রেডিও তেহরানের ৪০ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী:
একজন গুণমুগ্ধ নিয়মিত শ্রোতা ছিলেন নানাজি: হামিম মণ্ডল
সেই ছোটবেলা থেকেই আমাদের বাড়িতে রেডিও ছিল। তখন থেকেই আমার রেডিও শোনার অভ্যাস গড়ে ওঠে। আকাশবাণী কলকাতা, ঢাকা, খুলনা এইসব প্রচারতরঙ্গই কেবল শোনা হতো ঘুরে ফিরে। কিছু বছর পর বাড়িতে টিভি এলো।
কয়েকটির মধ্যে প্রিয় ধারাবাহিক হল 'শক্তিমান'। দেখতে দেখতে কখন যেন পঞ্চম শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হলাম। কিন্তু রেডিওতে শোনা 'ও পাগল মন মন রে মন কেন এতো কথা বলে...' গানটি এখনও মনের মধ্যে একটি আলাদা ভালোলাগা, অনুভূতি, আবেগ, মহাশূন্যে অন্তরে হারিয়ে যাওয়ার অনুভূতি জাগায়। গানটি শুনলে আমি যেন আর আমিতে থাকি না।
২০০৭ সালে মাধ্যমিক পরীক্ষা দিলাম। ছুটিতে নানার বাড়ি বেড়াতে গিয়েছে। ওখানেই প্রথম শুনি রেডিও তেহরান-এর অনুষ্ঠান। আমার নানা ইসমাইল মালিত্যা নিয়মিত 'রেডিও তেহরান' শুনতেন এবং শোনাতেন। একজন গুণমুগ্ধ শ্রোতা ছিলেন তিনি। সেই সঙ্গে আমিও শুনতে পেতাম। কথা, আলোচনা, বিশ্ব সংবাদ, কোরআন তেলওয়াত ইত্যাদি সব খুব ভালই লাগত। উচ্চমাধ্যমিকে বিজ্ঞান নিলাম। পড়াশোনার চাপে শোনা হয় না। তবে ঠিক সময়ে টিউন ঠিক কানে বাজতো। আমার নানা মুর্শিদাবাদের নওদা থানার পাটিকাবাড়ী গ্রাম পঞ্চায়েতের সেক্রেটারি ছিলেন। তখন অবসরপ্রাপ্ত। কষ্টের টিউনিং করে 'রেডিও তেহরান' তাঁর শোনা চায়-ই।
রেডিও তেহরানে চিঠিপত্র পাঠানোর ই-মেল আইডি এবং অনলাইনে শোনার ওয়েভসাইটের ঠিকানা জানানো হতো প্রতিদিন। নানা শুনে আমার কাছে সেই বিষয়গুলি জানতে চাইতেন। আজ তিনি নেই পৃথিবীতে। বেশ কিছু বছর হল ইন্তেকাল করেছে। আমার লেখা অনেক ই-মেল পড়া হয়েছে প্রিয়জনে। নানাজি তার কয়েকটি শুনে গেছেন। কিন্তু অনলাইলে রেডিও তেহরানের অনুষ্ঠান শোনা আর তাঁর হল না। তখনও স্মার্ট ফোন, 4G তথা অনলাইনে রেডিও তেহরান এতোটা সহজলভ্য হয় নি।
হামিম হোসেন মণ্ডল (বুলবুল),
গ্রাম ও ডাকঘর: ঝাউবনা,
থানা: নওদা, জেলা: মুর্শিদাবাদ,
রাজ্য: পশ্চিমবঙ্গ,ভারত
ডাকসূচক: ৭৪২১৭৫