বৃহৎ শক্তিগুলোর প্রতিযোগিতা ও সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর হত্যালীলার কেন্দ্র সিরিয়া
https://parstoday.ir/bn/news/iran-i9574-বৃহৎ_শক্তিগুলোর_প্রতিযোগিতা_ও_সন্ত্রাসী_গোষ্ঠীর_হত্যালীলার_কেন্দ্র_সিরিয়া
ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোঃ জাওয়াদ জারিফ সিরিয়া বিষয়ে আন্তর্জাতিক বৈঠকে যোগ দেয়ার জন্য এখন ভিয়েনায় অবস্থান করছেন। সিরিয়ার বিভিন্ন শহরে যখন সন্ত্রাসীদের হামলা চলছে ঠিক সে সময় ভিয়েনায় সিরিয়া বিষয়ক বৈঠক শুরু হল।
(last modified 2025-10-12T12:48:31+00:00 )
মে ১৭, ২০১৬ ১৮:০৭ Asia/Dhaka

ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোঃ জাওয়াদ জারিফ সিরিয়া বিষয়ে আন্তর্জাতিক বৈঠকে যোগ দেয়ার জন্য এখন ভিয়েনায় অবস্থান করছেন। সিরিয়ার বিভিন্ন শহরে যখন সন্ত্রাসীদের হামলা চলছে ঠিক সে সময় ভিয়েনায় সিরিয়া বিষয়ক বৈঠক শুরু হল।

ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোঃ জাওয়াদ জারিফ সিরিয়া বিষয়ে আন্তর্জাতিক বৈঠকে যোগ দেয়ার জন্য এখন ভিয়েনায় অবস্থান করছেন। সিরিয়ার বিভিন্ন শহরে যখন সন্ত্রাসীদের হামলা চলছে ঠিক সে সময় ভিয়েনায় সিরিয়া বিষয়ক বৈঠক শুরু হল।

বিশ্লেষকরা বলছেন, সিরিয়ায় যুদ্ধবিরতি পুরোপুরি মেনে চলার এবং রাজনৈতিক সংলাপ অব্যাহত রাখার সুযোগ এনে দিয়েছে ভিয়েনা বৈঠক। যদিও এ যুদ্ধবিরতি বহুবার লঙ্ঘন করেছে বিদেশি মদদপুষ্ট সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলো। ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাওয়াদ জারিফ ভিয়েনায় পৌঁছেই সিরিয়া বিষয়ক জাতিসংঘের বিশেষ প্রতিনিধির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। ওই সাক্ষাতে তিনি সিরিয়া ও মধ্যপ্রাচ্যসহ বিশ্বের অন্যান্য স্থানে সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোর চাপিয়ে দেয়া হুমকির কথা উল্লেখ করে তাদের মোকাবেলার আহবান জানিয়েছেন। ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সন্ত্রাসীদের সমর্থক পাশ্চাত্যের কয়েকটি দেশ ও রাজতন্ত্র শাসিত আরব দেশগুলো সামরিক পন্থা চাপিয়ে দিলেও বাস্তবতা হচ্ছে সামরিক উপায়ে সিরিয়া সংকটের কোনো সমাধান সম্ভব নয়।

ইরান প্রথম থেকেই আলোচনার মাধ্যমে সিরিয়া সমস্যা সমাধানের প্রতি সমর্থন জানিয়ে আসছে। ভিয়েনায় বৈঠক এমন সময় শুরু হচ্ছে যখন রাজনৈতিক উপায়ে সিরিয়া সমস্যা সমাধানের বিষয়ে ওয়াশিংটন ও মস্কো প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। তবে সিরিয়া সমস্যা সমাধানে ভিয়েনা বৈঠক কতটুকু ভূমিকা রাখবে সেটাই বড় প্রশ্ন হয়ে দেখা দিয়েছে। কারণ যারা ভিয়েনা বৈঠকে যোগ দিয়েছে তাদের মধ্যে তীব্র মতবিরোধ থাকার কারণে শান্তিপূর্ণ উপায়ে সিরিয়া সমস্যা সমাধানের কোনো আলামত এখন পর্যন্ত পাওয়া যায়নি।

জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ সিরিয়া বিষয়ে এ পর্যন্ত অনেক প্রস্তাব পাশ করলেও দেশটির সমস্যা সমাধানে তা কোনো কাজে আসেনি। বিশ্লেষকরা বলছেন, মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি সিরিয়ায় যুদ্ধবিরতি প্রতিষ্ঠার জন্য রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভের সঙ্গে ৪০ বারের বেশি বৈঠক করেছেন। কিন্তু তারপরও যুদ্ধ থামেনি এবং হত্যা ও রক্তপাত চলছে।

সিরিয়া বর্তমানে বৃহৎ শক্তিগুলোর প্রতিযোগিতার কেন্দ্র এবং সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোর হত্যা ও ধ্বংসযজ্ঞের লীলাভূমিতে পরিণত হয়েছে যার পেছনে রয়েছে সৌদি আরব ও তুরস্কের সমর্থন। এ ছাড়া, সিরিয়ার জনগণের কাছে ত্রাণসাহায্য পাঠানোর জন্য আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টাও বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। অনেকের মতে, সিরিয়ার কথিত বিদ্রোহীরা বিরাজমান সমস্যা সমাধানের জন্য কিছু প্রস্তাব মেনে নেয়ার কথা জানিয়েছে কারণ বর্তমান সময়টা বিদ্রোহীদের অনুকূলে নয়।

সিরিয়া সংকট শুরুর পর পাঁচ বছর পেরিয়ে গেছে। এ দীর্ঘ সময়ে দেশটির জনগণ সন্ত্রাসীদের মোকাবেলায় ব্যাপক সাফল্যের পরিচয় দিয়েছে। সিরিয়ার সরকার, সেনাবাহিনী ও জনগণ যদি প্রতিরোধ গড়ে না তুলত তাহলে আজ রাজধানী দামেস্ক উগ্র তাকফিরি সন্ত্রাসী গোষ্ঠী দায়েশের হাতে চলে যেত। কিন্তু বর্তমানে দায়েশ সন্ত্রাসীরা এবং তাদের মদদদাতা সৌদি আরব ও তুরস্কের মতো দেশগুলো ব্যাপক কোণঠাসা হয়ে পড়েছে।

তবে এতটুকু যথেষ্ট নয়। কারণ সন্ত্রাসীদের দমনের জন্য সিরিয়া সরকারের অর্থ ও অস্ত্রের প্রয়োজন রয়েছে। যুদ্ধ দীর্ঘায়িত হলে একদিকে সিরিয়ার জনগণের ভোগান্তি যেমন বাড়বে তেমনি মধ্যপ্রাচ্যের নিরাপত্তাও হুমকির মুখে পড়বে। এ অবস্থায় সিরিয়া বিষয়ক আলোচনা যদি বন্ধ হয়ে যায় তাহলে দেশটিতে আরো ভয়াবহ বিপর্যয় সৃষ্টি হবে। এ কারণে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ভিয়েনায় পৌঁছেই বলেছেন, কেবল সংলাপের মাধ্যমেই সিরিয়া সমস্যার সমাধান হবে।#

পার্সটুডে/মোঃ রেজওয়ান হোসেন/১৭