ইয়েমেনি নেতা: পশু অধিকার রক্ষার দাবিদার পশ্চিমারা ফিলিস্তিনের ব্যাপারে নীরব
(last modified Sat, 25 May 2024 13:23:06 GMT )
মে ২৫, ২০২৪ ১৯:২৩ Asia/Dhaka
  • ইয়েমেনি নেতা: পশু অধিকার রক্ষার দাবিদার পশ্চিমারা ফিলিস্তিনের ব্যাপারে নীরব
    ইয়েমেনি নেতা: পশু অধিকার রক্ষার দাবিদার পশ্চিমারা ফিলিস্তিনের ব্যাপারে নীরব

ইয়েমেনের প্রতিরোধ সংগঠন আনসারুল্লাহ আন্দোলনের নেতা সাইয়্যেদ আব্দুল মালেক বদর উদ্দিন আল-হুথি তার সাম্প্রতিক বক্তৃতায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থনে গাজায় ইসরাইলি যুদ্ধাপরাধের কথা উল্লেখ করে মার্কিন অদ্ভুত দাবির তীব্র সমালোচনা করেছেন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন দাবি করেছেন, 'গাজায় ইসরাইলের কর্মকাণ্ড কোনো গণহত্যা নয়'।

ইয়েমেনের আনসারুল্লাহর নেতা বলেছেন: রাস্তায় ও নিজেদের ঘরবাড়িতে ফিলিস্তিনিদের হত্যা করা, তাদের সমাবেশকে বোমা হামলার লক্ষ্যবস্তু করা এবং শত শত মানুষকে অনাহারে রাখা বাইডেনের দৃষ্টিতে গণহত্যা নয়। স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা ব্যবস্থাকে ধ্বংস করা এবং ওষুধ প্রবেশে বাধা দেওয়া, ডাক্তার ও রোগীদের হত্যা করা, তাদের অনেককে জীবিত কবর দেওয়া এবং প্রতিবন্ধীদেরকে পিশে মারা প্রভৃতি বাইডেনের দৃষ্টিতে গণহত্যা নয়। এ ছাড়া, শত শত মানুষকে বাস্তুচ্যুত করা, আশ্রয়কেন্দ্রে তাদের তাড়া করা, হত্যা করা এবং রুটির দোকানগুলো ও পানির কূপগুলোকে ধ্বংস করা বাইডেনের মতে কোনও অপরাধ নয়।

সাইয়্যেদ আব্দুল মালেক বদর উদ্দিন আল-হুথি আরো বলেছেন,

এতে অবাক হওয়ার কিছু নেই যে, জো বাইডেন গাজায় যা ঘটছে তা গণহত্যা বলে মনে করেন না, কারণ ওয়াশিংটন ইসরাইলি অপরাধযজ্ঞের মূল হোতা এবং এ ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের কলঙ্কজনক বহু ইতিহাস রয়েছে।

তিনি গাজা উপত্যকার মানুষের জন্য মানবিক সহায়তা পাঠানোর দাবি করে সেখানে একটি অস্থায়ী সমুদ্রবন্দর তৈরিতে মার্কিন পদক্ষেপ সম্পর্কে বলেছেন, এটি আসলে আমেরিকার একটি সামরিক ঘাঁটি হবে। তারা ইসরাইলের জন্য যে সামরিক সরঞ্জাম পাঠাচ্ছে তা তাদের জন্য কেলেঙ্কারি হয়ে থাকবে।

সাইয়্যেদ আব্দুল মালেক বদর উদ্দিন আল-হুথি আরো বলেছেন,

যুক্তরাষ্ট্র গাজা উপত্যকাকে এমন একটি উন্মুক্ত বৃহৎ কারাগারে পরিণত করতে চায় যেখানে একটি সমুদ্র বন্দর থাকবে যাতে মার্কিন সেনাবাহিনী ওই এলাকর ওপর নজরদারী করতে পারে।  

বদর উদ্দিন আল-হুথি ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকে স্বীকৃতি দেওয়ার ক্ষেত্রে আয়ারল্যান্ড, নরওয়ে ও স্পেনের পদক্ষেপের  কথা উল্লেখ করে আরও বলেছেন, ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়ার বিষয়ে এই তিনটি ইউরোপীয় দেশের ঘোষণা যদিও অসম্পূর্ণ এবং পর্যাপ্ত নয় তবুও রাজনৈতিক দিক থেকে এ ঘোষণা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

তিনি বলেন,

পাশ্চাত্য, যারা বিড়ালসহ অন্যান্য প্রাণীর অধিকার রক্ষার কথা বলে, তারাই ইসরাইলের গণহত্যার শরীকে পরিণত হয়েছে যা মানবতার জন্য চরম অবমাননা।

আনসারুল্লাহ নেতা বদর উদ্দিন আল-হুথি আরো বলেছেন, 'আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত আইসিজের প্রধান বিচারক প্রসিকিউটর জেনারেলের বিবৃতিতে যেভাবে জুলুমকারী ও মজলুমকে সমানভাবে দেখানো হয়েছে তা খুবই অন্যায্য।

তিনি প্রশ্ন করেন, 'আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত আইসিজের প্রধান কীভাবে বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর মতো খুনি, অপরাধীকে ফিলিস্তিনি নেতাদের সমান দেখেন? তিনি আরো প্রশ্ন করেন, যারা অত্যাচারী এবং যারা নিজেদের অধিকার রক্ষায় যুদ্ধ করছে তারা কি সমান?

তিনি ইরানের প্রেসিডেন্টের শাহাদাতের ঘটনায় ইয়েমেন সরকারের সহানুভূতির কথা জানিয়ে বলেছেন,  

জনাব রায়িসি অন্যান্য রাজনৈতিক নেতাদের থেকে আলাদা ছিলেন। জনাব রায়িসি তার দায়িত্ব পালনে এবং জনগণের সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রাখার ক্ষেত্রে একজন রোল মডেল ছিলেন, যা ছিল অন্য নেতাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা। রায়িসির বিদায়ী সমাবেশে যোগদানের জন্য ইরানে লাখ লাখ মানুষের উপস্থিতি থেকে তার ব্যাপক জনপ্রিয়াতার প্রমাণ পাওয়া যায় যা কিনা বিশ্বের অনেক নেতার ক্ষেত্রে দেখা যায় না।

ইয়েমেনের আনসারুল্লাহ আন্দোলনের নেতা আরও বলেছেন, বিশ্ব অঙ্গনে ইসরাইল ক্রমেই কোণঠাসা হয়ে পড়ছে এবং ইসরাইলের অপরাধযজ্ঞের ব্যাপারে নীরবতা কিছু দেশের নীরবতা মানবতার জন্য চরম অপমান।

হুথি নেতা তার বক্তৃতার শেষাংশে গাজার সমর্থনে ইসরাইলি জাহাজের বিরুদ্ধে ইয়েমেনি সশস্ত্র বাহিনীর সামরিক অভিযান অব্যাহত থাকার কথা উল্লেখ করে বলেন: "এই সপ্তাহে আরব সাগর, এডেন উপসাগর এবং ভারত মহাসাগরে আমরা ১৫টি ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন দিয়ে আটটি অভিযান পরিচালনা করেছি।"

তিনি আরো বলেছেন, আমাদের একটি সামরিক অভিযান এই সপ্তাহে ভূমধ্যসাগরের দিকেও পরিচালিত হয়েছিল। ইসরাইলি, আমেরিকান এবং ব্রিটিশ জাহাজ টার্গেট করা হয়েছিল।

আনসারুল্লাহর নেতা বলেন, এই সপ্তাহে, মাআরিব এবং আল-বায়দা প্রদেশের আকাশসীমায় ২টি আমেরিকান এমকে-নাইন ড্রোন গুলি করে ভূপাতিত করা হয়েছে। #

পার্সটুডে/রেজওয়ান হোসেন/২৫

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।