গাজা পরিস্থিতি মুসলিম সরকার ও জাতিগুলোর মধ্যে ঐক্যের সুযোগ এনে দিয়ছে
ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে দখলদার ইসরাইলের বর্বর আগ্রাসনের অন্যতম একটি পরিণতি হচ্ছে, ফিলিস্তিনের সমর্থনে মুসলিম জাতি ও সরকারগুলোর মধ্যে ঐক্য গড়ে উঠছে।
ফিলিস্তিনিদের, বিশেষ করে গাজা উপত্যকার জনগণের বিরুদ্ধে ইহুদিবাদী শাসকগোষ্ঠীর হত্যাযজ্ঞ শুরু হওয়ার পর দুই সপ্তাহ অতিবাহিত হয়েছে। গাজার বিরুদ্ধে এই আগ্রাসনে এখন পর্যন্ত ৩,৮০০-এরও বেশি ফিলিস্তিনি শহীদ এবং প্রায় ১২,০০০ মানুষ আহত হয়েছে। গাজা উপত্যকায় আল আহলি আরব হাসপাতালে হামলায় প্রায় ৫০০ ফিলিস্তিনি শহীদ হয়েছেন, যা প্রকাশ্য যুদ্ধাপরাধ। এখন পর্যন্ত এইসব অপরাধযজ্ঞের বিভিন্ন পরিণতি লক্ষ্য করা গেছে, তবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পরিণতিগুলোর মধ্যে একটি হল ফিলিস্তিনের সমর্থনে এবং ইসরাইলের নিন্দায় মুসলিম জাতি ও সরকারগুলোর মধ্যে ঐকমত্য গঠন।
মুসলিম দেশগুলোর জনগণ ফিলিস্তিনের পতাকা হাতে গাজার জনগণের প্রতি তাদের সমর্থন ঘোষণা করেছে। জর্ডান, ইরাক ও লেবাননসহ আরো কিছু মুসলিম দেশের জনগণ ইসরাইলি দূতাবাসে হামলা চালিয়েছে অথবা আমেরিকান দূতাবাসের সামনে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছ। তারা ইসরাইলি নৃশংসতায় আমেরিকার অংশগ্রহনের নিন্দা করেছে। জর্ডানের রাজধানী আম্মানে ইসরাইলি দূতাবাসে হামলার ঘটনা ঘটেছে। অনেক প্রভাবশালী মুসলিম দেশ সরকারি পর্যায়ে ইসরাইলি অপরাধযজ্ঞের প্রতিক্রিয়ায় সৌদি আরবের জেদ্দায় ইসলামি সহযোগিতা সংস্থা ওআইসির জরুরি বৈঠক ডেকেছে। এই বৈঠকের বিবৃতিতে, বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের উপর জোর দেওয়া হয়েছে। যেমন, গাজা এবং পশ্চিম তীরের বাসিন্দাদের বিরুদ্ধে ইসরাইলি হামলা অবিলম্বে বন্ধ করা এবং গাজায় মানবিক সাহায্য পাঠানোর কথা বলা হয়েছে।
ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমিরাবদুল্লাহিয়ান বলেছেন, গাজার হাসপাতালে ইসলামি জিহাদ আন্দোলন হামলা চালিয়েছে বলে আমেরিকা ও ইসরাইল যে দাবি করেছে জেদ্দা বৈঠকে উপস্থিত প্রতিনিধিরা তা প্রত্যাখ্যান করে একে হাস্যকর দাবি করে উল্লেখ করেছেন। এই প্রতিক্রিয়াগুলো থেকে বোঝা যায়, ফিলিস্তিন ইস্যুটি মুসলিম সরকার ও জাতিগুলোর জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
হামাস 'আল-আকসা তুফান' শুরু করার আগে ইসরাইলের সাথে আরব দেশগুলোর সম্পর্ক স্বাভাবিক করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল। কিন্তু হামাসের এ সাহসী পদক্ষেপের কারণে শুধু যে ওই প্রক্রিয়া থেমে গেছে তাই নয় একই সাথে ফিলিস্তিন ইস্যুতে সব দেশ আবারো ঐক্যবদ্ধ হতে শুরু করেছে এবং সবার কাছেই ফিলিস্তিন এখন মুসলমানদের মূল সংকট হিসাবে বিবেচিত হচ্ছে।
পর্যবেক্ষকরা বলছেন, এ মুহূর্তে মুসলিম দেশগুলোর উচিত ইসরাইলের সঙ্গে প্রকাশ্যে কিংবা গোপনে সব সম্পর্ক ছিন্ন করে দখলদার এ শক্তির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা। #
পার্সটুডে/রেজওয়ান হোসেন/২০
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।