১১ হাজারেরও বেশি বাহরাইনি বন্দি, সরকার বিরোধী বহু নাগরিকের নাগরিকত্ব বাতিল!
গণ-অভ্যুত্থান-বার্ষিকীর প্রাক্কালে বাহরাইনিদের ওপর আলে-খলিফা'র দমন-পীড়ন জোরদার
-
বাহরাইনি প্রতিবাদীদের ওপর আলে খলিফার পেটোয়া বাহিনীর দমন-পীড়ন
১৪ ফেব্রুয়ারির গণ-অভ্যুত্থান-বার্ষিকীর প্রাক্কালে বাহরাইনে প্রতিবাদী জনগণের ওপর রাজতান্ত্রিক আলে-খলিফা সরকারের দমন-পীড়ন জোরদার হয়েছে।
বাহরাইনের স্বৈরতান্ত্রিক রাজ-সরকারের বিরুদ্ধে দেশটির জনগণের গণ-অভ্যুত্থান শুরু হয়েছিল ২০১১ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি। একই ধরনের গণ-অভ্যুত্থানে সে সময় তিউনিসিয়ায় বেন আলি সরকার ও মিশরে হোসনি মোবারক সরকারের পতন ঘটেছিল। কিন্তু দুঃখজনকভাবে বাহরাইনের সঙ্গে সৌদি-সীমান্ত থাকায় সৌদি সরকার সেনা পাঠিয়ে বাহরাইনের গণ-অভ্যুত্থান দমন করে এবং সৌদি সরকার আরব বিপ্লবগুলোর পথে প্রধান বাধা হয়ে দাঁড়ায়।
আরব-গণ-বিপ্লবগুলোতে আতঙ্কিত সৌদি সরকার বাহরাইনে ১৪ ফেব্রুয়ারির গণ-অভ্যুত্থান শুরু হওয়ার এক মাস পর পারস্য উপসাগরীয় সহযোগিতা পরিষদের বর্ম শীর্ষক পরিকল্পনার আওতায় সেখানে সেনা পাঠায়। অথচ এই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন কেবল বিদেশী শক্তির আক্রমণের মোকাবেলায় কার্যকর করা হবে বলে কথা ছিল।
বাহরাইনি জনগণের অভ্যুত্থানের দশ বছর পর এখনও সৌদি সেনারা এই দেশটিতে অবস্থান করছে এবং আলে খলিফা সরকারের ভাড়াটে সেনাদের সহযোগী হয়ে মানবাধিকার সংগঠনসহ প্রতিবাদী আন্দোলনগুলোর নেতা-কর্মীদের ওপর নির্যাতন চালাচ্ছে।
এ বছর বাহরাইনের জনগণ এমন সময় তাদের গণ-অভ্যুত্থান বার্ষিকী পালন করছে যখন আলে-খলিফার রাজ-সরকার সম্প্রতি ইহুদিবাদী ইসরাইলের সঙ্গে পূর্ণ কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা করেছে। একই কাজ করেছে আরব আমিরাত সরকার। অবশ্য বাহরাইন সরকার ইসরাইলের সঙ্গে গোপনে সম্পর্ক বজায় রেখেছিল। এই সম্পর্ক ২০২০ সালের সেপ্টেম্বর মাসে প্রকাশ্য করা হয়। গত অক্টোবর মাসে বাহরাইনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রকাশ্যেই ইসরাইল সফর করেন। বাহরাইনের জনগণ এর বিরুদ্ধে ব্যাপক বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ দেখায়। তারা ইসরাইলের সঙ্গে বাহরাইনের সম্পর্ক স্বাভাবিক করার বিরুদ্ধেও প্রতিবাদ জানিয়ে আসছে।
বাহরাইনের প্রতিবাদী জনগণ তাদের অধিকার আদায়ের দাবিতে শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ আন্দোলন অব্যাহত রাখার অঙ্গীকার করেছেন। বাহরাইনি জনগণের ইসরাইল-বিরোধী প্রতিরোধ ও গণতান্ত্রিক আন্দোলন দমনের জন্য দেশটির সরকার করোনা ভাইরাসের অজুহাত দেখিয়ে গত ১১ ফেব্রুয়ারি দুই সপ্তা'র জন্য মসজিদগুলোতে নামাজ ও ধর্মীয় অনুষ্ঠান পালন নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে। বাহরাইনের মসজিদগুলো আলে-খলিফার সরকার ও ইসরাইল-বিরোধী প্রতিবাদের কেন্দ্রে পরিণত হতে পারে বলে মানামা সরকার আতঙ্ক অনুভব করছে!
উল্লেখ্য, ২০১১ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত নানা মিথ্যা অভিযোগে বাহরাইনের ১১ হাজারেরও বেশি নাগরিককে বন্দি করেছে এবং সরকার বিরোধী বহু নাগরিকের নাগরিকত্ব বাতিল করেছে আলে খলিফার সরকার। ইহুদিবাদী ইসরাইলের মদদ পেয়ে বাহরাইনের অজনপ্রিয় স্বৈরতান্ত্রিক সরকার দেশটির নাগরিকদের ওপর জুলুম নির্যাতন বাড়িয়ে দিয়েছে। অথচ পশ্চিমা শক্তিগুলো মানবাধিকার লঙ্ঘনের এসব ঘটনার ব্যাপারে নিরব থাকায় বাহরাইনিদের ওপর সরকারি জুলুম অব্যাহত থাকবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। #
পার্সটুডে/এমএএইচ/১২
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।