ইহুদিবাদী ইসরাইলের ওপর গাজা যুদ্ধের সাংস্কৃতিক ক্ষত
ইসরাইলকে বয়কট করার সারিতে এক হাজার লেখক ও শিল্পী
-
ইসরায়েল বয়কট
পার্সটুডে-হারেৎজ সংবাদপত্র হুশিয়ারি উচ্চারণ করেছে: ব্যাপক সাংস্কৃতিক ও একাডেমিক বয়কট ইসরায়েলের সফট পাওয়ারকে বিপন্ন করে তুলেছে।
হিব্রু ভাষার সংবাদপত্র দৈনিক হারেৎজ ঘোষণা করেছে যে গাজায় গণহত্যার পরিণতি সাংস্কৃতিক ও একাডেমিক ক্ষেত্রে দখলদার ইসরাইলকে ছাড়েনি, এবং শিল্প ও একাডেমিক ক্ষেত্রে বয়কট এখনও চলছে। এই ঘটনা ইসরায়েলের সফট পাওয়ারের বিরুদ্ধে সরাসরি হুমকি হিসেবে বিবেচিত হয়। ফার্সের উদ্ধৃতি দিয়ে পার্সটুডে আরও জানিয়েছে, সংবাদপত্রটিতে ডেভিড রোজেনবার্গের এক প্রতিবেদনে এসেছে: গাজায় গণহত্যার প্রতিবাদে ইউরোপীয় গানের প্রতিযোগিতা (ইউরোভিশন) থেকে বেশ কয়েকটি ইউরোপীয় দেশের ধারাবাহিক প্রত্যাহারের ঘটনা অধিকৃত অঞ্চল তথা ইসরাইলের বিভিন্ন মহলে ছিল খুবই 'মর্মান্তিক'।বিশেষ করে এই সাধারণ বিশ্বাস বিবেচনা করে যে 'যুদ্ধ শেষ হয়ে গেছে এবং সামরিকভাবে কীভাবে এটি পরিচালনা করা যায় সে সম্পর্কে কোনও অবস্থান না নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার সময় এসেছে।'
হারেৎজ জোর দিয়ে বলেছে, যুদ্ধটি বিদেশে, বিশেষ করে সাংস্কৃতিক ও মিডিয়া মহলগুলোতে একটি শক্তিশালী উপস্থিতি বজায় রেখেছে। উদাহরণস্বরূপ, আইরিশ ব্রডকাস্টিং কর্পোরেশন গাজায় ব্যাপক প্রাণহানি, চলমান মানবিক সংকট এবং গণহত্যায় সাংবাদিকদের লক্ষ্যবস্তু করা নিয়ে উদ্বেগের কথা উল্লেখ করেছে।
সংবাদপত্রটি আরও উল্লেখ করেছে যে সাংস্কৃতিক ও একাডেমিক বয়কট কেবল ইউরোভিশনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়, এক হাজারেরও বেশি আন্তর্জাতিক লেখক ও সাহিত্যিক ইসরায়েলি সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান বয়কট করার ব্যাপারে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এছাড়াও, ইসরায়েলি সঙ্গীত নিষিদ্ধ করার জন্য আন্তর্জাতিক উদ্যোগ শুরু হয়েছে এবং বিশিষ্ট অভিনেতা ও চলচ্চিত্র নির্মাতারা সিনেমায় দখলদারদের বয়কট করার প্রচারণায় যোগ দিয়েছেন।
হারেতজ আরও লিখেছে ইসরায়েলি বিশ্ববিদ্যালয় এবং একাডেমিক প্রতিষ্ঠানগুলো ইউরোপীয় নিষেধাজ্ঞার মুখোমুখি হচ্ছে, প্রকাশ্য এবং গোপন নিষেধাজ্ঞার মাধ্যমে যেমন বৈজ্ঞানিক গবেষণা প্রকাশ করতে অস্বীকৃতি জানানো বা আন্তর্জাতিক সম্মেলনে অংশগ্রহণের জন্য আমন্ত্রণ পাঠাতে অস্বীকৃতি জানানো।
পরিশেষে, হারেতজ সতর্ক করে লিখেছে, যুদ্ধবিরতির পর কিছু বয়কট প্রচারণা শিথিল হওয়া সত্ত্বেও, ইসরায়েল যুদ্ধের পরিণতি দূর করার ওপর নির্ভর করতে পারে না। সংবাদপত্রটি জোর দিয়ে বলেছে যে নেতৃস্থানীয় সাংস্কৃতিক ও একাডেমিক মহলগুলোর মধ্যে ইসরায়েলের ভাবমূর্তি নেতিবাচক রয়ে গেছে এবং যুদ্ধের বিরোধিতা অনেক ক্ষেত্রে দখলদারের অস্তিত্বের বিরোধিতা হয়ে উঠেছে। হারেতজ এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছে যে আসল বিপদ হল দখলদারের সফট পাওয়ারকে দুর্বল করা। কারণ সংস্কৃতি, শিল্প ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ইসরায়েলের আন্তর্জাতিক ভাবমূর্তি উন্নত করতে কেন্দ্রীয় ভূমিকা পালন করে। কাজেই একাডেমিক বয়কট উদ্ভাবনী ও বৈজ্ঞানিক সহযোগিতাকে বিপন্ন করে এবং 'মস্তিষ্ক নিষ্কাশনের' দিকে নিয়ে যেতে পারে।#
পার্সটুডে/এনএম/১৬
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন