বিশ্বশান্তি ও সংলাপের ব্যাপারে জাতিসংঘে তেহরানের অবস্থান ব্যাখ্যা করলেন রুহানি
https://parstoday.ir/bn/news/iran-i64589-বিশ্বশান্তি_ও_সংলাপের_ব্যাপারে_জাতিসংঘে_তেহরানের_অবস্থান_ব্যাখ্যা_করলেন_রুহানি
ইরানের প্রেসিডেন্ট ড. হাসান রুহানি আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে মার্কিন আচরণের তীব্র সমালোচনা করে বলেছেন, তেহরানের ব্যাপারে ওয়াশিংটনের নীতি ব্যর্থ হয়েছে। আজ নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে তিনি এ কথা বলেছেন।
(last modified 2025-07-29T12:16:04+00:00 )
সেপ্টেম্বর ২৬, ২০১৮ ১৯:০২ Asia/Dhaka

ইরানের প্রেসিডেন্ট ড. হাসান রুহানি আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে মার্কিন আচরণের তীব্র সমালোচনা করে বলেছেন, তেহরানের ব্যাপারে ওয়াশিংটনের নীতি ব্যর্থ হয়েছে। আজ নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে তিনি এ কথা বলেছেন।

ইরানের সঙ্গে সংলাপে বসার ব্যাপারে মার্কিন কর্মকর্তাদের মিথ্যাচারের কথা উল্লেখ করে প্রেসিডেন্ট রুহানি প্রশ্ন তুলেছেন, কিসের ভিত্তিতে ইরান মার্কিন সরকারের সঙ্গে নতুন করে চুক্তিতে আবদ্ধ হবে? তিনি বলেন, "যেকোনো সংলাপ হতে হবে নিরাপত্তা পরিষদে অনুমোদিত ২২৩১ নম্বর প্রস্তাব ও পরমাণু সমঝোতা অনুযায়ী। আর অতীতেও ফিরে যাওয়ার সুযোগ নেই এবং এই সমঝোতা লঙ্ঘনেরও কোনো সুযোগ নেই।"

পর্যবেক্ষকরা বলছেন, ইরানের প্রেসিডেন্ট রুহানি জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে দেয়া ভাষণে এমন কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় উত্থাপন করেছেন যার আন্তর্জাতিক গুরুত্ব রয়েছে। কারণ এ বিষয়গুলো সব দেশের ভবিষ্যতের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত। বর্তমান পরিস্থিতিতে আমেরিকা পরমাণু সমঝোতায় থাকবে কিনা কিংবা প্রতিশ্রুতি মেনে চলবে কিনা তা নিয়ে বিতর্কের অবকাশ নেই। পরমাণু সমঝোতায় স্বাক্ষরকারী দেশগুলোর অবস্থান কী হবে সেটাই এখন সবচেয়ে দেখার বিষয়। আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে, আমেরিকার সঙ্গে আলোচনায় বসার ব্যাপারে প্রেসিডেন্ট রুহানির শর্তারোপ।

এটা কারোরই অজানা নয় যে, আমেরিকা সবসময় মিথ্যা অভিযোগ আরোপ ও জোরজবরদস্তি করে অভ্যস্ত। অর্ধ শতাব্দির বেশি সময় ধরে আমেরিকার প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ ও বিদ্বেষী আচরণের সঙ্গে ইরানের জনগণ পরিচিত। এ কারণে আমেরিকার প্রতি ইরানের জনগণের কোনো আস্থা নেই। ইরানের সঙ্গে বিদ্বেষ অব্যাহত রাখার জন্য পরমাণু সমঝোতা কেবল অজুহাত মাত্র। এ ব্যাপারে মার্কিন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ জিম ওয়ালেশ বলেছেন, "এটা খুবই সহজ হিসাব যে ইরানের পরমাণু কর্মসূচির ব্যাপারে আমেরিকা বহু বছর ধরে নানা মিথ্যা অভিযোগ করে আসছিল। কিন্তু কখনই এসব দাবির স্বপক্ষে কোনো দলিল প্রমাণ উপস্থাপন করেনি।" ইরান গোপনে পরমাণু অস্ত্র তৈরি করছে এমন কোনো প্রমাণ আমেরিকা আজো দিতে পারেনি বলেও তিনি মন্তব্য করেন।

বিশ্বের প্রায় সব দেশের সঙ্গে আমেরিকার লেনদেন রয়েছে এবং সবার সঙ্গে এ দেশটি মোড়লিসূলভ আচরণ করছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তার বক্তব্যে প্রায়ই 'উচিত' শব্দটি ব্যবহার করেন এবং এ ভাষাতেই অন্য দেশের সঙ্গে আলোচনা করেন যা শিষ্টাচারের লঙ্ঘন। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প জাতিসংঘে দেয়া ভাষণে আমেরিকাকে শান্তি, নিরাপত্তা ও মানবাধিকার রক্ষক হিসেবে অভিহিত করে মধ্যপ্রাচ্যে চলমান নিরাপত্তাহীনতার জন্য ইরানকে দায়ী করেন। কিন্তু ইরান শুধু মুখের কথায় নয় বরং দায়েশ সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে বাস্তবে প্রমাণ করেছে তারা শান্তি ও নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠার জন্য চেষ্টা করছে।

ইরানের প্রেসিডেন্ট তার ভাষণে শান্তি প্রতিষ্ঠায় তার দেশের ভূমিকার কথা উল্লেখ করে যে বক্তব্য দিয়েছেন তাতে একদিকে মার্কিন বিদ্বেষী নীতি চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে অন্যদিকে বিশ্ববাসীর কাছে আমেরিকার চেহারা আরো স্পষ্ট হয়েছে। প্রেসিডেন্ট রুহানি বলেন এ অবস্থায় আমেরিকার সঙ্গে আলোচনায় বসার কোনো সুযোগ নেই।

ইরানের সর্বোচ্চ নেতা যেমনটি বলেছেন, এমন অনেক বিষয় আছে যা নিয়ে আমেরিকার সঙ্গে কোনো সমঝোতায় পৌঁছা সম্ভব নয়। কারণ ইরানের ইসলামি শাসন ব্যবস্থার সঙ্গেই রয়েছে আমেরিকার মূল বিরোধ। এখানে পরমাণু বা মানবাধিকারের মতো বিষয়গুলো মোটেই গুরুত্বপূর্ণ নয়-সবই অজুহাত মাত্র। #  

পার্সটুডে/রেজওয়ান হোসেন/২৬