মার্কিন চাপ উপেক্ষা করে রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক রেখেছে চীন
https://parstoday.ir/bn/news/world-i126176-মার্কিন_চাপ_উপেক্ষা_করে_রাশিয়ার_সঙ্গে_সম্পর্ক_স্বাভাবিক_রেখেছে_চীন
চীন সরকার রাশিয়ার সাথে তার লেনদেন অব্যাহত রেখেছে। এই লেনদেনটি চীন দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সহযোগিতার কাঠামোর অধীন একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া বলে ঘোষণা করেছে। রাশিয়াকে চীন সামরিক সহায়তা দিচ্ছে বলে আমেরিকা ও তার মিত্ররা রাজনৈতিকভাবে এবং গণমাধ্যমের সাহায্যে ব্যাপক প্রচারণা চালিয়ে যখন দেশটির ওপর আরো বেশি চাপ সৃষ্টির চেষ্টা করছে ঠেক সে মুহূর্তে চীন সরকার এ ধরনের ঘোষণা দিলো।
(last modified 2025-07-29T12:16:04+00:00 )
জুলাই ৩০, ২০২৩ ১২:০৬ Asia/Dhaka

চীন সরকার রাশিয়ার সাথে তার লেনদেন অব্যাহত রেখেছে। এই লেনদেনটি চীন দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সহযোগিতার কাঠামোর অধীন একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া বলে ঘোষণা করেছে। রাশিয়াকে চীন সামরিক সহায়তা দিচ্ছে বলে আমেরিকা ও তার মিত্ররা রাজনৈতিকভাবে এবং গণমাধ্যমের সাহায্যে ব্যাপক প্রচারণা চালিয়ে যখন দেশটির ওপর আরো বেশি চাপ সৃষ্টির চেষ্টা করছে ঠেক সে মুহূর্তে চীন সরকার এ ধরনের ঘোষণা দিলো।

চীন বহুবার আমেরিকাকে বেইজিংয়ের অভ্যন্তরিণ ও বৈদেশিক সম্পর্ক বিষয়ে হস্তক্ষেপ করছে বলে সতর্ক করে দিয়েছে। তারপরও আমেরিকা এবং তাদের মিত্র দেশগুলো একইরকমের প্রচারণা চালিয়েই যাচ্ছে। এর পেছনে কারণ হলো আমেরিকা আসলে ইউক্রেনের চোরাবালিতে আটকে গেছে। একদিকে যুদ্ধের দীর্ঘসূত্রিতার কারণে নিজস্ব বাজেটের ওপর ব্যাপক চাপ পড়েছে। অপরদিকে ইউক্রেনের পরাজয় এবং রাশিয়ার বিজয়ের পক্ষে একটা যুক্তি দাঁড় করানোর অপচেষ্টার অংশ এটি। জাপানে সম্প্রতি জি-সেভেনভুক্ত দেশগুলোর যে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে সেখানে রাশিয়ার ওপর আরও বেশি নিষেধাজ্ঞা আরোপ করার এবং ইউক্রেনকে আরও বেশি অস্ত্র দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ সম্পর্কে আন্তর্জাতিক ঘটনা বিশ্লেষক হি তিং তাসু বলেছেন:

আমেরিকা ইউক্রেন যুদ্ধের মাধ্যমে রাশিয়ার পাশাপাশি চীনকেও দুর্বল করার চেষ্টা চালাচ্ছে। আমেরিকা আসলে চীনের বিরুদ্ধে অভিযোগ উত্থাপন করে এক ঢিলে দুই পাখি মারার চেষ্টা করছে। রাশিয়ার বিরুদ্ধে তো নিষেধাজ্ঞাসহ ব্যাপক চাপ সৃষ্টি করেছেই সেইসঙ্গে চীনসহ মস্কোর সঙ্গে যেসব দেশের সম্পর্ক রয়েছে তাদেরকেও টার্গেটে রেখেছে। যদিও চীন এবং স্বাধীন দেশগুলো আন্তর্জাতিক রীতিনীতি অনুসারে রাশিয়ার সঙ্গে স্বাভাবিক সম্পর্ক বজায় রেখেছে।

আমেরিকার মিডিয়া সম্প্রতি দাবি করেছে, রাশিয়ার কাস্টমস ডেটা থেকে বোঝা যায় চীন সরকারের সামরিক ঠিকাদাররা রাশিয়ায় নেভিগেশন সরঞ্জাম, ফাইটার যন্ত্রাংশ, ড্রোন এবং অন্যান্য পণ্যসহ যুদ্ধে ব্যবহারের বিচিত্র পণ্য পাঠিয়েছে। চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র "মাও নিং" বলেছেন: রাশিয়াসহ বিশ্বের সমস্ত দেশের সাথে বেইজিংয়ের স্বাভাবিক বাণিজ্যিক ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা রয়েছে। চীনের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে আমেরিকা বেইজিংয়ের ওপর সম্ভবত নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপের অজুহাত খুঁজছে।

ইউক্রেনের যুদ্ধের মূল হোতা হিসেবে আমেরিকা এবং তার মিত্রদেরকে রাশিয়ার মোকাবেলায় নিজেদেরকে শক্তিহীন বলে মনে করে। তারা রাশিয়ার সামরিক ক্ষমতাকে শক্তিশালী করার জন্য বিভিন্ন দেশকে অভিযুক্ত করছে। আমেরিকা ইউক্রেনকে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার অর্থ সাহায্য দেওয়ার পাশাপাশি সর্বশেষ পদক্ষেপ হিসেবে গুচ্ছ বোমাও সরবরাহ করেছে। তবু কাঙ্ক্ষিত সাফল্য দেখছে না তারা। এ প্রসঙ্গে আন্তর্জাতিক পরিস্থিতি বিশ্লেষক ড্যানিয়েল কোওয়ালিক বলেছেন:

আমেরিকা এবং তার মিত্ররা কল্পনাও করেনি ইউক্রেন যুদ্ধ একটি ক্ষয়ক্ষতির পর্যায়ে পৌঁছবে। এই পরিস্থিতি ইউরোপীয় দেশগুলির অর্থনীতিতে বিশাল আর্থিক সংকট চাপিয়ে দেবে।  তারই জের হিসেবে ধীরে ধীরে ইউরোপে জনবিক্ষোভের সৃষ্টি করবে। এই পরিণতি উপলব্ধি করে ইউরোপীয় দেশগুলোসহ আমেরিকা ইউক্রেনকে সমর্থন অব্যাহত রাখার বিষয়ে সমস্যায় পড়ে গেছে।

এরইমধ্যে চীন ইউক্রেন সংকট নিরসনে ১২ দফা প্রস্তাব দিয়েছে। আমেরিকা ওই প্রস্তাবের বিরোধিতা করেছে। ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর আগেই চীন ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট দু'দেশের সরকারের মধ্যকার  বন্ধুত্বপূর্ণ সহযোগিতা সীমাহীন বলে মন্তব্য করেছেন। তার প্রমাণও রেখেছে চীন। ইউক্রেনে বিশেষ অভিযান চালানোর পক্ষে রাশিয়ার ব্যাখ্যা সমর্থন এবং জাতিসংঘে রুশ বিরোধী নিন্দা প্রস্তাবের বিরোধিতা করেছে চীন।

যদিও আমেরিকা এখনও মিডিয়ার সাহায্যে প্রচারণা যুদ্ধ চালিয়েই যাচ্ছে।#

পার্সটুডে/এনএম/৩০

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।