সেপ্টেম্বর ০৪, ২০২০ ১৯:১৭ Asia/Dhaka

ট্রাম্প সরকার ২০১৮ সালের মে'তে পরমাণু সমঝোতা থেকে বেরিয়ে গিয়ে ইরানের ওপর সর্বোচ্চ চাপ প্রয়োগের যে নীতি প্রয়োগ করেছিল তা চরমভাবে ব্যর্থ হবার পরও দেশটি নতুন নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেই যাচ্ছে।

ইরানের পেট্রোকেমিক্যাল পণ্য বিক্রয়ে সহযোগিতার অজুহাতে গতকাল নতুন করে আরও ৬টি কোম্পানির বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে ওয়াশিংটন। এইসব কোম্পানি চলতি বছরের জানুয়ারিতে মার্কিন কালো তালিকাভুক্ত 'ট্রিলিয়ন্স' পেট্রোকেমিক্যাল কোম্পানির সঙ্গে সহযোগিতা করেছে বলে আমেরিকার অর্থ মন্ত্রণালয় অজুহাত দেখিয়েছে। ইরান, সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং চীন কেন্দ্রিক কার্যক্রম পরিচালিত এইসব কোম্পানি ইরানের পেট্রোকেমিক্যাল পণ্যের বিক্রয় এজেন্ট। ‌এগুলোর বাইরেও ইরানি পেট্রোকেমিক্যাল পণ্যের কেনা-বেচা, স্থানান্তর কিংবা মার্কেটিংয়ে সাহায্যের অজুহাতে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আরও ৫ টি কোম্পানির ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। এসব কোম্পানির তিনজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির বিরুদ্ধেও আমেরিকা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে।

আমেরিকার এসব তৎপরতা থেকে বিশেষজ্ঞগণ মনে করছেন জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে ইরান বিরোধী নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল করতে ব্যর্থ হয়েই ট্রাম্প নয়া নিষেধাজ্ঞা দিয়ে মনের ঝাল মেটানোর চেষ্টা করছে।

জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ

আমেরিকার প্রথম পদক্ষেপ ছিল ইরানের ওপর আরোপিত অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল করার ব্যাপক প্রচেষ্টা। জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের ২২৩১ নম্বর প্রস্তাব অনুসারে চলতি বছরের ১৮ অক্টোবরে শেষ হতে যাচ্ছে ইরানের ওপর আরোপিত অস্ত্র নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ। সে কারণেই আমেরিকা ওই নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল করতে উঠেপড়ে লেগেছে। কিন্তু নিরাপত্তা পরিষদের ১৩ সদস্যই মার্কিন প্রস্তাবের বিপক্ষে রায় দেওয়ায় তাদের সকল তৎপরতাই ব্যর্থ হয়ে গেছে।

ইরানের বিরুদ্ধে আমেরিকার দ্বিতীয় পদক্ষেপ ছিল অদ্ভুত এক দাবি। ট্রাম্প ২২৩১ নম্বর প্রস্তাব অনুসারে নিরাপত্তা পরিষদে ইরানের বিরুদ্ধে সমঝোতা লঙ্ঘনের অজুহাত তুলে বলেছে: স্বয়ংক্রিয়ভাবেই এক মাসের মধ্যে ইরানের ওপর অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল হতে হবে। তাদের দেওয়া হিসেবমতে ওই এক মাসের মেয়াদকাল শেষ হবে চলতি মাসের ২০ তারিখে। আমেরিকার ওই হাস্যকর দাবির বিরুদ্ধে ইন্দোনেশিয়া, নাইজেরিয়াসহ নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী-অস্থায়ী প্রায় সকল সদস্যই অবস্থান নিয়েছে। কেবল আমেরিকা নিজে এবং ডোমিনিক প্রজাতন্ত্র বিরোধিতা করে নি। ইতিহাসে আর কখনোই আমেরিকা বিশ্বজুড়ে এরকম কোনঠাসা হয় নি। যার ফলে একপেশে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা ছাড়া ইরানের বিরুদ্ধে আমেরিকার করার আর কিছুই অবশিষ্ট নেই। জার্মান রাজনীতি বিশ্লেষক মাইকেল লুদার্জ যেমনটি বলেছেন: 'আমেরিকা চাচ্ছে ইরানকে অর্থনৈতিকভাবে নতজানু করে মার্কিনিদের ইচ্ছের কাছে আত্মসমর্পনে বাধ্য করতে। কিন্তু আমেরিকার সেই আশা কোনোদিনই পূরণ হবে না'। সিনেটর ক্রিস মরফিও নির্দ্বিধায় একথা স্বীকার করেছেন।#

পার্সটুডে/এনএম/৪

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।

 

 

ট্যাগ