কারবালার ঘাতকদের বিরুদ্ধে মুখতারের অভ্যুত্থান শুরুর বার্ষিকী
https://parstoday.ir/bn/news/uncategorised-i30892-কারবালার_ঘাতকদের_বিরুদ্ধে_মুখতারের_অভ্যুত্থান_শুরুর_বার্ষিকী
আজ হতে ১৩৭২ বছর আগে ৬৬ হিজরির এই দিনে (১৪ রবিউসসানি) কারবালার মজলুম শহীদদের মহান আত্মত্যাগের ঘটনার প্রায় চার বছর পর মুখতার ইবনে আবি ওবায়দা সাকাফি ইমাম হুসাইন (আ.)সহ নবী-পরিবারের সদস্যদের শাহাদতের প্রতিশোধ নেয়ার জন্য  সশস্ত্র গণ-আন্দোলন শুরু করেন।
(last modified 2025-09-29T12:37:45+00:00 )
জানুয়ারি ১৪, ২০১৭ ০২:৪৫ Asia/Dhaka
  •  কারবালার ঘাতকদের বিরুদ্ধে মুখতারের অভ্যুত্থান শুরুর বার্ষিকী

আজ হতে ১৩৭২ বছর আগে ৬৬ হিজরির এই দিনে (১৪ রবিউসসানি) কারবালার মজলুম শহীদদের মহান আত্মত্যাগের ঘটনার প্রায় চার বছর পর মুখতার ইবনে আবি ওবায়দা সাকাফি ইমাম হুসাইন (আ.)সহ নবী-পরিবারের সদস্যদের শাহাদতের প্রতিশোধ নেয়ার জন্য  সশস্ত্র গণ-আন্দোলন শুরু করেন।

মুখতারের সহায়তায় এগিয়ে আসেন ইরাক ও ইরানের বিপুল সংখ্যক ধর্মপ্রাণ এবং বিপ্লবী মুসলমান। তারা মুখতারের নেতৃত্বে কুফা দখল করেন এবং ইরাক ও ইরানের বিস্তীর্ণ অঞ্চলও তাদের দখলে আসে। এ সময় হিজাজ ও মক্কা ছিল আবদুল্লাহ ইবনে যুবাইরের দখলে এবং তার বাহিনীর সঙ্গে উমাইয়াদের যুদ্ধ চলছিল ইসলামী জাহানের কর্তৃত্ব নিয়ে।

 তৃতীয় শক্তি মুখতার উমাইয়াদের হামলা প্রতিহত করেন এবং রণ-নিপুণ বীর যোদ্ধা ইব্রাহিম ইবনে মালিক আশতারের সহায়তা নিয়ে কারবালার প্রধান ঘাতকদের হত্যা করতে সক্ষম হন।  কুফায় নিযুক্ত ইয়াজিদের কুখ্যাত গভর্নর ওবায়দুল্লাহ ইবনে জিয়াদ এবং হাসিন ইবনে নুমাইরসহ কারবালার প্রধান নরপিশাচদেরকে তাদের মহাপাপের শাস্তি হিসেবে হত্যা করা হয়। মুখতারের ন্যায়বিচারবোধ ছিল এতটা শানিত যে তিনি কারবালার গণহত্যার অন্যতম প্রধান আসামী তথা নিজের ভগ্নীপতি ওমর ইবনে সা’দকেও মৃত্যুদণ্ড থেকে রেহাই দেননি।

 ওমর ইবনে সাদ ছিল কারবালায় ইমাম হুসাইন (আ.) ও তাঁর অবরুদ্ধ পরিবারের বিরুদ্ধে কাপুরুষোচিত যুদ্ধ ও সন্ত্রাসী হামলায় অংশগ্রহণকারী ত্রিশ হাজার ইয়াজিদী সেনার প্রধান কমান্ডার। মহাপাপী শিমার, খুউলি ও হারমালার মত ঘাতকদেরও হত্যা করেন বিপ্লবী নেতা মুখতার এবং তাঁর বাহিনী। মুখতার নিজে ইমাম হুসাইন (আ.)’র ছয় মাসের শিশু আলী আসগর (রা.)-কে হত্যাকারী নরপিশাচ হারমালাকে হত্যা করেন এক বীরত্বপূর্ণ অভিযানে।

কুফায় মুখতারের শাসন টিকে ছিল দেড় বছর। কুফাবাসীদের প্রতারণামূলক চরিত্র ও অসহযোগিতার শিকার হয়ে মহান বীর মুখতারও শাহাদত বরণ করেন মুসাব ইবনে যুবাইরের বাহিনীর সঙ্গে  ভাগ্য-নির্ধারণী এক অতি অসম লড়াইয়ে। হিজাজ থেকে আসা যুবাইরের বাহিনীর সঙ্গে লড়াই না করার জন্য মুখতারের অন্যতম প্রধান সেনাপতির কাপুরুষোচিত সিদ্ধান্ত এবং সিরিয়ার দিকে অভিযান চালানোর পক্ষপাতী ইব্রাহিম ইবনে মালিক আশতারের অনুপস্থিতি- এ দুটি বিষয় কাল হয়ে দাড়ায় মুখতার বাহিনীর জন্য। ফলে মুখতারের হাজার হাজার সেনা নিস্ক্রিয়ভাবে বসে থাকে এবং মুখতার ও তাঁর অনুগত মাত্র ১০/১২ জন সেনা যুদ্ধে অংশ নেন হাজার হাজার শত্রু  সেনার মোকাবেলায়।

 মুখতারের প্রধান সেনাপতি ভেবেছিল হিজাজের বাহিনীর সঙ্গে যুদ্ধ না করায় তাদের প্রাণ ভিক্ষা দেবে যুবাইর। কিন্তু বিনা যুদ্ধে আত্মসমর্পণকারী মুখতারের ওই বিশ্বাসঘাতক সেনাপতিসহ প্রায় সাত হাজার সেনার সবাইকে জবাই করা হয়েছিল মুসাব ইবনে যুবাইরের নির্দেশে। যুবাইরের (আবদুল্লাহ ইবনে যুবাইরের ভাই) এ নির্মম আচরণ প্রভাব ফেলেছিল তার বাহিনীর মধ্যেও। উমাইয়াদের নেতৃত্বাধীন সিরিয়ার বাহিনীর সঙ্গে লড়াইয়ের সময় যুবাইরের বাহিনীর কয়েকজন সেনা কর্মকর্তা যুবাইরকে পরিত্যাগ করে। ফলে মুখতারের হত্যাকারী মুসাব ইবনে যুবাইরও নির্মমভাবে নিহত হয়েছিল।

 যুবাইর বাহিনী আহত বীর মুখতারকে হত্যা করেছিল কুফার মসজিদের মিম্বরের পাশে যেখানে ইমামতি করতেন ও খুতবা দিতেন আমীরুল মু’মিনিন হযরত আলী (আ.)। মুখতার নিজেই  শহীদ হওয়ার জন্য এই পবিত্র স্থানটি বেছে নিয়েছিলেন।  

কুফার সেই ঐতিহাসিক গ্র্যান্ড মসজিদে ইমাম হুসাইন (আ.)’র চাচাতো ভাই মুসলিম ইবনে আকিল (রা.)’র মাজারের পাশেই রয়েছে শহীদ মুখতারের মাজার। #

পার্সটুডে/মু.আ.হুসাইন/১৫