সৌদি আমন্ত্রণে ইয়েমেনের প্রতিনিধি দল যাচ্ছে রিয়াদে: এবারের সংলাপ খুবই গুরুত্বপূর্ণ
https://parstoday.ir/bn/news/west_asia-i128152-সৌদি_আমন্ত্রণে_ইয়েমেনের_প্রতিনিধি_দল_যাচ্ছে_রিয়াদে_এবারের_সংলাপ_খুবই_গুরুত্বপূর্ণ
সৌদি আরবের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ঘোষণা করেছে, তারা ২০২১ সালের মার্চের সমঝোতার ভিত্তিতে বৈঠক ও আলোচনা সম্পন্ন করার জন্য ইয়েমেনের একটি প্রতিনিধি দলকে রিয়াদ সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছে।
(last modified 2025-07-29T12:16:04+00:00 )
সেপ্টেম্বর ১৬, ২০২৩ ১৫:৪১ Asia/Dhaka
  • সৌদি আরবের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়
    সৌদি আরবের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়

সৌদি আরবের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ঘোষণা করেছে, তারা ২০২১ সালের মার্চের সমঝোতার ভিত্তিতে বৈঠক ও আলোচনা সম্পন্ন করার জন্য ইয়েমেনের একটি প্রতিনিধি দলকে রিয়াদ সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছে।

২০১৫ সালের ২৬ মার্চ ইয়েমেনের বিরুদ্ধে সৌদি আরব যুদ্ধ শুরু করেছিল। এখন পর্যন্ত অসম এই যুদ্ধে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে এক লাখের বেশি মানুষ নিহত হলেও যুদ্ধ সমাপ্তির ঘোষণা আসেনি কিন্তু যুদ্ধের নবম বছরে এসে সংঘাতের  মাত্রা অনেক কমে গেছে। এর আগে যুদ্ধের অষ্টম বছরে হুথি আনসারুল্লাহ সমর্থিত সানা সরকার এবং সৌদি আরবের মধ্যকার আলোচনা ওমানের রাজধানী মাস্কাটে অনুষ্ঠিত হয়েছিল। কিন্তু ২০২৩ সালের মার্চ থেকে আলোচনার গতি বহুগুণে  বেড়ে যায়। বিশেষ করে চলতি বছর মার্চ মাসে ইরান ও সৌদি আরবের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার পর ইয়েমেনের হুথি সরকারের সাথে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক স্বাভাবিক করা এবং আলোচনার  ব্যাপারে রিয়াদ ব্যাপক আগ্রহী হয়ে ওঠে।

রিয়াদ এর আগে সানার সাথে সরাসরি আলোচনায় বসতে অস্বীকার করলেও ওমানের মধ্যস্থতায় সরাসরি আলোচনার জন্য প্রথমবারের মতো সানায় একটি প্রতিনিধি দল পাঠায় সৌদি সরকার। ওমানের অংশগ্রহণে ইয়েমেনে সৌদি রাষ্ট্রদূত মুহাম্মদ আল-জাবেরের নেতৃত্বে সৌদি প্রতিনিধিদল চলতি বছর ৮ থেকে ১৩ এপ্রিল পর্যন্ত সানায় আনসারুল্লাহ সমর্থিত ইয়েমেন সরকারের সাথে আলোচনা করেছে। এইসব আলোচনার মূল লক্ষ্য ছিল ইয়েমেনে একটি স্থায়ী ও ব্যাপক যুদ্ধবিরতি কার্যকর করা এবং ইয়েমেনের সকল পক্ষের কাছে গ্রহণযোগ্য একটি রাজনৈতিক সমাধান বের করে আনা। কিন্তু এখনো এ লক্ষ্য অর্জিত হয়নি। হয়তো সে কারণে সৌদি আরবের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সানা সরকারকে সৌদি আরবে আলোচনা চালিয়ে যেতে প্রতিনিধি দল পাঠাতে ইয়েমেন সরকারকে আমন্ত্রণ জানিয়েছে।

যাহোক, সানা প্রতিনিধি দলের এবারের সৌদি আরব সফরকে রিয়াদ-সানা আলোচনার তৃতীয় পর্যায় বলা যেতে পারে। আগের দুটি পর্বের আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়েছিল মাসকাট ও সানায়। রিয়াদে এবারের আলোচনায় ওমানের প্রতিনিধি দলও উপস্থিত থাকবে যা থেকে বোঝা যায় ইয়েমেন সংকটে ওমানের মধ্যস্থতা অব্যাহত থাকবে। তাই ধারণা করা হচ্ছে সৌদি আরবে এবারের বৈঠকটি এর আগে মাস্কাট ও সানায় অনুষ্ঠিত আলোচনার মতোই ইতিবাচক গতিতে এগিয়ে যাবে। ইয়েমেনের ন্যাশনাল স্যালভেশন সরকারের আলোচনাকারী দলের প্রধান মোহাম্মদ আব্দুস সালাম সানা ছেড়ে রিয়াদে যাওয়ার আগে বলেছেন,  এরআগে মাস্কাট ও সানায় অনুষ্ঠিত বৈঠকের ধারাবাহিকতা বজায় রেখে রিয়াদে আলোচনা হবে।

পর্যবেক্ষকরা বলছেন, আনসারুল্লাহ সমর্থিত ইয়েমেন সরকারকে রিয়াদ সফরের জন্য সৌদি সরকারের আমন্ত্রণ ইয়েমেন সংকট সমাধানে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি। প্রথম অগ্রগতি লক্ষ্য করা গিয়েছিল গত এপ্রিলে সৌদি প্রতিনিধিদলের সানা সফরের মাধ্যমে। তাই এখন সানা প্রতিনিধিদলের সৌদি আরব সফর সবাইকে কাছাকাছি আনার এবং যুদ্ধ অবসানের জন্য একটি চুক্তিতে পৌঁছানোর জন্য ভালো ইঙ্গিত বলে মনে করা হচ্ছে। তবে ধারণা করা হচ্ছে আলোচনা দীর্ঘায়িত হওয়ার কারণ হলে ইয়েমেনে নতুন রাজনৈতিক কাঠামো গঠন এবং ইয়েমেনি গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে ক্ষমতা বণ্টন নিয়ে বিরাজমান মতপার্থক্য। যাহোক, শেষ পর্যন্ত আলোচনায় কি ফলাফল বেরিয়ে আসে সেটাই এখন দেখার বিষয়।

পার্সটুডে/রেজওয়ান হোসেন/১৬

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।