জাতিসংঘ মার্কিন স্বেচ্ছাচারিতা ও দ্বিমুখী নীতির মাধ্যম?
ইরানের ওপর অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহালের মার্কিন অপচেষ্টা! কাজ হবে কি?
মার্কিন সরকার জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের মাধ্যমে ইরানের ওপর অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহালের অপচেষ্টা জোরদার করেছে। এই পরিষদের ২২৩১ নম্বর প্রস্তাব অনুযায়ী ওই নিষেধাজ্ঞা আগামী ১৮ অক্টোবর থেকে উঠে যাওয়ার কথা রয়েছে।
ইরান বিষয়ক মার্কিন প্রতিনিধি ব্রায়ান হুক ও জাতিসংঘে নিযুক্ত মার্কিন দূত মিসেস কেলি ক্র্যাফট এরিমধ্যে ইরানের ওপর অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহালের লক্ষ্যে একটি খসড়া প্রস্তাব তৈরির বিষয়ে নিরাপত্তা পরিষদের অন্য সদস্যদের সঙ্গে আলোচনা করেছেন। গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে সৌদি আরবের তেল স্থাপনায় ইয়েমেনের হামলায় ইরানি অস্ত্র ব্যবহৃত হয়েছে এমন অভিযোগের ভিত্তিতে ইরানের ওপর অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহালের মার্কিন উদ্যোগের প্রতি নিরাপত্তা পরিষদের অন্য সদস্যদেরও সমর্থন লাভের চেষ্টা করছেন মার্কিন কর্মকর্তারা।
ইয়েমেনের প্রতিরোধ আন্দোলন ও ইরান ওই অভিযোগকে বানোয়াট বলে নাকচ করে আসছে।
ইরানের ওপর অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহালের খসড়া প্রস্তাব যদি নিরাপত্তা পরিষদের নয়টি দেশের সমর্থন পায় তখন রাশিয়া ও চীনকে এই প্রস্তাব বাতিলের জন্য ভেটো ক্ষমতা প্রয়োগ করতে হবে। পর্যবেক্ষক ও বিশ্লেষকরা বলছেন এ ধরনের কোনো প্রস্তাব জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের অনুমোদন পাবে-এমন আশঙ্কা খুবই কম। অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল হলে ইরান অন্য কোনো দেশের কাছে অস্ত্র বা এ জাতীয় কিছু বিক্রি বা সরবরাহ করতে পারবে না এবং অন্য দেশগুলোও ইরানের কাছে অস্ত্র জাতীয় কিছুই বিক্রি বা সরবরাহ করতে পারবে না।
মার্কিন সরকার এ নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহালের জন্য সব ধরনের মাধ্যম ব্যবহার করবে বলে জানিয়েছে। চীন ও রাশিয়া ইরানের ওপর এ নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহালের বিরোধিতা অব্যাহত রাখলে জাতিসংঘে তারা একঘরে হয়ে পড়বে বলে মার্কিন সরকার হুমকি দিয়েছে। কিন্তু চীন ও রাশিয়া এ বিষয়ে তাদের নৈতিক অবস্থানে অবিচল থাকবে বলেই মনে করা হচ্ছে।
পরমাণু সমঝোতার আলোকে ইরানের বিরুদ্ধে স্বয়ংক্রিয়ভাবে নিষেধাজ্ঞা ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়াকে ব্যবহারেরও হুমকি দিয়েছে মার্কিন সরকার। কিন্তু এই প্রক্রিয়াকে অপব্যবহারের মার্কিন চেষ্টা সফল হবে না মার্কিন সরকার এ সমঝোতা থেকে দুই বছর আগেই বেরিয়ে যাওয়ার কারণে।
অন্যদিকে এ চেষ্টা সফল না হলে ইরানের ওপর জাতিসংঘের সমস্ত নিষেধাজ্ঞা মার্কিন সরকার একাই একচেটিয়াভাবে ফিরিয়ে আনবে বলে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী যে হুমকি দিয়েছেন তাও রুশ-চীনা বাধার মুখে সফল হবে না বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন।
ইরান সম্পর্কে জুজুর ভয় দেখিয়ে চলছে মার্কিন সরকার ও তার পশ্চিমা মিত্ররা এবং ইহুদিবাদী ইসরাইল ও আরব সেবাদাস গোছের সরকারগুলো। অথচ পশ্চিমা অস্ত্রে প্রাণ হারাচ্ছে ইয়েমেন ও ফিলিস্তিনের মজলুম জনগণ! জাতিসংঘ এসব স্বেচ্ছাচারিতা ও দ্বিমুখী নীতির বিরুদ্ধে যেন ঠুটো জগন্নাথ হয়ে আছে! বরং এইসব শক্তির হাতিয়ার ও ক্রীড়নক হিসেবেও ব্যবহৃত হচ্ছে জাতিগুলোর অধিকার রক্ষার নামে গঠিত বিশ্ব সংস্থা জাতিসংঘ !
পার্সটুডে/এমএএইচ/২৫