ইরানে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন নিয়ে পাশ্চাত্যের হতাশার কারণ তুলে ধরলেন সর্বোচ্চ নেতা
https://parstoday.ir/bn/news/iran-i93896
ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনেয়ী মানবাধিকার নিয়ে পশ্চিমা দেশগুলোর দ্বিমুখী আচরণের তীব্র সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেছেন, 'সুনির্দিষ্ট কিছু পশ্চিমা দেশ সন্ত্রাসীদের জন্য অভয়ারণ্যে পরিণত হওয়া সত্ত্বেও তারা নিজেদেরকে নির্লজ্জভাবে মানবাধিকারের রক্ষক বলে দাবি করে যাচ্ছে।'
(last modified 2025-07-09T12:00:31+00:00 )
জুন ২৯, ২০২১ ১৩:১০ Asia/Dhaka

ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনেয়ী মানবাধিকার নিয়ে পশ্চিমা দেশগুলোর দ্বিমুখী আচরণের তীব্র সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেছেন, 'সুনির্দিষ্ট কিছু পশ্চিমা দেশ সন্ত্রাসীদের জন্য অভয়ারণ্যে পরিণত হওয়া সত্ত্বেও তারা নিজেদেরকে নির্লজ্জভাবে মানবাধিকারের রক্ষক বলে দাবি করে যাচ্ছে।'

আয়াতুল্লাহ বেহেশতির শাহাদাত বার্ষিকীতে বিচারবিভাগ দিবস উপলক্ষে ইরানের বিচার বিভাগের প্রধান ও নব-নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট আয়াতুল্লাহ সাইয়্যেদ ইব্রাহিম রায়িসি একদল বিচারপতি ও অ্যাটর্নিকে নিয়ে সর্বোচ্চ নেতার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গেলে তিনি এ মন্তব্য করেন। আয়াতুল্লাহ খামেনেয়ী বলেন, ইরানের সরকারবিরোধী সন্ত্রাসী মুজাহেদিনে খালক বা এমকেও গোষ্ঠীর জঙ্গিরা ফ্রান্সসহ অন্যান্য ইউরোপীয় দেশে অবাধে বিচরণ করছে।

সর্বোচ্চ নেতা বলেন, শত্রুদের প্রধান টার্গেট হচ্ছে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালানো। সন্ত্রাসবাদের বিষয়ে পাশ্চাত্যের দ্বিমুখী চরিত্রের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ফ্রান্সসহ মানবাধিকারের দাবিদার পাশ্চাত্যের অনেক দেশের সমর্থন নিয়ে সন্ত্রাসীরা তৎপরতা চালাচ্ছে। একইসঙ্গে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা তার বক্তব্যে ইরানে সদ্য অনুষ্ঠিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে অংশ নেয়া জনগণের বীরত্বগাথার কথা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, 'ইরানিরা যাতে ভোট দিতে না আসে সেজন্য যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেনসহ পাশ্চাত্যের আরো অনেক দেশের অসংখ্য গণমাধ্যম নজিরবিহীন প্রচার চালিয়েছে। শেষ মুহূর্তে এসব প্রচারমাধ্যম ইরানের জনগণের আর্থিক ও জীবনমান সমস্যাকে পুঁজি করে এবং প্রার্থীদের যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে জনগণকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা চালিয়েছে। তারা এমনভাবে ইরানের নির্বাচন বিরোধী প্রচার চালিয়েছে যাতে ভোট দানের পরিমাণ ২০ থেকে ২৫ শতাংশের বেশি না হয়।'

নির্বাচন নিয়ে একজন মার্কিন কর্মকর্তার বক্তব্যের কথা উল্লেখ করে আয়াতুল্লাহ খামেনেয়ী আরো বলেন, 'সম্প্রতি অনুষ্ঠিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ঘটনাবলীতে সারা বিশ্বের কাছে যুক্তরাষ্ট্রের মানমর্যাদা ভূলুণ্ঠিত হয়েছে, সারা বিশ্বের কাছে তারা কলঙ্কিত হয়েছে। ঠিক এর কয়েক মাস পর ইরানের  নির্বাচনকেও তারা কলঙ্কিত করার চেষ্টা করেছে। অথচ এতোবড় কলঙ্কের বোঝা কাঁধে নিয়ে ইরানের নির্বাচন নিয়ে কথা বলার অবস্থায় তারা নেই।'

বাস্তবতা হচ্ছে, করোনার ভয়কে উপেক্ষা করে ইরানে এবারের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনেও যে পরিমাণে মানুষ অংশ নিয়েছে তা ছিল পাশ্চাত্যের ধারনার বাইরে। নির্বাচনে অংশ নিয়ে জনগণ পাশ্চাত্যকে যে বার্তা দিয়েছে তা হচ্ছে ধর্ম ভিত্তিক জনগণের শাসন ব্যবস্থার প্রতি তাদের সমর্থন রয়েছে। এ ব্যাপারে ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনেয়ী বলেছেন, 'ধর্ম ভিত্তিক জনগণের শাসন ব্যবস্থাকে আমরা আমাদের উন্নতির চাবিকাঠি মনে করি। আধ্যাত্মিকতা ও বস্তুগত উভয় দিক দিয়ে উন্নতির জন্য ধর্ম ভিত্তিক জনগণের শাসন ব্যবস্থার বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে যার মাধ্যমে জনগণ ইহকাল ও পরকালে কল্যাণ পেতে পারে।'

প্রকৃতপক্ষে, ইরানে অনুষ্ঠিত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জনগণের উপস্থিতি শত্রুদেরকে হতাশ করে দিয়েছে। ফলে বিজয় হয়েছে জনগণের। আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে, শত্রুর ব্যাপক প্রচারণা সত্বেও নির্বাচনে জনগণের উপস্থিতির ব্যাপারে ইরানের সর্বোচ্চ নেতার বক্তব্য থেকে উপযুক্ত সময়ে শত্রুর ষড়যন্ত্র ব্যর্থ করে দেয়ার ক্ষেত্রে জনগণের উপস্থিতির গুরুত্বের বিষয়টি ফুটে উঠেছে।#

পার্সটুডে/রেজওয়ান হোসেন/২৯