'ইমাম মুসা কাজেম (আ.)'র জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে বিশেষ অনুষ্ঠানটি ছিল অনবদ্য'
(last modified Wed, 09 Aug 2023 12:40:04 GMT )
আগস্ট ০৯, ২০২৩ ১৮:৪০ Asia/Dhaka
  • 'ইমাম মুসা কাজেম (আ.)'র জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে বিশেষ অনুষ্ঠানটি ছিল অনবদ্য'

আসসালামু আলাইকুম, আশা ও প্রার্থনা করি মহান আল্লাহ'র অশেষ রহমতে রেডিও তেহরান পরিবারের সকলে ভালো ও সুস্থ আছেন। গত ৮ জুলাই ২০২৩, ইমাম মুসা কাজেম (আ.)'র পবিত্র জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে বিশেষ অনুষ্ঠানটি উপভোগ করলাম। 

গাজী আব্দুর রশিদ ও মুহাম্মদ আমির হোসেন-এর পরিবেশনায় এবং সুললিত ইসলামী মিউজিকের সুর-মূর্ছনায় একটি অনবদ্য ও জ্ঞানগর্ভ আলোচনা উপহার দেবার জন্যে রেডিও তেহরানকে জানাই আন্তরিক ধন্যবাদ।

মহানবীর (সা.) আহলে বাইতের সদস্য ইমাম মুসা কাজেম (আ.) জন্মগ্রহণ করেছিলেন ১২৭ বা ১২৮ হিজরির ২০ জিলহজ মক্কা ও মদীনার মধ্যবর্তী ‘আবওয়া’ এলাকায়। তাঁর মায়ের নাম ছিল হামিদা আল বারবারিয়্যাহ এবং পিতা বিশ্ববিশ্রুত মনীষী হযরত ইমাম জাফর আস সাদিকের (আ.)।

রাগ নিয়ন্ত্রণে অশেষ ধৈর্যের জন্যই এই মহান ইমামকে বল হতো কাজেম। তিনি ছিলেন পিতা ইমাম জাফর সাদিক (আ.)'র মতই নির্ভীক ও ন্যায়পরায়ণ এবং জুলুমের বিরুদ্ধে সোচ্চার এক ব্যক্তিত্ব। পিতার মহৎ গুণের প্রায় সবই তিনি অর্জন করেছিলেন। 

ইমাম মুসা কাজেম (আ.) তাঁর ৩৫ বছরের ইমামতের জীবনের প্রায় পুরোটাই কেটেছে কারাগারে ও নির্বাসনে। ইমাম মুসা কাযিম (আ.) আব্বাসীয় শাসকদের অন্যায় ও অত্যাচারের বিরুদ্ধে বরাবর রুখে দাঁড়িয়েছিলেন। ইসলামের সঠিক শিক্ষা প্রচার ও প্রসারে তিনি অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছিলেন।

পিতা ইমাম জাফর সাদিক (আ.) ইসলামের প্রকৃত শিক্ষা প্রচার ও প্রসারের যে বিশেষ ধারা চালু রেখেছিল তাকে বিকশিত করেছিলেন ইমাম মুসা কাযিম (আ.)। তাঁর ইসলামী জ্ঞান, প্রজ্ঞা, অধ্যবসায় ছিল অতুলনীয়। বিশেষ করে পবিত্র কুরআনের প্রকৃত তাফসির ও হাদীস বর্ণনা তাঁর মাধ্যমে আরও জোরদার হয়। ইমাম তাঁর অনুসারীদেরকে জ্ঞান অর্জনের জন্য অশেষ উৎসাহ দিতেন। তিনি বলতেন, জ্ঞান মৃত আত্মাকে জীবিত করে যেমনটি বৃষ্টি জীবিত করে মৃত ভূমিকে।

হযরত ইমাম মুসা কাজেম (আ.) বন্দী অবস্থার মধ্যেও বিচক্ষণতা, বীরত্ব এবং সংগ্রামী ও আপোষহীন মনোভাব তিনি ত্যাগ করেননি। ইমাম কাযিমের আধ্যাত্মিক খ্যাতি, জ্বালাময়ী বক্তব্য ও দৃঢ় মনোবল ছিল আব্বাসীয় শাসক হারুনের কাছে অসহনীয়। তাঁর অনুসারীদের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগের কথা হারুন গোয়েন্দা বাহিনীর মাধ্যমে জানতে পেরেছিল। হারুন বুঝতে পেরেছিল যে ইমাম যখনই উপযুক্ত সুযোগ পাবেন তখনই স্বয়ং বিপ্লব ঘটাবেন কিংবা তাঁর সঙ্গীদেরকে আন্দোলনের নির্দেশ দেবেন, ফলে তার হুকুমতের পতন হবে অনিবার্য। দুরাত্মা হারুন আপোষহীন ইমামকে বিষ প্রয়োগের মাধ্যমে ১৮৩ হিজরির ২৫ রজব শহীদ করেন।

ইমাম মুসা কাজেম (আ.)’র মহানুভবতা, প্রেমময় ইবাদত, নম্রতা, সহিষ্ণুতা জনগণকে আকর্ষিত করতো। ইমামের ঐশী জ্ঞান এবং দানশীলতা ছিল শত্রুদের কাছেও সুবিদিত। তাঁর প্রেমময় ইবাদত ছিল সাধকদের জন্য আদর্শ। এ মহান ইমাম এত সুন্দর ও সুললিত কণ্ঠে কুরআন তিলাওয়াত করতেন যে, যে কেউ তা শুনে কেঁদে ফেলত।

ইমাম মুসা কাজেম (আ.)'র শানে জানাই অশেষ দরুদ ও সালাম। বিশেষ বিশেষ দিনের এমন পরিবেশনা আরো শুনতে চাই আর নিজের জানার পরিধিকে সমৃদ্ধ করতে চাই।

প্রস্তাব: পর্যায়ক্রমে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলিহি ওয়া সাল্লাম এর পবিত্র বংশধর তথা আহলে বাইত এর বারো ইমাম সম্বন্ধে একটি ধারাবাহিক অনুষ্ঠান প্রচারের ব্যবস্থা করুন। এর মাধ্যমে আমরা বারো ইমাম সম্বন্ধে জানতে পারব।

 

শুভেচ্ছান্তে-

এস এম নাজিম উদ্দিন।
বারুইপাড়া, মুর্শিদাবাদ, পশ্চিম বঙ্গ, ভারত।

 

পার্সটুডে/আশরাফুর রহমান/৯

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন


ট্যাগ