ইসরাইলে অস্ত্র রপ্তানি স্থগিত করার অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করল লন্ডন আদালত
https://parstoday.ir/bn/news/world-i134814-ইসরাইলে_অস্ত্র_রপ্তানি_স্থগিত_করার_অনুরোধ_প্রত্যাখ্যান_করল_লন্ডন_আদালত
ইউরোপে জার্মানির পাশাপাশি ব্রিটেন ইহুদিবাদী ইসরাইলের অন্যতম প্রধান সমর্থক হিসাবে পরিচিত এবং ফিলিস্তিনের নির্যাতিত জনগণকে দমন ও হত্যা করার জন্য সবসময় ইসরাইলকে সব ধরণের অস্ত্র বিক্রি করেছে লন্ডন। গাজা যুদ্ধের পঞ্চম মাসে, ব্রিটেন ইসরাইলি হত্যাযজ্ঞে নতুন করে শামিল হয়েছে।
(last modified 2025-07-29T12:16:04+00:00 )
ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০২৪ ১৬:০৪ Asia/Dhaka
  • ইসরাইলে অস্ত্র রপ্তানি স্থগিত করার অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করল লন্ডন আদালত

ইউরোপে জার্মানির পাশাপাশি ব্রিটেন ইহুদিবাদী ইসরাইলের অন্যতম প্রধান সমর্থক হিসাবে পরিচিত এবং ফিলিস্তিনের নির্যাতিত জনগণকে দমন ও হত্যা করার জন্য সবসময় ইসরাইলকে সব ধরণের অস্ত্র বিক্রি করেছে লন্ডন। গাজা যুদ্ধের পঞ্চম মাসে, ব্রিটেন ইসরাইলি হত্যাযজ্ঞে নতুন করে শামিল হয়েছে।

লন্ডন হাইকোর্ট ইসরাইলে ব্রিটেনের তৈরি অস্ত্র রপ্তানি স্থগিত করার অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করেছে। মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলোর একটি জোট গত জানুয়ারিতে হাইকোর্টে ইসরাইলের কাছে খুচরা যন্ত্রাংশ এবং সামরিক অস্ত্র বিক্রি অব্যাহত রাখার ব্রিটিশ রক্ষণশীল সরকারের সিদ্ধান্ত বাতিলের আবেদন জানানোর পর আদালত এই সিদ্ধান্ত নিল। এই মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলো মনে করে, ইসরাইলের কাছে অস্ত্র রপ্তানি করা আন্তর্জাতিক মানবাধিকার বিষয়ক আইনের জন্য বড় ধরনের হুমকি। যদিও আদালত অস্ত্র বিক্রি না করার আবেদন খারিজ করে দিয়েছে, কিন্তু বাদী পক্ষরা এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল করেছেন।

২০২২ সালে ইসরাইলের কাছে ব্রিটেনের মোট অস্ত্র রপ্তানি ছিল প্রায় ৫ কোটি ৩০ লাখ ডলারের, যার মধ্যে বিমানের খুচরা যন্ত্রাংশ, গোলাবারুদ, ক্ষেপণাস্ত্র, সাঁজোয়া যান, হাল্কা অস্ত্র এবং গোলাবারুদ।

গাজা উপত্যকায় দখলদার ইসরাইলের হত্যাযজ্ঞ শুরুর সাথে সাথে ফিলিস্তিনের সমর্থক বিভিন্ন সংগঠন ইসরাইলে অস্ত্র রপ্তানি রোধে বহু পদক্ষেপ নেয়ার চেষ্টা করেছে। চলতি বছর ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি, হেগের আপিল আদালত রায় দেয় যে নেদারল্যান্ডসের উচিত ইসরাইলকে F-35 যুদ্ধবিমানের খুচরা যন্ত্রাংশ সরবরাহ বন্ধ করা যাতে ইসরাইল গাজায় বোমা বর্ষণ বন্ধ করে। কারণ এই যুদ্ধবিমান ব্যবহার করে ইসরাইল আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করতে পারে।

এ অবস্থায়, ব্রিটেনের নতুন পদক্ষেপ ইসরাইলকে আরো বেপরোয়া করে তুলবে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একটি কৌশলগত মিত্র হিসাবে, ব্রিটেন সবসময়ই ইসরাইলের স্বার্থে সক্রিয় ভূমিকা পালন করে আসছে। এসব ভূমিকার মধ্যে রয়েছে ইসরাইলের পারমাণবিক অস্ত্র উন্নয়ন কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ এবং সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বিশেষ করে গাজা উপত্যকায় নিপীড়িত ফিলিস্তিনি জনগণকে দমন ও হত্যার জন্য বিভিন্ন ধরনের সামরিক সরঞ্জাম পাঠানো।

ইসরাইলের অব্যাহত আগ্রাসনের প্রতিবাদে গত ৭ অক্টোবর হামাসের আল-আকসা তুফান অভিযান শুরু এবং এরপর গাজা উপত্যকায় ইসরাইলের সর্বাত্মক আক্রমণে নিহত ফিলিস্তিনের সংখ্যা ২৯ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। ব্রিটিশ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এবং এই দেশের প্রধান দুটি রাজনৈতিক দল কনজারভেটিভ পার্টি এবং লেবার পার্টি বহুবার গাজায় ইসরাইলের গণহত্যার প্রতি তাদের সমর্থন ঘোষণা করেছে। এমনকি ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক তেল আবিবের সাথে একাত্মতা প্রকাশের জন্য ইসরাইল ভ্রমণ করেন এবং ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনইয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। গাজা যুদ্ধের প্রথম মাসগুলোতে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং জার্মান চ্যান্সেলর ওলফ শুল্টজের মতো ঋষি সুনাকও হামাস এবং ফিলিস্তিনের অন্যান্য প্রতিরোধ সংগঠনগুলো ধ্বংস না হওয়া পর্যন্ত যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করে।

যাইহোক, বর্তমানে যখন ইসরাইল গাজা উপত্যকার দক্ষিণে রাফাহ শহরে বড় আকারে স্থল হামলার পরিকল্পনা করছে, তখন গাজায় ইসরাইলের যেকোনো আগ্রাসনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক সমাজের  তীব্র বিরোধিতার কথা বিবেচনা করে লন্ডন সরকার তার অবস্থান থেকে সরে আসতে বাধ্য হয়েছে। ব্রিটিশ সরকারের সূত্রের বরাত দিয়ে মার্কিন গণমাধ্যম ব্লুমবার্গ জানিয়েছে, রাফাহতে ইসরাইল স্থল অভিযান চালানোর চেষ্টা করায় লন্ডন তাদের কাছে অস্ত্র রপ্তানি বন্ধ করে দিতে পারে। এ অবস্থায় লন্ডন হাইকোর্ট ইসরাইলে ব্রিটেনের তৈরি অস্ত্র রপ্তানি স্থগিত করার অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করে রায় দেয়ায় সরকার নীতি কি হবে সেটাই এখন দেখার বিষয়।#

পার্সটুডে/রেজওয়ান হোসেন/১৭

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন