প্রসঙ্গ করোনা: জাতির উদ্দেশ্যে ইরানের সর্বোচ্চ নেতার ভাষণ
-
ইরানের সর্বোচ্চ নেতা
ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনেয়ী বলেছেন, মার্কিনীরা যখন করোনাভাইরাস তৈরি করার দায়ে অভিযুক্ত তখন কোনো সুস্থ বিবেকবান মানুষ আমেরিকার কাছ থেকে সাহায্য গ্রহণ করতে পারে না এবং তাদের ওপর কোনো আস্থাও রাখা যায় না।
তিনি বিশ্বনবী হযরত মোহাম্মদ (সা.)এর নবুওত প্রাপ্তি দিবস এবং ফার্সি নববর্ষ উপলক্ষে জাতির উদ্দেশ্যে দেয়া ভাষণে এ কথা বলেছেন। ইরানকে করোনাভাইরাস বিরোধী লড়াইয়ে সহায়তা দেওয়ার আমেরিকার প্রস্তাবকে 'ভণ্ডামি' বলে অভিহিত করে তিনি বলেছেন, 'প্রথমত তারা নিজেরাই প্রচণ্ডভাবে করোনা মোকাবিলার ওষুধ ও চিকিৎসা সামগ্রীর অভাবে রয়েছেন। আর দ্বিতীয়ত, আমেরিকার বিরুদ্ধে করোনা ভাইরাস তৈরির অভিযোগ উঠেছে সে অবস্থায় কোনো সুস্থ বিবেকবান মানুষ আমেরিকার কাছ থেকে সহযোগিতা নিতে পারে না।'
ইরানের সর্বোচ্চ নেতা মার্কিন কর্মকর্তাদেরকে সন্ত্রাসী ও মিথ্যাবাদী অভিহিত করে বলেছেন, 'মার্কিনীদের ওপর কোনো আস্থা রাখা যায় না। কারণ মার্কিনীরা হয়তো এমন ওষুধ পাঠাতে চায় যাতে ইরানে এই ভাইরাস আরো বেশি ছড়িয়ে পড়ে অথবা স্থায়ীভাবে ছড়িয়ে যায়। অথবা এটাও হতে পারে যে, তারা ইরানি জনগণের ওপর করোনাভাইরাস কতটা কাজ করেছে তা পরীক্ষা করার উদ্দেশ্যে কিছু বিশেষজ্ঞ পাঠাতে চায়; কারণ বলা হচ্ছে, এই ভাইরাসের একটি অংশ তৈরি করা হয়েছে শুধুমাত্র ইরানি জনগণকে টার্গেট করে।
চীনের পর ইরানেও করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার পর এ ভাইরাস তৈরিতে আমেরিকার হাত থাকার খবর প্রকাশিত হয়। চীনের কর্মকর্তারা প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস তৈরি ও ছড়িয়ে দেয়ার জন্য সরাসরি আমেরিকাকে অভিযুক্ত করেন। আমেরিকায় রোগ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ বিষয়ক দফতরের প্রধান রবার্ট রেডফিল্ড বলেছেন, মার্কিন স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা করোনা ভাইরাস চিহ্নিত করতে পেরেছেন এবং তারা এও বলেছেন, এটির উৎপত্তিস্থল চীন নয়।
ওই কর্মকর্তার এ ঘোষণার পর চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেছেন, মার্কিন সেনা বাহিনী করোনা ভাইরাসকে চীনের উহান প্রদেশে নিয়ে এসেছে। চীনের অভিযোগ উত্থাপনের পর ইরানও করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার মূল কারণ অনুসন্ধানের কাজ শুরু করেছে। যাইহোক, করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার পর ইরানের বিরুদ্ধে মার্কিন কর্মকর্তাদের নানা বক্তব্য বা প্রস্তাব উত্থাপন প্রতারণা ছাড়া আর কিছুই নয়। কারণ তারা একদিকে ইরানের জনগণকে সহায়তা দেয়ার কথা বলছে আবার ইরানের ওপর সর্বোচ্চ চাপ সৃষ্টির অংশ হিসেবে কঠোর নিষেধাজ্ঞা দিয়ে রেখেছে যার কারণে করোনা মোকাবেলায় ইরানকে হিমশিম খেতে হচ্ছে।
মার্কিন নিষেধাজ্ঞার কারণে ইরানের চিকিৎসা সেবা ব্যহত হচ্ছে এবং প্রতি দশ মিনিটে একজন করে করোনা রোগী মারা যাচ্ছে। আমেরিকার এ আচরণ মানবতা বিরোধী অপরাধ এবং ইরানের সর্বোচ্চ নেতা এ আচরণকে সন্ত্রাসী ও কঠিন হৃদয়ের পরিচায়ক হিসেবে অভিহিত করেছেন। করোনা ভাইরাস বর্তমানে ১৮০টির বেশি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে এবং সব দেশের পারস্পরিক সহযোগিতা প্রয়োজন। ইরান নিজস্ব উপকরণ ও মেধা দিয়ে এ ভাইরাস মোকাবেলা করে যাচ্ছে এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরামর্শ অনুযায়ী চলছে। #
পার্সটুডে/রেজওয়ান হোসেন/২৩