"ট্রাম্পের সিদ্ধান্ত যাই হোক না কেন পরমাণু সমঝোতায় অটল থাকবে ইউরোপ"
https://parstoday.ir/bn/news/iran-i56962-ট্রাম্পের_সিদ্ধান্ত_যাই_হোক_না_কেন_পরমাণু_সমঝোতায়_অটল_থাকবে_ইউরোপ
ইউরোপের তিনটি প্রভাবশালী দেশ ব্রিটেন, ফ্রান্স ও জার্মানি এক যৌথ বিবৃতিতে জানিয়েছে, "মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সিদ্ধান্ত যাই হোক না কেন ইউরোপ পরমাণু সমঝোতায় অটল থাকবে।"
(last modified 2025-07-29T12:16:04+00:00 )
মে ০৮, ২০১৮ ১৭:৪৭ Asia/Dhaka

ইউরোপের তিনটি প্রভাবশালী দেশ ব্রিটেন, ফ্রান্স ও জার্মানি এক যৌথ বিবৃতিতে জানিয়েছে, "মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সিদ্ধান্ত যাই হোক না কেন ইউরোপ পরমাণু সমঝোতায় অটল থাকবে।"

বার্লিনে জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী হেইকো ম্যাসের সঙ্গে সাক্ষাত শেষে ফরাসি পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাঁ-ইভেস লা দ্রিয়াঁ এক যৌথ বিবৃতিতে বলেছেন, বার্লিন, প্যারিস ও লন্ডন ছয় জাতিগোষ্ঠীর সঙ্গে ইরানের স্বাক্ষরিত পরমাণু সমঝোতা মেনে চলতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প আজ আরো পরে পরমাণু সমঝোতায় অটল থাকবেন কিনা সে বিষয়ে চূড়ান্ত মতামত জানাবেন বলে কথা রয়েছে। এ সমঝোতা থেকে তিনি বেরিয়ে যেতে পারেন বলে অনেকে আশঙ্কা করছেন। এ কারণে ইউরোপীয় দেশগুলো আগেভাগে পরমাণু সমঝোতার ব্যাপারে তাদের অবস্থান স্পষ্ট জানিয়ে দিল।

অবশ্য পরমাণু সমঝোতা মেনে চলার ব্যাপারে ইউরোপের এ ঘোষণার পেছনে কিছু কারণ রয়েছে। ইউরোপ মনে করে পরমাণু সমঝোতার কারণেই ইরানের পরমাণু কর্মসূচির ওপর আরো বেশি নজরদারি অব্যাহত রাখা এবং এর ওপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হয়েছে।  এ ছাড়া, পরমাণু চুক্তির কারণেই ইরানের সেন্ট্রিফিউজের সংখ্যা কমিয়ে আনার পাশাপাশি দেশটির সমৃদ্ধকৃত ইউরেনিয়াম বিদেশে পাঠানো সম্ভব হয়েছে।

ফরাসি প্রেসিডেন্ট ম্যাকরন, জার্মান চ্যান্সেলর মারকেল ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প

ইউরোপের এই তিন দেশ পরমাণু সমঝোতাকে বিরাট সাফল্য বলে মনে করে। তাদের মতে, ইরানের পরমাণু কর্মসূচির ওপর সীমাবদ্ধতা আরোপের জন্য এই চুক্তির বাইরে বিকল্প আর কোনো পথ খোলা নেই। জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রী হেইকো ম্যাস বলেছেন, "পরমাণু সমঝোতা বিশ্বকে নিরাপদ করেছে এবং এই চুক্তি থেকে বেরিয়ে আসার অর্থ বিশ্বকে নিরাপত্তাহীনতার দিকে ঠেলে দেয়া।" তিনি বলেছেন, 'আমি এ জন্য চিন্তিত যে পরমাণু সমঝোতা থেকে বেরিয়ে গেলে বিশ্বে নতুন করে সংকট তৈরি হবে এবং সবাইকে আবার চুক্তি পূর্ববর্তী অবস্থায় ফিরে যেতে হবে যা কেউই চায় না।"

কিন্তু মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি পোষণ করেন। তিনি পরমাণু সমঝোতাকে অত্যন্ত বিপজ্জনক অভিহিত করে এটি বাতিল করার জন্য উঠেপড়ে লেগেছেন। কিন্তু ইউরোপসহ গোটা আন্তর্জাতিক সমাজ ট্রাম্পের এ নীতির বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। এমনকি খোদ অনেক মার্কিন কর্মকর্তাও ট্রাম্পের নীতির বিরোধিতা করেছেন। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ইরানের পরমাণু কর্মসূচি এবং মধ্যপ্রাচ্যে দেশটির তৎপরতা বন্ধের দাবি জানিয়ে পরমাণু সমঝোতায় পরিবর্তন বা সংস্কার করার দাবি জানিয়েছেন। অথচ তার ওই দাবির সাথে পরমাণু সমঝোতার কোনো সম্পর্ক নেই। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প হুমকি দিয়েছেন, তার এসব দাবি পূরণ করা না হলে তিনি পরমাণু সমঝোতা থেকে বেরিয়ে যাবেন। 

কিন্তু ইরান পরমাণু সমঝোতা মেনে চলার কথা জানিয়ে বলেছে, ওয়াশিংটন এ থেকে বেরিয়ে গেলে তেহরানের সামনেও অনেক পরিকল্পনা রয়েছে এবং তারা সেগুলো বাস্তবায়ন করবে। অবশ্য ব্রিটেন, ফ্রান্স ও জার্মানির রাষ্ট্র প্রধানরা ওয়াশিংটন সফরে গিয়ে পরমাণু সমঝোতায় অটল থাকতে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে রাজি করানোর জন্য ব্যাপক চেষ্টা চালিয়েছেন। কিন্তু ট্রাম্প জানিয়ে দিয়েছেন তার শর্তগুলো মেনে নিলেই তিনি পরমাণু সমঝোতার প্রতি সমর্থন দিয়ে যাবেন। অন্যদিকে ইউরোপীয়রা চায় পরমাণু সমঝোতার ভবিষ্যত যেন কেবল আমেরিকার সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভরশীল হয়ে না পড়ে। #

পার্সটুডে/রেজওয়ান হোসেন/৮