কেরমানের 'শাহজাদা মাহান বাগান': মরুভূমিতে পানি আর সবুজের খেলা
(last modified Mon, 21 Oct 2024 14:12:39 GMT )
অক্টোবর ২১, ২০২৪ ২০:১২ Asia/Dhaka
  • শাহজাদা মাহান বাগান
    শাহজাদা মাহান বাগান

কেরমান প্রদেশের 'শাহজাদা মাহান বাগান' ইরানের সবচেয়ে সুন্দর এবং ঐতিহাসিক উদ্যানগুলোর অন্যতম। পানি, সবুজ বনায়ন এবং চোখ ধাঁধানো স্থাপত্যের সংমিশ্রণে এই বাগানটিকে মনে হয় ধূসর মরুর বুকে একটি বেহেশত।

এই বাগানটি মাহান শহর থেকে প্রায় দুই কিলোমিটার দূরে এবং কেরমান শহরের নিকটবর্তী টাইগ্রান পাহাড়ের ঢালে অবস্থিত। এই বাগানটিকে ইরানের ধ্রুপদী উদ্যানগুলোর মধ্যে একটি হিসাবে বিবেচনা করা হয়।  

শাহজাদ মাহান বাগানের একটি অসাধারণ দৃশ্য

পুরো বাগানটি উঁচু প্রাচীর দ্বারা বেষ্টিত। ১৮৫০ খ্রিস্টাব্দে তৎকালীন কেরমানের শাসক মোহাম্মদ হাসান খান সরদার ইরাভানি বাগানটি নির্মাণ করেন। ১৮৭০ খ্রিস্টাব্দে আবদুল হামিদ মির্জা নাসিরুদ্দৌল্লাহ বাগানটি সম্প্রাসরণ ও পুনর্নির্মাণ করেন। বাগানের বর্তমান অবকাঠামো তার সময়েই নির্মিত হয়েছিল। 

বাগানের ভেতরে ঝর্ণা

শাহজাদা মাহান গার্ডেনের সাধারণ মানচিত্রটি এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে যাতে প্রবেশ করার সময় বিশেষ করে মূল বাড়ির উপরের তলায় বাগানের বাহ্যিক দৃশ্য এবং চাহারবাগ ও পাহাড়ের দৃশ্য দেখা যায় এবং গাছপালাসহ বুদবুদ জল, পুকুর এবং জলপ্রপাত দেখে অনন্য দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি হয়। শাহজাদা মাহান বাগানের বারো স্তরের সিঁড়ি, জলপ্রপাত, ঝর্ণা, পানি ভরা দুটি পুকুর এবং উঁচু-নিচু সবুজ গাছের সারি- দর্শনার্থীদের চোখকে আনন্দ দেয়।

বাগানটি স্তরে স্তরে এমনভাবে বিন্যস্ত করা হয়েছে যে এর উঁচু অংশ থেকে নিচু অংশে অবিরাম পানি প্রবাহিত হতে থাকে। বাগানের প্রতিটি স্তরে আছে বিভিন্ন প্রজাতির গাছ। মূল অংশে আছে একটি পুল ও পাঁচটি ফোয়ারা। শুধু সবুজ বৃক্ষরাজি ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্যই দর্শককে মুগ্ধ করে না বরং বাগানের অবকাঠামো ও তার নির্মাণশৈলীও দর্শককে মুগ্ধ করে।

মরুর বুকে সবুজের উপখ্যান

একটি শুষ্ক অঞ্চলে অবস্থিত হলেও বাগে শাহজাদেতে হালকা মিশ্র তাপমাত্রা উপভোগ করা যায়। বাগানের ঝরনাগুলোতে নিকটবর্তী পাহাড়ের গলিত তুষারই ব্যবহার করা হয়। কেবল মধ্যাকর্ষণ শক্তির ওপর নির্ভর করেই পানির ফোয়ারা ও ঝরনাগুলো কাজ করে থাকে।

দর্শনার্থীদের ভিড়

এই বাগানটি ৯টি ইরানি বাগানের মধ্যে একটি যা ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থানের তালিকায় নিবন্ধিত হয়েছে। এই বাগানের তথ্য ৩৫টি ভাষায় অনুবাদ করা হয়েছে এবং ইউনেস্কোর পর্যটন মানচিত্রে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। ২০১১ সালে ইউনেসকো বাগানটিকে বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ হিসেবে তালিকাভুক্ত করে।#

পার্সটুডে/আশরাফুর রহমান/২১

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে  লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন

ট্যাগ