আরব দেশগুলোর মধ্যে অস্ত্র প্রতিযোগিতা
সামরিক প্রতিযোগিতা থেকে শুরু করে অভ্যন্তরীণ উৎপাদন প্রচেষ্টা পর্যন্ত
-
আরব দেশগুলোতে অস্ত্র প্রতিযোগিতা বৃদ্ধি
পার্সটুডে-আন্তর্জাতিক নয়া প্রতিবেদন অনুযায়ী পশ্চিম এশীয়ায় আঞ্চলিক উত্তেজনা বৃদ্ধি এবং অব্যাহত সংঘাতের ঘটনায়, আরব দেশগুলো একটি ব্যয়বহুল অস্ত্র প্রতিযোগিতায় প্রবেশ করেছে।
সর্বশেষ আন্তর্জাতিক প্রতিবেদন অনুসারে, পশ্চিম এশীয় অঞ্চলের আরব দেশগুলো কেবল যে তাদের সামরিক বাজেট উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি করে প্রধান অস্ত্র আমদানিকারকদের তালিকায় যোগদান করেছে তাই নয় বরং সামরিক সরঞ্জাম উৎপাদনের দিকেও দুর্দান্ত পদক্ষেপ নিয়েছে।
বার্তা সংস্থা ইরনা'র বরাত দিয়ে পার্সটুডে আরও জানায়, স্টকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউট (SIPRI) এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আরব দেশগুলো অস্ত্র আমদানির বৈশ্বিক তালিকায় শীর্ষ স্থানে রয়েছে। চারটি দেশ, সৌদি আরব, আলজেরিয়া, কুয়েত এবং ইরাক, ২০২৪ সালে সর্বোচ্চ সামরিক ব্যয় বহনকারী শীর্ষ ৪০টি দেশের মধ্যে রয়েছে। ৮০.৩ বিলিয়ন ডলার ব্যয় করে সৌদি আরব, আরব বিশ্বে প্রথম এবং বিশ্বব্যাপী সপ্তম স্থানে রয়েছে।
এই অস্ত্র প্রতিযোগিতা কেবল বহিরাগত হুমকির প্রতিক্রিয়া নয়। সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াই বিশেষ করে আরব দেশগুলোতে ব্যাপক বিক্ষোভের ঘটনার পর অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা নিশ্চিত করার মতো বিষয়গুলো সামনে এসেেছি। কাজেই এই দেশগুলোর প্রতিরক্ষা সক্ষমতা বৃদ্ধির মতো গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নে তারা সামরিক ব্যয়বৃদ্ধিন প্রেরণা।
এদিকে, আঞ্চলিক দেশগুলোর দৃষ্টিভঙ্গি ক্রমশ স্থানীয়করণসহ সামরিক সরঞ্জামের অভ্যন্তরীণ উৎপাদনের দিকে উন্নীত হতে যাচ্ছে। সংযুক্ত আরব আমিরাত ২৫টিরও বেশি কোম্পানিকে একীভূত করে সামরিক হোল্ডিং "EDGE" প্রতিষ্ঠা করে সাফল্য অর্জন করেছে এবং সামরিক রপ্তানি থেকে কোম্পানির আয় ২.১ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে।
সৌদিআরব, উচ্চাভিলাষী পরিকল্পনা বাস্তবায়নের মাধ্যমে, ২০২৩ সালের শেষ নাগাদ তার সামরিক শিল্পের স্থানীয়করণের হার ১৯.৪% শতাংশে উন্নীত করেছে। সেইসঙ্গে বিভিন্ন দেশের সাথে কৌশলগত অংশীদারিত্বের মাধ্যমেও অস্ত্র উৎপাদন ও এসেম্বলিংয়ের দিকে ঝুঁকেছে।
আলজেরিয়া, হালকা অস্ত্র থেকে যুদ্ধজাহাজ পর্যন্ত বিভিন্ন ধরণের সরঞ্জাম উৎপাদন করে একটি বিস্তৃত শিল্প ঘাঁটি স্থাপন করেছে। মিশর হালকা অস্ত্র উৎপাদন করা থেকে শুরু করে ছোট রণতরী তৈরি করে এবং মরক্কো বিদ্যমান শিল্প সক্ষমতা ব্যবহার করে যেভাবে সামরিক শিল্পে অগ্রগতি অর্জন করেছে তা ওই কৌশলগত রূপান্তরের প্রমাণ বহন করে। আমদানি করা থেকে উৎপাদনের দিকে ধীরে ধীরে এই রূপান্তর, যদিও প্রযুক্তিগত চ্যালেঞ্জের সাথে, জাতীয় নিরাপত্তা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে নির্ভরতা কমাতে এবং স্বাধীনতা বৃদ্ধির জন্য আরব দেশগুলোর গুরুতর এবং দৃঢ় সংকল্পের বিষয়টি স্পট ফুটে ওঠে।
এই দেশগুলোর অভিজ্ঞতা ইঙ্গিত দেয় যে অস্ত্রের ক্ষেত্রে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন একটি সময়সাপেক্ষ প্রক্রিয়া। এটি প্রযুক্তি প্রভাব, আন্তর্জাতিক অংশীদারিত্ব ও বিশেষজ্ঞ পর্যায়ের জনশক্তি উন্নয়নে বিনিয়োগের মানের দ্বারা নির্ধারিত হয়।#
পার্সটুডে/এনএম/৩০
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।