ইরানের বিরুদ্ধে অপহরণ প্রচেষ্টার মার্কিন অভিযোগ: তেহরানের প্রতিক্রিয়া
https://parstoday.ir/bn/news/iran-i94702-ইরানের_বিরুদ্ধে_অপহরণ_প্রচেষ্টার_মার্কিন_অভিযোগ_তেহরানের_প্রতিক্রিয়া
গত কিছুদিন ধরে মার্কিন সরকার ইরানের বিরুদ্ধে নতুন করে বিভিন্ন অভিযোগ করা শুরু করেছে। মার্কিন বিচার মন্ত্রণালয় গত সপ্তাহে এক বিবৃতিতে দাবি করেছে এফবিআই সম্প্রতি সেদেশে এক ব্যক্তিকে অপহরণের ইরানি প্রচেষ্টাকে নস্যাৎ করে দিয়েছে। এ অভিযোগের পর থেকে ইরানের বিরুদ্ধে জোর অপপ্রচার শুরু হয়েছে।
(last modified 2025-07-29T12:16:04+00:00 )
জুলাই ১৭, ২০২১ ১৬:১৩ Asia/Dhaka

গত কিছুদিন ধরে মার্কিন সরকার ইরানের বিরুদ্ধে নতুন করে বিভিন্ন অভিযোগ করা শুরু করেছে। মার্কিন বিচার মন্ত্রণালয় গত সপ্তাহে এক বিবৃতিতে দাবি করেছে এফবিআই সম্প্রতি সেদেশে এক ব্যক্তিকে অপহরণের ইরানি প্রচেষ্টাকে নস্যাৎ করে দিয়েছে। এ অভিযোগের পর থেকে ইরানের বিরুদ্ধে জোর অপপ্রচার শুরু হয়েছে।

দক্ষিণ নিউইয়র্কে মার্কিন কৌসুলি অযারি স্টেরাওয়াস দাবি করেছেন, ইরান সরকার তাদের লোকদেরকে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানকারী এক ব্যক্তিকে অপহরণ করে ইরানে ফিরিয়ে আনার নির্দেশ দিয়েছে অথবা এমন অবস্থা করতে যাতে তার ভাগ্যে কি ঘটেছে তা যেন কেউ জানতে না পারে। পর্যবেক্ষকরা বলছেন, ইরানের বিরুদ্ধে মার্কিন সরকারের  এ ধরনের আচরণ যদিও নতুন কিছু নয় কিন্তু সম্প্রতি কিছু ঘটনাবলীর একইসঙ্গে নতুন করে অপহরণের অভিযোগ তাৎপর্যপূর্ণ।

ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ জাওয়াদ জারিফ এ অভিযোগের প্রতিক্রিয়ায় বলেছেন, অন্য দেশের বিরুদ্ধে অভিযোগ করার আগে মার্কিন সরকারের উচিত নিজ দেশের পরিস্থিতির  দিকে নজর দেয়া। হাইতির প্রেসিডেন্টকে  হত্যা এবং ভেনিজুয়েলার প্রেসিডেন্টকেও হত্যা প্রচেষ্টায় মার্কিন সরকারের হাত থাকার কথা উল্লেখ করে জারিফ তার টুইটার বার্তায় আরো বলেছেন, মার্কিন সরকারের অনুগত সশস্ত্র ব্যক্তিরা যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে বসে হাইতি ও ভেনিজুয়েলার শীর্ষ নেতাদের হত্যার পরিকল্পনা করেছিল। অথচ সেই মার্কিন সরকার এখন ইরানের বিরুদ্ধে অপহরণের ভিত্তিহীন ও হাস্যকর অভিযোগ তুলছে।

এতে কোনো সন্দেহ নেই যে, মার্কিন ইতিহাস বিভিন্ন দেশের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদ, অপহরণ ও ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ডে পরিপূর্ণ। এ অবস্থায় তাদের ধারণা ইরানের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালিয়ে ও মিথ্যা অভিযোগ উত্থাপন করে নিজেরা সমালোচনা ও বাইরের বিভিন্ন মহলের চাপ থেকে রক্ষা পাবে।

বাস্তবতা হচ্ছে, পরমাণু বিষয়ক আলোচনায় ইরান যুক্তরাষ্ট্রের স্বেচ্ছাচারিতার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছে। এটা ওয়াশিংটনের জন্য বিব্রতকর ও অপমানের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে এবং এর জন্য তাদেরকে চরম মূল্যও দিতে হচ্ছে। এ কারণে মার্কিন সরকার ভিত্তিহীন অজুহাতে ইরানের ওপর এমনভাবে চাপ সৃষ্টির চেষ্টা করছে যাতে ইরান কঠিন অবস্থার সম্মুখীন হয়। মার্কিন সরকার ভিয়েনায় অনুষ্ঠিত পরমাণু সংক্রান্ত বৈঠকে দেখিয়ে দিয়েছে, তারা আসলে কোনো সুবিধা না দিয়ে পরমাণু সমঝোতায় ইরানকে ফিরিয়ে এনে পরমাণু ক্ষেত্রে ইরানের কার্যক্রমকে সীমাবদ্ধ করার চেষ্টা করছে। এমনকি তারা পরমাণু সমঝোতার বাইরে অপ্রাসঙ্গিক অন্য বিষয় অর্থাৎ ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র ও আঞ্চলিক বিষয়াদি টেনে এনে তা মেনে চলতে ইরানকে বাধ্য করার চেষ্টা করছে। কিন্তু ইরান সাফ জানিয়ে দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের এসব আবদার গ্রহণযোগ্য নয়।

বাস্তবতা হচ্ছে, বেআইনিভাবে পরমাণু সমঝোতা থেকে বেরিয়ে গিয়ে ওয়াশিংটনের আচরণের কোনো উন্নতি হয়নি। বর্তমান বাইডেন প্রশাসন ভিয়েনা আলোচনার মাধ্যমে পরমাণু সমঝোতা পুনরুজ্জীবনের কথা বললেও তারা এখনো ইরানের ওপর সর্বোচ্চ চাপ সৃষ্টির ব্যর্থ নীতিতে অটল রয়েছে।

যাইহোক নতুন করে মার্কিন বিচার মন্ত্রণালয় ইরানের বিরুদ্ধে অপহরণ প্রচেষ্টার  যে অভিযোগ তুলেছে তা ইরানের ব্যাপারে বিভিন্ন ক্ষেত্রে মার্কিন ব্যর্থতাকে আড়াল করার চেষ্টা বলে পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন।#

পার্সটুডে/রেজওয়ান হোসেন/১৭