রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রীর তির্যক মন্তব্য
স্বার্থের জন্য লাভজনক হলেই আমেরিকা সামরিক অভ্যুত্থানকে সমর্থন করে
রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ বলেছেন, বিশ্বের যেকোন দেশের সামরিক অভ্যুত্থান আমেরিকার স্বার্থের পক্ষে গেলেই তার প্রতি তারা সমর্থন দেয়। গতকাল (সোমবার) রাশিয়া টুডেকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে একথা বলেন রুশ মন্ত্রী।
ল্যাভরভ বলেন, “যদি কোনো প্রতিবাদ-আন্দোলন আমেরিকার প্রতি অনুগত কোনো সরকারের বিরুদ্ধে হয় তাহলে তা ওয়াশিংটন অবশ্যই তা প্রত্যাখ্যান করবে। রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বেশ কয়েকটি সামরিক অভ্যুত্থানের চেষ্টা হয়েছে। এসব অভ্যুত্থানের ব্যাপারে আমেরিকার পক্ষ থেকে ভিন্ন ভিন্ন প্রতিক্রিয়া পাওয়া গেছে। প্রতিটি অভ্যুত্থান প্রচেষ্টার সময় আমেরিকা একথাই বিবেচনা করেছে- কার বিরুদ্ধে অভ্যুত্থান প্রচেষ্টা চলছে এবং কারা এই অভ্যুত্থান প্রচেষ্টা বাস্তবায়নের চেষ্টা করছে। যেসব দেশের সরকারের ব্যাপারে আমেরিকাসহ পশ্চিমা দেশগুলো খুশি সেসব জায়গায় কোনো বিক্ষোভ প্রতিবাদী বৈধ বলে গণ্য হয় নি। কিন্তু যেসব দেশের সরকার জাতীয় স্বার্থ রক্ষার চেষ্টা করে সেই সব জায়গায় আমরা দেখেছি বেআইনিভাবে এবং জোর করে সরকার পরিবর্তনের চেষ্টা করা হয়েছে।”
ল্যাভরভ বলেন, এ ধরনের একটি উদাহরণ হচ্ছে- আমেরিকা এবং তার পশ্চিমা মিত্রদের সমর্থনে ২০১৪ সালে ইউক্রেনে সরকার পরিবর্তন। অথচ পরের বছর ইয়েমেনের সরকার পরিবর্তনের একই রকমের ঘটনায় ওয়াশিংটন ভিন্ন অবস্থান নিয়েছে।
ইউক্রেনে গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকারকে ক্ষমতা থেকে উৎখাত করার জন্য বিরোধীদেরকে লেলিয়ে দেয়া হয়েছে এবং এই বেআইনি কাজের জন্য আমেরিকা কোনো প্রতিবাদ করেনি। ওই সময় রাশিয়া ইউক্রেনের পরিস্থিতিকে রাজনৈতিকভাবে সমাধানের চেষ্টা করলেও সে উদ্যোগে কোনো সাড়া দেয়নি আমেরিকা। ইউক্রেনের নির্বাচিত নেতা ভিক্টর ইয়ানুকোভিচ শেষ পর্যন্ত দেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হন। অন্যদিকে, ইয়েমেনের হুথি গেরিলাদের অগ্রাভিযানের মুখে পশ্চিমা সমর্থিত আব্দ রাব্বু মানসুর হাদি সৌদি আরবে পালিয়ে গেলে তার প্রতি সমর্থন জানিয়ে আমেরিকা এবং পশ্চিম দেশগুলো বলেছে যে, হাদি এখনো বৈধ প্রেসিডেন্ট। ল্যাভরভ বলেন, এ দুটি ঘটনা থেকে পরিষ্কার হয় যে, আমেরিকা তার স্বার্থের পক্ষে গেলে যেকোন অভ্যুত্থান প্রচেষ্টাকে সমর্থন করে।#
পার্সটুডে/এসআইবি/জিএআর/ ২৭