ফ্রান্সকে জারিফের স্পষ্ট বার্তা: যুক্তরাষ্ট্রের বেআইনি নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়ন বন্ধ করুন
https://parstoday.ir/bn/news/iran-i89594
আগামী মঙ্গলবার ১৩ এপ্রিল ভিয়েনায় ইরানের সঙ্গে পরমাণু সমঝোতায় স্বাক্ষরকারী দেশগুলো বৈঠকে বসবে বলে কথা রয়েছে। প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের নেতৃত্বাধীন বর্তমান মার্কিন সরকার কীভাবে পরমাণু সমঝোতায় ফিরবে তা নিয়ে আলোচনা করা হবে ওই বৈঠকের মূল উদ্দেশ্য। তবে পরমাণু সমঝোতা রক্ষায় ইউরোপ ইতিবাচক কি পদক্ষেপ নেয় সেটাই দেখার বিষয়।
(last modified 2025-07-09T12:00:31+00:00 )
এপ্রিল ০৪, ২০২১ ১৬:৫৬ Asia/Dhaka

আগামী মঙ্গলবার ১৩ এপ্রিল ভিয়েনায় ইরানের সঙ্গে পরমাণু সমঝোতায় স্বাক্ষরকারী দেশগুলো বৈঠকে বসবে বলে কথা রয়েছে। প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের নেতৃত্বাধীন বর্তমান মার্কিন সরকার কীভাবে পরমাণু সমঝোতায় ফিরবে তা নিয়ে আলোচনা করা হবে ওই বৈঠকের মূল উদ্দেশ্য। তবে পরমাণু সমঝোতা রক্ষায় ইউরোপ ইতিবাচক কি পদক্ষেপ নেয় সেটাই দেখার বিষয়।

ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ জাওয়াদ জারিফ এক টুইটবার্তায় আগামী সপ্তাহে ভিয়েনায় যে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক হতে যাচ্ছে তাতে গঠনমূলক ভূমিকা পালন করার জন্য ফ্রান্সের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জ্যঁ-ইভস লা দ্রিয়াঁর প্রতি আহ্বান জানানোর কথা জানিয়েছেন। জারিফ গত শনিবার তার ফরাসি সমকক্ষের সঙ্গে টেলিফোনালাপে বলেছেন, তারা যেন পরমাণু সমঝোতায় নিজেদের দেয়া প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করে এবং আমেরিকার বেআইনি নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়ন বন্ধ করে।

বাস্তবতা হচ্ছে, পরমাণু সমঝোতাকে টিকিয়ে রাখতে হলে সব পক্ষের আন্তরিক সদিচ্ছার প্রয়োজন। ইরান তার আন্তরিকতার প্রমাণ দিয়েছে। কেননা মার্কিন সরকার পরমাণু সমঝোতা থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পরও স্বদিচ্ছার নিদর্শন স্বরূপ ইরান এক বছর পর্যন্ত চুক্তি অনুযায়ী নিজের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করেছে। এ সময়টিতে ইউরোপ ইরানের ওপর প্রবল চাপ সৃষ্টি করেছিল যাতে দেশটি পরমাণু সমঝোতা থেকে বেরিয়ে না যায়। ইউরোপ সে সময় যুক্তরাষ্ট্র সমঝোতা থেকে বেরিয়ে যাওয়ায় ইরানের আর্থিক ক্ষতি পুষিয়ে দেয়ারও প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। কিন্তু ইউরোপ আজ পর্যন্ত ইরানের ক্ষতি পুষিয়ে দেয়ার কোনো পদক্ষেপই নেয়নি। তারা বলেছিল ইরান বিরোধী নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারে পদক্ষেপ নেবে এবং ইরানের সঙ্গে নির্বিঘ্নে বাণিজ্যের জন্য অর্থসরবরাহের জন্য 'ইন্সটেক্স' ব্যবস্থা চালু করবে। কিন্তু কোনো কথাই ইউরোপ রাখেনি।

জার্মানি, ফ্রান্স ও ব্রিটেন ভালো করেই জানে পরমাণু সমঝোতা থেকে বেরিয়ে গিয়ে যুক্তরাষ্ট্র সরকার ভয়ঙ্কর একটি প্রথা চালু করেছে। কিন্তু তারপরও ইউরোপ বর্তমান অচলাবস্থা কাটিয়ে ওঠার জন্য একতরফাভাবে প্রতিশ্রুতি পালনের জন্য ইরানের ওপর চাপ সৃষ্টি করছে। ইরানের রাজনৈতিক বিশ্লেষক সাইয়্যেদ জালাল সাদাতিয়ান বলেছেন, ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রই পরমাণু সমঝোতা বাস্তবায়নকে নিজেদের বলদর্পিতা ও ব্যর্থতার জটে আবদ্ধ করে ফেলেছে। এ ক্ষেত্রে ইরানের কোনো দায় নেই কেননা আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থার প্রতিবেদনগুলোতে বলা হয়েছে ইরান তার সব প্রতিশ্রুতিই রক্ষা করেছে।

বাস্তবতা হচ্ছে, ইউরোপ স্বাধীনভাবে ইরানের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে ব্যর্থ হয়েছে। এ কারণে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাওয়াদ জারিফ ফরাসি পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে স্পষ্ট বার্তা দিয়ে বলেছেন, পরমাণু সমঝোতা বাস্তবায়নের ব্যাপারে তারা যেন দৃঢ় সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও দায়িত্বশীল আচরণ করে।

ইরানের বক্তব্য হচ্ছে তারা যদি পরমাণু সমঝোতা মেনে চলে তাহলে প্রতিপক্ষকেও তাদের ওয়াদা পালন করতে হবে। এ অবস্থায় বর্তমানে ইউরোপের সামনে দু'টি পথ খোলা রয়েছে। প্রথমত, ইউরোপকে হয় পরমাণু সমঝোতা বাস্তবায়নের  পথে ফিরে আসতে হবে যা কিনা আসন্ন ভিয়েনা বৈঠকে তাদের জন্য পরীক্ষা হয়ে দাঁড়াবে। আর দ্বিতীয়ত, তারা যদি অতীত ভুলের মধ্যেই থাকে তাহলে আরো বেশি অচলাবস্থার সম্মুখীন হবে এবং পরমাণু সমঝোতা থেকে আরো দূরে সরে যাবে।#          

পার্সটুডে/রেজওয়ান হোসেন/৪