'ইমাম হুসাইন (আ:)-এর শাহাদাতের চেহলাম বার্ষিকী পালন তাকওয়ার বহিঃপ্রকাশ'
https://parstoday.ir/bn/news/letter-i127918-'ইমাম_হুসাইন_(আ_)_এর_শাহাদাতের_চেহলাম_বার্ষিকী_পালন_তাকওয়ার_বহিঃপ্রকাশ'
আসসালামু আলাইকুম। রেডিও তেহরানের সকল কলাকুশলী কর্মকর্তা ও শ্রোতা বন্ধুদের জন্য রইল আমার হার্দিক শুভেচ্ছা ও শুভ কামনা। গত ৬/৯/২০২৩ তারিখে রেডিও তেহরানের বাংলা অনুষ্ঠানে শহীদ  সম্রাট  ইমাম হুসাইন (আ.)-এর শাহাদতের চেহলাম বার্ষিকী উপলক্ষে বিশেষ অনুষ্ঠান শুনলাম। অনুষ্ঠানটি ছিল অত্যন্ত হৃদয় বিদারক, যা শুনলে একজন মুমিন ব্যক্তির চোখ অশ্রু সজল না হয়ে পারে না।
(last modified 2025-09-26T18:07:30+00:00 )
সেপ্টেম্বর ০৯, ২০২৩ ২১:২২ Asia/Dhaka
  • 'ইমাম হুসাইন (আ:)-এর শাহাদাতের চেহলাম বার্ষিকী পালন তাকওয়ার বহিঃপ্রকাশ'

আসসালামু আলাইকুম। রেডিও তেহরানের সকল কলাকুশলী কর্মকর্তা ও শ্রোতা বন্ধুদের জন্য রইল আমার হার্দিক শুভেচ্ছা ও শুভ কামনা। গত ৬/৯/২০২৩ তারিখে রেডিও তেহরানের বাংলা অনুষ্ঠানে শহীদ  সম্রাট  ইমাম হুসাইন (আ.)-এর শাহাদতের চেহলাম বার্ষিকী উপলক্ষে বিশেষ অনুষ্ঠান শুনলাম। অনুষ্ঠানটি ছিল অত্যন্ত হৃদয় বিদারক, যা শুনলে একজন মুমিন ব্যক্তির চোখ অশ্রু সজল না হয়ে পারে না।

এই চেহলাম বার্ষিকী পালন করা প্রত্যেক মুসলমানদের জন্য যে জায়েজ তার প্রধান  দলিল হচ্ছে সূরা হজের ৩৬ নং আয়াত: যে ব্যক্তি  আল্লাহর (দ্বীনের) নিদর্শন সমুহের সম্মান প্রদর্শন করে তা হলে তা হবে তার তাকওয়ার নির্যাস। যেখানে  সাফা মারওয়া  পাহাড় এবং কোরবানির উটকে আল্লাহপাকের দ্বীনের নিদর্শনাদির অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, সেখানে নিঃসন্দেহে মহান নবী, ওয়ালী, নেক সালেহ সিদ্দিক  ও শহীদগণ যে হবেন আল্লাহ পাকের দ্বীনের সর্বশ্রেষ্ঠ নিদর্শন তা বলার আর অপেক্ষা রাখে না। তাই এ সব পূণ্যবানের সম্মান বা তাযীম প্রদর্শন হবে নিঃসন্দেহে অন্তঃকরণসমুহের তাকওয়ার বহিঃপ্রকাশ। তাদের প্রতি অসম্মান ও বেয়াদবি করলে অন্ততপক্ষে তাদের ব্যাপারে নির্বিকার, নিস্পৃহ ও উদাসীন থাকলে মনের তাকওয়া অর্জিত ও বিকশিত হবে না। শুধু তাই নয়, আল্লাহ পাকের দ্বীনের নিদর্শন স্বরূপ মহানবী ও ওয়ালীদের যারা অসম্মান ও অশ্রদ্ধা করবে তারা নিঃসন্দেহে মহান আল্লাহর গজব ও লানতের পাত্র হবে এবং আল্লাহ পাক তাদের প্রতি অসন্তুষ্ট হবেন তাতে কোনো সন্দেহ নাই।

বেহেশতের যুবকদের সর্দার ইমাম হুসাইন (আ.) সম্পর্কে মহানবী (সা.) বলেছেন  'হুসাইন আমা হতে আর আমি হুসাইন হতে'।

সেই হুসাইন (আ.) আল্লাহপাকের সর্বশ্রেষ্ঠ নিদর্শনাদির অন্তর্ভুক্ত যার সম্মান ও তাযীম  হবে অন্তরের তাকওয়া বিকশিত হওয়ার কারণ। আর এই তাযীমের স্বরূপ হচ্ছে তাঁদের সুখ ও আনন্দে সুখী  হওয়া ও আনন্দ প্রকাশ করা এবং তাঁরা মজলুম অবস্থায় শহীদ  হওয়ার জন্য শোক প্রকাশ ও আজাদারি করা।

