ইসলামী সভ্যতা বর্তমান বস্তুবাদী ও কুটিল সভ্যতার বিপরীত: ইমাম খামেনেয়ী
-
আয়াতুল্লাহ খামেনেয়ী
ইরানের কোমের ধর্মীয় শিক্ষা কেন্দ্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার ১০০ বছর পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত আন্তর্জাতিক সম্মেলনে দেয়া সর্বোচ্চ নেতার বাণী আজ (মঙ্গলবার) প্রকাশ করা হয়েছে।
তিনি ঐ বাণীতে বলেছেন, কোমের পবিত্র ও মহান ধর্মীয় কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা, শাজারায়ে তাইয়্যেবা, মহৎ ও আদর্শ মানুষ এবং নিশ্চিত প্রশান্ত আলেম হজরত আয়াতুল্লাহ শেখ আব্দুল করিম হায়েরির ওপর আল্লাহর রহমত বর্ষিত হোক। কোমের ধর্মীয় শিক্ষা কেন্দ্র কেবল শিক্ষাদান এবং শেখার জন্য একটি প্রতিষ্ঠান নয় বরং এটি জ্ঞান, প্রশিক্ষণ ও সামাজিক-রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের প্রতিষ্ঠান। এই ধর্মীয় শিক্ষা কেন্দ্র হলো নির্দিষ্ট দক্ষতা ভিত্তিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।
আয়াতুল্লাহ খামেনেয়ী আরও বলেন, ধর্মীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ফিকাহ, দর্শন এবং ইসলামী মূল্যবোধের উপর ভিত্তি করে রাজনৈতিক ব্যবস্থা, শাসন কাঠামো, পারিবারিক ব্যবস্থা এবং ব্যক্তিগত সম্পর্ক বিষয়ক ইসলামী চিন্তা ও জ্ঞান উৎপাদন এবং ব্যাখ্যা করার কেন্দ্র।
ইসলামী সভ্যতা প্রতিষ্ঠা সম্পর্কে তিনি বলেন, মুসলিম সভ্যতা প্রতিষ্ঠা করা হলো বিপ্লবের সর্বোচ্চ দুনিয়াবি লক্ষ্য। এটা এমন এক সভ্যতা যেখানে বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, মানব ও প্রাকৃতিক সম্পদ, সরকার, রাজনীতি, সামরিক শক্তি ইত্যাদি সামাজিক ন্যায়বিচার এবং জনকল্যাণে ব্যবহৃত হয়। ইসলামী সভ্যতা একত্ববাদ এবং মানবতার প্রতি শ্রদ্ধার উপর প্রতিষ্ঠিত। এটি লিঙ্গ, গায়ের রঙ, ভাষা, জাতি বা ভৌগোলিক অবস্থানের ওপর নির্ভরশীল নয়।
আয়াতুল্লাহ খামেনেয়ী আরও বলেন, ইসলামী সভ্যতা বর্তমান বস্তুগত সভ্যতার বিপরীত। বস্তুগত সভ্যতা শুরু হয়েছিল উপনিবেশ স্থাপন, ভূমি অধিগ্রহণ, আদিবাসীদের গণহত্যা ও বলদর্পিতার মাধ্যমে। এরপর নৈতিক ভিত্তি থেকে বিচ্যুত হয়ে তা বিস্তার লাভ করে। বর্তমানে আমরা পশ্চিমা দেশগুলোর পাশাপাশি তাদের অনুসারী দেশগুলোতে বস্তুবাদী সভ্যতার স্পষ্ট ও পরিপূর্ণ দৃষ্টান্ত দেখতে পাচ্ছি, আর তাহলো- দারিদ্র্য ও ক্ষুধার উপত্যকার পাশে সম্পদের পাহাড়, যাদের ওপর বল প্রয়োগ সম্ভব তাদের ওপর ক্ষমতালোভীদের বলদর্পিতা।
ইরানের সর্বোচ্চ নেতা তার বাণীতে বলেন, পশ্চিমা দেশগুলোর বস্তুবাদী সভ্যতায় আমরা গণহত্যার জন্য বিজ্ঞানের ব্যবহার দেখতে পাচ্ছি, পরিবারগুলোতে এমনকি শিশু ও নবজাতকদের মধ্যেও যৌন অনাচারের বিস্তার দেখা যাচ্ছে। পশ্চিমা দেশগুলোর বস্তুগত সভ্যতায় গাজার মতো ক্ষেত্রে অবর্ণনীয় নিষ্ঠুরতা ও বর্বরতা এবং নানা ইস্যুতে বিভিন্ন সময়ের মার্কিন শাসকদের পক্ষ থেকে যুদ্ধের হুমকির মতো আচরণ দেখা যায়। পশ্চিমা দেশগুলোর ভুয়া বস্তুবাদী সভ্যতা ধ্বংসের পথে এবং ধ্বংস হয়ে যাবে। এটি সৃষ্টির অনিবার্য নিয়ম: "নিশ্চয়, মিথ্যা বিলুপ্ত হওয়ারই" (সূরা আল ইসরা, আয়াত ৮১)।#
পার্সটুডে/এসএ/৭
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।