জন কেরি'র চীন সফর: রাশিয়ার সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা ঠেকানোই উদ্দেশ্য
জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক বিশেষ মার্কিন দূত ও বিজ্ঞ কূটনীতিক জন কেরি বর্তমানে চীন সফর করছেন। গত এক মাসে এ নিয়ে আমেরিকার তিন জন প্রভাবশালী সরকারি কর্মকর্তা চীন সফর করলেন। বলা হচ্ছে, জন কেরির এই সফরের প্রধান উদ্দেশ্য জলবায়ু পরিবর্তন ইস্যুতে কাজ করা।
কিন্তু বিশ্লেষকরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তন ইস্যুর বাইরেও জন কেরির এই সফরের পেছনে আরও গুরুত্বপূর্ণ উদ্দেশ্য কাজ করছে। রাশিয়ার সঙ্গে চীনের ক্রমবর্ধমান ঘনিষ্ঠতা ঠেকাতে তিনি সেখানে নানা উপায়ে চেষ্টা চালাবেন।
গত কয়েক বছর ধরেই যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চীনের সম্পর্কে টানাপড়েন বেড়েছে। বিশেষকরে গত বছর মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদের তৎকালীন স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি'র তাইওয়ান সফর, তাইওয়ানের কাছে বিপুল পরিমাণ মার্কিন অস্ত্র বিক্রি এবং বিভিন্ন চীনা কোম্পানির ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞার মতো কিছু ঘটনা দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা নজিরবিহীনভাবে বাড়িয়ে দিয়েছে। জন কেরি এই সফরে দ্বিপক্ষীয় উত্তেজনা কমানোর চেষ্টা করবেন।
ইউক্রেন যুদ্ধে ব্যবহারের জন্য চীন রাশিয়াকে অস্ত্র দিতে পারে বলে আমেরিকা আশঙ্কা করছে। এই মুহূর্তে রাশিয়া চীনা অস্ত্র পেলে ইউক্রেন যুদ্ধের মোড় ঘুরে যেতে পারে। আর এমনটা ঘটলে তা হবে আমেরিকার জন্য বড় বিপর্যয়। যুদ্ধের শুরু থেকেই পাশ্চাত্যের দেশগুলো রাশিয়ার প্রতি সম্ভাব্য চীনা সহযোগিতার আশঙ্কায় ভয়ের মধ্যে রয়েছে। কারণ চীন প্রকাশ্যেই রাশিয়ার অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ মিত্র এবং দেশটি ইউক্রেনে রুশ সামরিক অভিযানের নিন্দা জানায়নি।
শুধু ইউক্রেন যুদ্ধ নয়, নানা ইস্যুতে রাশিয়া ও চীনের ঘনিষ্ঠতা আমেরিকার জন্য উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আন্তর্জাতিক রাজনীতি ও বাণিজ্যে এই দুই দেশের প্রভাব দিন দিন বাড়ছে। আমেরিকার এককেন্দ্রিক বিশ্ব ব্যবস্থা অক্ষুণ্ণ রাখার প্রচেষ্টার মোকাবেলায় চীন ও রাশিয়া বহুকেন্দ্রিক বিশ্ব ব্যবস্থা গড়ে তোলার লক্ষ্যে অনেক দূর এগিয়েছে। এরিমধ্যে বিশ্বের অনেক গুরুত্বপূর্ণ দেশ তাদের এই উদ্যোগে শামিল হয়েছে। এ অবস্থায় প্রভাবশালী মার্কিন কর্মকর্তাদের ঘন ঘন চীন সফর খুব একটা প্রভাব ফেলতে পারবে বলে মনে হয় না।#
পার্সটুডে/এসএ/১৮
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।