'কাতলে হুসাইন আসলে মে মার্গে ইয়াজিদ হ্যায়, ইসলাম জিন্দা হোতা হ্যায় হার কারবালা কি বাদ' মওলানা  মুহাম্মদ আলী জওহরের এ পংক্তি থেকে  ফুটে উঠে  ইমাম হুসাইন (আ.)-এর শাহাদতের গুরুত্ব ও তাৎপর্য।

এই সুমহান হুসাইনি আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে যদি মুসলমানেরা নিজেদের আল্লাহর পথে জিহাদ ও শাহাদাতবরণ করে তখনই হবে ইসলামের পুনর্জাগরণ এবং  যুগের ইয়াজিদ, শিমার ও ইবনে জিয়াদদের পতন ও মূলোৎপাটন।

যার জ্বলন্ত প্রমাণ ইমাম খোমেনি (র.) এ হুসাইনি আদর্শের পূর্ণ শিক্ষা নিয়ে ও অনুপ্রাণিত হয়ে ইরানি জাতিকে জাগ্রত করে যুগের ইয়াজিদ শিমার চক্র মার্কিন  সাম্রাজ্যবাদের পদলেহী পাহলভী রাজতন্ত্রের পতন ঘটিয়ে পৃথিবীর বুকে প্রথম  ইসলামি প্রজাতন্ত্র  সরকার ও প্রশাসন প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তাই ইরানের  এই বিপ্লবকে অনেকেই  'চেহলাম  ও আরবাইনের বিপ্লব' বলে আখ্যায়িত করে থাকেন।

অপরদিকে ইঙ্গ-মার্কিন প্রতিক্রিয়াশীল জাহেলী আরবশাহী ও স্বৈরাচারী চক্রের  প্রত্যক্ষ  মদদ ও সমর্থন পুষ্ট ইরাকের বামপন্থী নেতা সাদ্দাম হোসেন ইরানের উপর  যে রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ চাপিয়ে দিয়েছিল হুসাইনি আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে ইসলামি বিপ্লব শত্রুর হাত থেকে মাতৃভূমি রক্ষায় ঝাঁপিয়ে পড়ে এবং ইমাম হুসাইন (আ.)''র জিহাদ, শাহাদত  ও আত্মত্যাগের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে মুমিন মুজাহিদদের বিজয় সূচিত হয়। হুসাইনি  আদর্শকে গ্রহণ  ও বরণ করে হিজবুল্লাহ আন্দোলন আরবদের কাছে অপরাজেয়  বলে পরিচিত ইসরাইলকে তিন তিন বার পর্যদুস্ত করে লেবানন  থেকে তাড়িয়ে  দিতে  সক্ষম  হয়েছে।

পাশাপাশি ইরানের ইসলামি বিপ্লব ও হিজবুল্লাহর জিহাদি আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ যোদ্ধারা ইসরায়েলকে যুদ্ধে তিন তিনবার পর্যদুস্ত  করেছে।

বর্তমানে মধ্যপ্রাচ্যসহ বিশ্বের বহু দেশ যখন যুদ্ধ ও সন্ত্রাসবাদে ক্ষত-বিক্ষত তখন  ইসলামি প্রজাতন্ত্র  ইরান  হুসাইনি  আদর্শের সুশীতল  ছায়াতলে  আশ্রয়  নেওয়ার কারু সন্ত্রাস বাদের কবল ও এর বিষাক্ত ছোবল থেকে সম্পূর্ণ নিরাপদ  যা সত্যিই  বিস্ময়কর। তাই  ইসলামি বিপ্লবের রুপকার ইমাম খোমেনি ঠিকই বলেছিলেন যে. এই মহররম  ও সফরই ইসলামকে জীবিত ও প্রাণবন্ত রেখেছে। আর যে পর্যন্ত ইরানে এ হুসাইনি আদর্শের সত্যিকার ও খাঁটি অনুসরণ অব্যাহত  থাকবে  সে পর্যন্ত  এর বরকত, ফায়দা  ও কল্যাণ সে দেশে অব্যাহত থাকবে।

রেডিও তেহরান এ রকম মূল্যবান অনুষ্ঠান আরও বেশি বেশি প্রচার করে শ্রোতাদের হৃদয়কে আরও বিকশিত করে তুলুক এবং আল্লাহপাক আমাদেরকে হুসাইনি আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে চলার তৌফিক দান করুন। আমিন।

 

শুভেচ্ছান্তে,

 

নিজামুদ্দিন শেখ

সভাপতি, ফেমিলি রেডিও লিসনার্স ক্লাব

গ্রাম: নওপাড়া, পোস্ট: নওপাড়া শিমুলিয়া

জেলা: মুর্শিদাবাদ, পশ্চিম বঙ্গ, ভারত।

 

পার্সটুডে/আশরাফুর রহমান/৯