গুলিস্তানের শাহকূহ গ্রাম: ইরানের প্রথম ইন্টারনেট পল্লী
(last modified Mon, 17 Aug 2020 12:27:04 GMT )
আগস্ট ১৭, ২০২০ ১৮:২৭ Asia/Dhaka
  • শাহকূহ গ্রামের একটি বাড়ি
    শাহকূহ গ্রামের একটি বাড়ি

ইরানের উত্তরাঞ্চলীয় প্রদেশ গুলিস্তানের প্রাচীন একটি গ্রামের নাম হলো শাহকূহ যা 'শাহকূহ-ই সোফলা' নামেও পরিচিত। ইরানের সর্বপ্রথম ইন্টারনেট পল্লী এটি। এখানকার ছোট-বড় সবাই ইন্টারনেট প্রশিক্ষণ ক্লাসে অংশ নিয়ে মোটামুটি এই প্রযুক্তিটির সাথে পরিচিত হয়েছে।

ইরানের বিশাল বিস্তৃত ভূখণ্ডের অন্যতম দর্শনীয় একটি এলাকা হলো গুলিস্তান প্রদেশের এই গ্রামটি। এখানকার প্রাকৃতিক লীলা বৈচিত্র্য যে কারো মন কেড়ে নেবে। যেমন এখানে আছে অসংখ্য পার্ক, আছে জলাশয়, ঝর্ণা, বন-বনানী, বাঁধ এবং চমৎকার সব গ্রাম। আর আশপাশ জুড়ে আছে পাহাড়-পর্বত। সব মিলিয়ে অবকাশ যাপনের জন্যে কিংবা আনন্দ ভ্রমণের জন্যে এই এলাকাটি খুবই উপযোগী। সেজেন্য এ এলাকায় সারা বছর জুড়েই ভ্রমণকারীদের ভিড় থাকে।

শাহকূহ গ্রামটি কেন্দ্রিয় আলবোর্য এবং গোরগান শহর থেকে ৬৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূবাঞ্চলে অবস্থিত। গ্রামটির উচ্চতা সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ২ হাজার ৪ শ' ৫০ মিটার। গ্রামটি সেই রিনু এবং কেনু উপত্যকা পর্যন্ত বিস্তৃত। এর আশেপাশে আছে খোশ দাশতি, শিরকুশ, সিয়হপুশ, তুর্কে চা'ল এবং গভকেশন পর্বতগুচ্ছ। পার্বত্য উপত্যকায় অবস্থানের কারণে শাহকূহ গ্রামটির আবহাওয়া বেশ হালকা এবং শুষ্ক। এ কারণে যারাই এখানে বেড়াতে আসে তারাই এরকম দূষণমুক্ত চমৎকার আবহাওয়া উপভোগ করে।

শাহকূহ এলাকাটি বিচিত্র বন-বনানীময়। ফলে এখানে থাকবে বিচিত্র প্রজাতির গাছ-গাছালি-এটাই স্বাভাবিক। বৃষ্টি-বাদলের কারণে এখানে এতো বিচিত্র উদ্ভিদ জন্মে। ঔষুধি উদ্ভিদও রয়েছে প্রচুর। এখানকার প্রাচীন ঘরগুলো এখানকার গাছ-গাছালি থেকে তৈরি কাঠ দিয়েই বানানো হয়েছে। যেহেতু অনেক প্রাচীন গাছ কেটে বানানো হয়েছে ঘরগুলো, সেজন্যে প্রাচীন ঘরগুলোর অস্তিত্ব এখনো টিকে আছে।

এখানকার মানুষ কর্মজীবী। বিভিন্ন রকম পেশায় জড়িত তারা। কেউ কৃষিকাজ করে, কেউ বাগান তৈরি করে, কেউবা আবার পশুপালন করে নিজেদের জীবিকা নির্বাহ করে। অনেকে আবার হস্তশিল্পের কাজেও জড়িত। এখানকার কৃষিজমিতে গম,যব,আলু,সূর্যমুখীসহ বিচিত্র তেলবীজের চাষ হয়। শাকসব্জিও হয় প্রচুর পরিমাণ। ফলপাকড়ার মধ্যে যার্দালু, আপেল এবং বাদাম হয় প্রচুর। বাগ-বাগিচা আর কৃষি জমির বাইরেও এখানে আছে বিস্তীর্ণ চারণভূমি। চারণভূমি থাকার কারণে পশুপালন এখানকার ঐতিহ্যবাহী একটি পেশায় পরিণত হয়েছে। আর পশুপালন থেকে যেসব পণ্যসামগ্রী উৎপন্ন হয় সেসবও এখানে বেশ সুলভ।  

বলা হয়ে থাকে, ইন্টারনেট সংযোগের কারণে এই গ্রামটির বহু যুবক ছেলে-মেয়ের জন্যে সমগ্র বিশ্বের সাথে যোগাযোগের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। যার ফলে এখানকার ছেলেমেয়েরা চাকুরি প্রাপ্তির ক্ষেত্রে অন্যদের তুলনায় অনেক বেশি এগিয়ে রয়েছে। কেননা ইন্টারনেটে জবসার্চ করে নিজেদের যোগ্যতা অনুযায়ী চাকরি পাবার সুযোগ রয়েছে। এই সুযোগ কেবল নিজেদের দেশের জন্যেই নয় বরং সমগ্র বিশ্বজুড়ে চাকুরি খোঁজার সুযোগ রয়েছে ইন্টারনেটে। শাহকূহের আই.সি.টি. কেন্দ্রে অসংখ্য গ্রামবাসী ইন্টারনেট প্রশিক্ষণ নিয়েছে আর গ্রামের তরুণ-যুবকেরা তাদের বিভিন্ন কাজের জন্যে এই কেন্দ্রের সুযোগটিকে কাজে লাগায়।#

পার্সটুডে/আশরাফুর রহমান/১৭

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।

ট্যাগ