জুলাই ০৩, ২০২৩ ১১:৪৬ Asia/Dhaka

ইউরোপে অব্যাহত বর্ণবাদ এবং বৈষম্যমূলক আচরণ ওই মহাদেশটির জন্য একটি গুরুতর রাজনৈতিক ও সামাজিক সংকটে পরিণত হয়েছে। সাম্প্রতিক মাসগুলোতে ইউরোপের বিভিন্ন দেশের নাগরিকরা প্রতিবাদ সমাবেশ করে এ ধরণের আচরণ বন্ধের আহ্বান জানিয়েছে।

সামাজিক সংকট বৃদ্ধির ফলে ইউরোপের কর্মকর্তারা এই সংকট চলার কথা স্বীকার করতে বাধ্য হয়েছে। জার্মান চ্যান্সেলর ওলফ শুলেতয স্বীকার করেছেন দুর্ভাগ্যবশত, জার্মানিতে বর্ণবাদ একটি বাস্তবতা এবং এটি এমন একটি বাস্তবতা যা জার্মানিদের একসাথে এর বিরুদ্ধে রুখে দাড়াতে হবে।

প্রকৃতপক্ষে, বর্ণবাদ ইউরোপীয়দের জন্য মহা সংকট হয়ে দেখা দিয়েছে। ফ্রান্স, ব্রিটেন, জার্মানিসহ ইউরোপের আরো অন্যান্য দেশে সাম্প্রতিক মাসগুলোতে বর্ণবাদের বিরুদ্ধে জনগণের প্রতিবাদ বিক্ষোভই এর প্রমাণ। এর পাশাপাশি এসব দেশে অর্থনৈতিক সংকটও প্রকট আকার ধারণ করায় জনগণ ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে। ফ্রান্সসহ ইউরোপের অধিকাংশ দেশের আইন অনুযায়ী, গায়ের রং, জাতি, ধর্ম, বয়স এবং অক্ষমতার কারণে কারো অধিকার নেই মানুষকে সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করা। কিন্তু ওই দেশগুলোর বর্তমান অবস্থা  থেকে বোঝা যায় এসব আইন কেবল কাগজ কলমের মধ্যেই সীমাবদ্ধ এবং কার্যক্ষেত্রে এসব দেশে বর্ণবাদ ও শ্রেণী বৈষম্য চলছে।

ফ্রান্সের জনগণের বর্ণবাদ বিরোধী একটি সংগঠন বলছে, সেদেশে অবস্থানকারী আফ্রিকান ও আরব বংশোদ্ভূত নাগরিকরাই মূলত বর্ণবাদের প্রধান শিকার হচ্ছে। সম্প্রতি ফরাসি পুলিশের হাতে আলজেরিয় বংশোদ্ভূত এক যুবক নাইল মারযুক নিহত হওয়ার পর ফ্রান্স জুড়ে ব্যাপক প্রতিবাদ বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। পুলিশের বর্ণবাদী আচরণের প্রতিবাদে ফ্রান্সের জনগণ রাজপথে নেমে পড়েছে। গত কয়েক দিনে ব্যাপক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে এবং জনতা  বিভিন্ন জায়গায় আগুন ধরিয়ে দিয়েছে। ফলে ফ্রান্স কার্যত অচল হয়ে পড়েছে। এ ঘটনায় পার্শ্ববর্তী দেশ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। জার্মানির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ন্যান্সি ফাইযার স্বীকার করেছেন তার দেশেরও বেশিরভাগ মুসলিমরা বৈষম্যের স্বীকার হচ্ছে এবং এ বিষয়টি সমাজে চাপা ক্ষোভ তৈরি করেছে। জার্মানির সমাজ বিশেষজ্ঞ জিহান সিনান ওগলু বলেছেন, এটি একটি অনস্বীকার্য বাস্তবতা। জার্মানিতে বৈষম্য এখন আর আড়াল  করার বিষয় নয় এবং পুরো সমাজে এর প্রভাব পড়ছে। 

এক গবেষণায় দেখা গেছে আফ্রিকা থেকে আসা অনেক কৃষ্ণাঙ্গ ব্যক্তি ইউরোপের বিভিন্ন দেশে পুলিশি নির্যাতন ও হয়রানির স্বীকার হচ্ছে। অপরাধের কোনো প্রমাণ ছাড়াই পুলিশ তাদের ওপর নির্যাতন করছে। আফ্রিকান অভিবাসীরা সেখানে নিম্ন শ্রেণীর  কাজ করতে বাধ্য হচ্ছে এবং নাগরিক সুবিধা থেকেও তারা বঞ্চিত হচ্ছে। এ ছাড়া ইসলাম ভীতিও ইউরোপের আরেকটি বড় সমস্যা। ফলে সেখানে মুসলমানরা নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে রয়েছে।  #      

পার্সটুডে/রেজওয়ান হোসেন/৩

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।

 

ট্যাগ