ইস্তাম্বুলে রাশিয়া-ইউক্রেন বৈঠক: একটি পর্যালোচনা
(last modified Wed, 30 Mar 2022 11:12:52 GMT )
মার্চ ৩০, ২০২২ ১৭:১২ Asia/Dhaka

তুরস্কের ইস্তাম্বুলে গতকাল রাশিয়া ও ইউক্রেনের প্রতিনিধিদলের মধ্যে নতুন করে আলোচনা হয়েছে। ইউক্রেনীয় প্রতিনিধি দলের প্রধান ডেভিড আরাখামিয়া ওই বৈঠকের পর বলেছেন: ইউক্রেনকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে যুক্ত হবার পথ কেউ আটকাতে পারবে না।

তিনি বলেন উভয় পক্ষে এখন পর্যন্ত কোন চুক্তিতে উপনীত হয় নি। ইউক্রেনীয় পক্ষও রাশিয়ার কাছ থেকে কোন নিশ্চিয়তা পায় নি।  রাশিয়ার সাথে যে-কোনো চুক্তি হলে ইউক্রেন গণভোটের আয়োজন করবে বলেও তিনি ঘোষণা করেন।

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি অবশ্য মঙ্গলবার রাতে বলেছেন: রাশিয়ার সঙ্গে শান্তি আলোচনায় ইতিবাচক কিছু বার্তা রয়েছে। তবে তিনি বলেছেন যুদ্ধ শেষ না হওয়া পর্যন্ত রাশিয়ার ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা উচিত হবে না। ইস্তাম্বুলে রাশিয়া এবং ইউক্রেনের প্রতিনিধিদের মধ্যে মঙ্গলবারের আলোচনার পর মস্কো বলেছে, তারা উত্তর ইউক্রেনে সামরিক তৎপরতা উল্লেখযোগ্য মাত্রায় কমাবে। যদিও পেন্টাগন রাশিয়ার ওই বক্তব্য মেনে নেয় নি। আমেরিকা বলেছে রাশিয়ার পিছু হটার কোনো লক্ষণই তারা দেখছে না।

ইস্তাম্বুল আলোচনায় দুটি ইস্যু গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবেচিত হয়েছিল। অ্যাক, ইউক্রেন নিরপেক্ষ থাকবে এবং ন্যাটোর অন্তর্ভুক্ত হবে না-এ বিষয়টি। দুই, ইউক্রেনের ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্যপদ পাওয়ার বিষয়। এ বিষয়টি রাশিয়াও মেনে নিয়েছে। জেলেনস্কি তার আগের অবস্থান থেকে সরে এসে বলেছেন তিনি মস্কোর সাথে শান্তি প্রক্রিয়ায় তার দাবি থেকে পিছিয়ে যেতে প্রস্তুত রয়েছেন। পাশ্চাত্য ও রাশিয়ার মধ্যে নিরপেক্ষ অবস্থান নিতে প্রস্তুত তাঁর দেশ।

২০১৪ সালের পট পরিবর্তনের পর ইউক্রেনে পশ্চিমাপন্থী সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়। তারই পরিপ্রেক্ষিতে ইউক্রেন পশ্চিমা ব্লকের সাথে একীভূত হওয়ার জন্য বিশেষ করে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও ন্যাটোর সদস্যপদ পাওয়ার জন্য ইউক্রেনের সংবিধান সংশোধন করেছিল। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং তার ইউরোপীয় মিত্ররা ওয়াশিংটনের সাথে সুর মিলিয়ে ইউক্রেনকে ন্যাটোতে অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়টি সমর্থন করে। কিন্তু ইউরোপীয় ইউনিয়নে ইউক্রেনের অন্তর্ভুক্তির ব্যাপারে ই.ইউ'র সদস্য দেশগুলোর মাঝে মতৈক্য হয় নি। ইউক্রেনে রাশিয়ার বিশেষ সামরিক অভিযানের পরপরই প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি জরুরি ভিত্তিতে কিয়েভকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য করে নেওয়ার আহ্বান জানান। কিন্তু ওই আবেদনে কার্যকর সাড়া পায় নি ইউক্রেন। এর পেছনে রয়েছে ই.ইউ'র গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি দেশের বিরোধিতা। তাছাড়া  ইউক্রেন এখন আর্থিক ও প্রশাসনিক দুর্নীতির দিক থেকে ইউরোপের অন্যতম দুর্নীতিগ্রস্ত দেশ। এসব কারণে দেশটির ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্যপদ লাভের সম্ভাবনা খুবই কম। এছাড়াও, সদস্যপদ চাওয়া দেশগুলির জন্য ইউরোপীয় ইউনিয়নের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ শর্তগুলির মধ্যে একটি হল তার প্রতিবেশী দেশের সাথে আঞ্চলিক এবং সীমান্ত বিরোধের নিষ্পত্তি।  এই প্রক্রিয়াটি যেহেতু খুব দীর্ঘ, তাই রাশিয়া এ বিষয়ে তেমন কোনো স্পর্শকাতরতা দেখায় নি। রাশিয়ার জন্য যেটা গুরুত্বপূর্ণ সেটা হলো ইউক্রেনের ন্যাটোর সদস্যপদ না থাকা।#

পার্সটুডে/এনএম/৩০

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।

 

ট্যাগ