ইসরাইলের নতুন ইহুদি বসতি নির্মাণ পরিকল্পনার বিরুদ্ধে বিশ্ব সংস্থাগুলোর প্রতিক্রিয়া
https://parstoday.ir/bn/news/west_asia-i31757-ইসরাইলের_নতুন_ইহুদি_বসতি_নির্মাণ_পরিকল্পনার_বিরুদ্ধে_বিশ্ব_সংস্থাগুলোর_প্রতিক্রিয়া
জাতিসংঘ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও আরব লীগ মঙ্গলবার আলাদা আলাদা বিবৃতি প্রকাশ করে ইহুদিবাদী ইসরাইলের নয়া বসতি নির্মাণ পরিকল্পনার নিন্দা জানিয়েছে। সম্প্রতি তেল আবিব জর্দান নদীর পশ্চিম তীরে অধিকৃত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে নতুন করে ২,৫০০ ইহুদি বসতি নির্মাণ পরিকল্পনা ঘোষণা করার পর আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর পক্ষ থেকে এ প্রতিক্রিয়া জানানো হলো।
(last modified 2025-09-29T12:37:45+00:00 )
জানুয়ারি ২৫, ২০১৭ ১৮:২০ Asia/Dhaka

জাতিসংঘ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও আরব লীগ মঙ্গলবার আলাদা আলাদা বিবৃতি প্রকাশ করে ইহুদিবাদী ইসরাইলের নয়া বসতি নির্মাণ পরিকল্পনার নিন্দা জানিয়েছে। সম্প্রতি তেল আবিব জর্দান নদীর পশ্চিম তীরে অধিকৃত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে নতুন করে ২,৫০০ ইহুদি বসতি নির্মাণ পরিকল্পনা ঘোষণা করার পর আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর পক্ষ থেকে এ প্রতিক্রিয়া জানানো হলো।

ডোনাল্ড ট্রাম্প আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেয়ার চারদিন পর আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে এই মর্মে খবর বের হয় যে, ইহুদিবাদী ইসরাইলের যুদ্ধমন্ত্রী এভিগদোর লিবারম্যান ও প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু পশ্চিম তীরে ২,৫০০ নয়া বসতি নির্মাণের পরিকল্পনা অনুমোদন করেছেন। এর অর্থ হচ্ছে এই যে, ট্রাম্প মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ইহুদিবাদী দখলদারদের ধৃষ্টতা বহুগুণে বেড়ে গেছে। জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের মতো বিশ্বের সর্বোচ্চ আইনি প্রতিষ্ঠান থেকে এ ধরনের বসতি নির্মাণ বন্ধ করার আহ্বান জানানোর পরও তেল আবিব এ ধৃষ্টতা দেখিয়েছে।

প্রকৃতপক্ষে মার্কিন সরকারের সর্বাত্মক সমর্থনের কারণে ইসরাইল বিশ্ববাসীকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে যা খুশি তাই করার সুযোগ পাচ্ছে।

সাত দশকেরও বেশি সময় আগে ফিলিস্তিনি ভূমি জবরদখল করে অবৈধ রাষ্ট্র ইসরাইল প্রতিষ্ঠা করা হয়। কিন্তু এই রাষ্ট্রের জন্য যে জনগণ প্রয়োজন তা ইহুদিবাদীদের ছিল না। তাই ফিলিস্তিনিদের ঘরবাড়ি দখলের পর নতুন নতুন আবাসিক প্রকল্প নির্মাণ করে স্থায়ী আবাসন দেয়ার লোভ দেখিয়ে সারাবিশ্ব থেকে ইহুদিদের আমন্ত্রণ জানিয়ে এখানে নিয়ে আসা হয়। আন্তর্জাতিক সমাজের নীরব ভূমিকার সুযোগে আমন্ত্রণ জানিয়ে আনা নতুন নতুন ইহুদি অভিবাসীদের বসবাসের স্থান করতে দেয়ার জন্য ফিলিস্তিনিদের ভূখণ্ডে বসতি নির্মাণ করে যাচ্ছে তেল আবিব। ইহুদিবাদী কর্মকর্তারা মনে করছেন, এরকম অবৈধ বসতি স্থাপনের মাধ্যমে তারা নিজেদের দুর্বলতা ধামাচাপা দিয়ে অবৈধ রাষ্ট্রটির অস্তিত্বকে বৈধতা দিতে পারবে।

যে বিষয়টি আগ্রাসী তৎপরতার ক্ষেত্রে ইহুদিবাদী ইসরাইলকে বেপরোয়া করে তুলেছে তা হচ্ছে এ ব্যাপারে জাতিসংঘের ভ্রুক্ষেপহীনতা।  এই বিশ্ব সংস্থাটি কিছু প্রস্তাব ও আইন পাস করে নিন্দা জানানোর মাধ্যমে নিজের দায়িত্ব শেষ করেছে। অথচ তা বাস্তবায়নের কোনো প্রয়োজন আজ পর্যন্ত মনে করেনি। জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব লঙ্ঘন করার কারণে এই সংস্থার পক্ষ থেকে বিশ্বের বহু দেশে সামরিক হস্তক্ষেপের ভুরি ভুরি উদাহরণ রয়েছে। অথচ ইহুদিবাদী ইসরাইলের ব্যাপারে এখন পর্যন্ত জাতিসংঘকে কোনো ধরনের হস্তক্ষেপ করতে দেখা যায়নি।

জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের ২৪২ ও ৩৩৮ নম্বর প্রস্তাবে জর্দান নদীর পশ্চিম তীর ও বাইতুল মোকাদ্দাস তথা জেরুজালেমকে ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড হিসেবে অভিহিত করে বলা হয়েছে, ওই দুই এলাকাকে ইসরাইল জবরদখল করে রেখেছে। এসব প্রস্তাব অনুযায়ী, তেল আবিবকে বিনাশর্তে এই দুই এলাকা ছেড়ে চলে যেতে হবে।  কিন্তু ইহুদিবাদী ইসরাইল সে প্রস্তাব মেনে চলে যাওয়া তো দূরে থাক, বরং দখলীকৃত এলাকাগুলোতে নতুন নতুন বসতি নির্মাণ করে এসব প্রস্তাবকে চরমভাবে অবজ্ঞা করে  যাচ্ছে।

নিরাপত্তা পরিষদের সর্বসাম্প্রতিক প্রস্তাবে বসতি নির্মাণ বন্ধ করার আহ্বান জানানোর পর নতুন করে বসতি স্থাপনের পরিকল্পনা ঘোষিত হওয়ায় বোঝা যায়, এ ধরনের প্রস্তাব অনুমোদন বিশ্ববাসীকে ধোঁকা দেয়া ছাড়া অন্য কোনো ফল বয়ে আনছে না এবং অসহায় ফিলিস্তিনিরা যে তিমিরে ছিল সেই তিমিরেই রয়ে যাচ্ছে।#

পার্সটুডে/মুজাহিদুল ইসলাম/২৫