহানে ইহুদিদের সিনাগগ উপসনালয়

ইরানের কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত ইসফাহান শহরটি সকল ঐশ্বরিক ধর্মের পর্যটনের জন্য একটি উপযুক্ত স্থান হিসেবে সুপরিচিতি পেয়েছে। ইহুদি উপাসনালয়গুলোর অস্তিত্ব, এগুলোর পুনরুদ্ধার এবং রক্ষণাবেক্ষণের মাধ্যমে এটা প্রতিয়মান হয় যে ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরান তার দেশের ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের স্বাধীনতা এবং তাদের স্বকীয়তা রক্ষার প্রতি মনোযোগী রয়েছে।

ইস্ফাহানে বসতি স্থাপনের পর ইহুদিরা "সিনাগগ" নামে পরিচিত ধর্মীয় উপসনালয় তৈরি করতে সক্ষম হয়। এই উপাসনালয়গুলো বিভিন্ন যুগ থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত তাদের অস্তিত্ব বজায় রেখে চলেছে এবং কাজার যুগ থেকে ইহুদিদের সেসব উপসনালয়গুলো আজও ইতিহাসের স্বাক্ষি হয়ে দাঁড়িয়ে আছে।  

এই উপাসনালয়গুলোর স্থাপত্য আর্মেনিয়ান গীর্জার সঙ্গে সম্পূর্ণ মিল রয়েছে। পার্থক্য এই যে সিনাগগগুলোর কোনও অভ্যন্তরীণ সজ্জা নেই এই কারণে যে ইহুদিরা দেয়ালে মানুষের ছবি অঙ্কন করে না। এ পর্যন্ত ইসফাহান শহরের সাতটি সিনাগগ ইরানের জাতীয় স্মৃতিসৌধের তালিকায় নিবন্ধিত হয়েছে। এখানে চারটি সিনাগগের বিবরণ তুলে ধরা হলো। 

আমু শাইয়া সিনাগগ

আমু শাইয়া সিনাগগ

ইস্ফাহানের প্রাচীনতম সিনাগগ হল জুয়বারেহ এলাকায় "আমু শাইয়া সিনাগগ" এবং আতিক স্কয়ারের নিকটবর্তী মুসলিম অধ্যুষিত এলাকার সবচেয়ে কাছেরটি হল "মেলানেশিয়ান সিনাগগ"। এই সিনাগগটির প্রতিটি গম্বুজযুক্ত খিলানের উপরে স্কাইলাইট রয়েছে যা অভ্যন্তরীণ স্থানের জন্য প্রয়োজনীয় আলো সরবরাহ করে। এই সিনাগগের বাইরের অংশটি সরল এবং অলঙ্কৃত, অন্যদিকে অভ্যন্তরের অংশ বিভিন্ন অলঙ্কারে সজ্জিত।

মোল্লা ইয়াকুব সিনাগগ

মোল্লা ইয়াকুব সিনাগগ

ইহুদিদের উপাসনালয়টি ইস্ফাহানি কবি কামালুদ্দি ইসমাঈলের সমাধির পাশে জুবারেহ এলাকায় অবস্থিত এবং এটি একশত বছরের ইতিহাসের সাক্ষি হয়ে আছে। এই ভবনের বেসমেন্টে সিনাগগের প্রতিষ্ঠাতা মোল্লা ইয়াকুবসহ  ইহুদি সম্প্রদায়ের বেশ কয়েকজন বিশিষ্ট সদস্যকে সমাহিত করা হয়েছে। উপাসনালয়ের প্রবেশদ্বার পূর্ব দিকের দক্ষিণ কোণ থেকে।

মোল্লা নিসান উপাসনালয়

মোল্লা নিসান উপাসনালয়

এই উপসনালয়টি ৮৭ বছর আগে নির্মাণ করা হয়েছিল এবং এটি ইস্ফাহানের সবচেয়ে সুন্দর উপাসনালয়গুলোর মধ্যে একটি। এই সিনাগগের মেঝে রাস্তা থেকে প্রায় এক মিটার নিচু। এই উপসনালয়ে এবং এর উঠানো প্রবেশের জন্য একটি ছোট প্রবেশদ্বার রয়েছে। যদিও এই সিনাগগটি সাধারণত অন্যান্য সিনাগগের মতো তবে এর ছাদের প্রলেপ অন্যান্য সিনাগগ থেকে আলাদা।

কেটার ডেভিড সিনাগগ

কেটার ডেভিড সিনাগগ

বর্তমানে কেটার ডেভিড সিনাগগে তাওরাতের পুরানো অনুলিপি রয়েছে যা প্রায় ৫০০ বছর আগেরকার প্রাণীদের চামড়ার উপর লেখা আছে। এসব প্রাণীদের মাংস ধর্মীয়ভাবে অনুমোদিত ছিল। ইহুদি আচার-অনুষ্ঠান ও রীতি অনুযায়ী তাওরাতের এই কপিগুলো আংশিকভাবে পাঠ করা হয় যাতে প্রতি বছর একবার তাওরাত পাঠ করা হয়।

ইরানে ধর্মীয় সংখ্যালঘুরা অনেক স্বাধীনতা উপভোগ করছে এবং তাদের আচার-অনুষ্ঠান ও উপাসনাগুলোকে কোনো বাধা ছাড়াই এই দেশে পালন করতে দেয়া হয়। একই সময়ে ইউরোপের কিছু দেশে মুসলমানদের জন্য কোন ধর্মীয় কর্মকাণ্ড অনুমোদিত নয় এবং এমনকি মেয়েরা তাদের ধর্মে নির্ধারিত পোশাক বা হিজাব পরে স্কুলে যেতে পারে না।

ইরানের ইহুদিরাও কেবল তাদের ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান করতেই স্বাধীন নয় বরং তারা দেশের সংসদে তাদের প্রতিনিধিও রাখতে পারে। ইহুদিবাদী ইসরাইলে এই ধরনের কোনো ব্যবস্থা নেই এবং আল-কুদস দখলকারী শাসক গোষ্ঠী এই ভূমির প্রধান অধিবাসীদের ক্ষেত্রে এই ধরনের কোনো অনুমোদন দেয় না অর্থাৎ মুসলমানদের রাজনৈতিক বিষয়ে হস্তক্ষেপ ইহুদিবাদী এই অবৈধ রাষ্ট্রৃৃে নিষিদ্ধ।#

পার্সটুডে/বাবুল আখতার/১৮

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন

ট্যাগ