মে ২২, ২০২৪ ২০:০০ Asia/Dhaka
  • মার্কিন ধনকুবেররা কি ফিলিস্তিন-বিরোধী মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধ চালাচ্ছে?
    মার্কিন ধনকুবেররা কি ফিলিস্তিন-বিরোধী মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধ চালাচ্ছে?

মার্কিন ব্যবসায়ী নেতারা এবং বিলিয়নেয়াররা তথা শত শত কোটি ডলারের মালিকরা গাজায় ইসরাইলের যুদ্ধ সম্পর্কে জনমতে প্রভাব ফেলতে একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ চালু করেছেন এবং পুলিশ ব্যবহার করে কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনিপন্থী বিক্ষোভ ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ ব্যবহার নিউইয়র্কের মেয়রকে আহ্বান জানিয়েছেন।

ওয়াশিংটন পোস্টের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মার্কিন ধনকুবেররা গাজার যুদ্ধের কাহিনী বদলে দিতে হোয়াটসঅ্যাপের একটি গ্রুপে যোগ দিয়েছেন। জনমত পরিবর্তনের লক্ষ্য নিয়ে গত ১২ অক্টোবরে চালু হওয়া এই গ্রুপের সদস্যদের মধ্যে রয়েছে স্টারবাকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হোভার্ড সুলজ্, ডেল কোম্পানির প্রতিষ্ঠাতা মাইকেল ডেল এবং ডোনাল্ড ট্রাম্পের জামাতার ভাই জশুয়া কুশনার।

পুলিশ ব্যবহার করে কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনিপন্থী বিক্ষোভ ছত্রভঙ্গ করতে নিউইয়র্কের মেয়র এরিক অ্যাডামসকে উস্কে দেয়ার চেষ্টা করেছেন এই গ্রুপের সদস্যরা। এইসব তৎপরতা থেকে বোঝা যায় সংবাদকে বিকৃত বা সেন্সর করা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের মুক্ত চিন্তা ও প্রতিবাদ দমনের চেষ্টা করা হচ্ছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে যা গণতান্ত্রিক নীতির পরিপন্থী।

হোয়াটসঅ্যাপের ওই একই গ্রুপ প্রতিবাদ বিক্ষোভের সময় পুলিশকে সহায়তা দিতে প্রাইভেট বিশেষজ্ঞ নিয়োগের প্রস্তাব দিয়েছে। এ থেকে বোঝা যায় প্রতিবাদ বিক্ষোভ দমনের জন্য মার্কিন ধনকুবেরদের সম্পদ ব্যবহারের চেষ্টা চলছে। এই গ্রুপের সদস্য সংখ্যা ১০০'রও বেশি এবং গ্রুপটির নাম 'ইসরাইলের চলমান ঘটনা-প্রবাহ'।

দৈনিক ওয়াশিংটন পোস্টের রিপোর্ট অনুযায়ী হোয়াটসঅ্যাপের এ গ্রুপটি চালু করেছেন বিশিষ্ট রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ী ব্যারি স্টার্নলিখ্ত্। তিনি একজন কর্মীর মাধ্যমে এই গ্রুপের চ্যাটে যুক্ত হন। ওই কর্মী গত অক্টোবর মাসে জানিয়েছেন যে গ্রুপটির দায়িত্ব বা মিশন হল মার্কিন জনমতের যুদ্ধে ইসরাইলকে বিজয়ী হতে সহায়তা দেয়া যদিও ইসরাইল গাজার বাস্তব যুদ্ধে জয়ী হওয়ার চেষ্টা করছে।

ইসরাইল গাজায় ৩৫ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু এবং অবরুদ্ধ এই এলাকার বেশিরভাগ মানুষই গৃহহারা হয়ে উদ্বাস্তু  হয়েছেন। দৈনিকটি আরও জানিয়েছে, হোয়াটসঅ্যাপের এই গ্রুপের ১২ জনেরও বেশি সদস্য বিলিয়নেয়ার বা শত শত কোটি ডলারের মালিক।

যুদ্ধ চলাকালে এই গ্রুপের সদস্যরা ইসরাইলের সাবেক প্রধানমন্ত্রী নাফতালি বেনেট ও নেতানিয়াহুর মন্ত্রীসভার সদস্য বেনি গান্তস এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত ইসরাইলি রাষ্ট্রদূত মাইকেল হার্তযুগের সঙ্গে প্রাইভেট অনেক বৈঠকে মিলিত হয়েছেন।  এই গ্রুপের সদস্যরা এমন একটি ছায়াছবি নির্মাণে ইসরাইলকে সহায়তা দিয়েছেন যে ছায়াছবিতে দেখানো হয়েছে, গত ৭ অক্টোবরে হামাসের অভিযানে প্রায় ১২০০ জন ইসরাইলি নিহত হয়েছে। ইসরাইলি সেনারা এই ছায়াছবি নির্মাণ করেছে।

ওয়াশিংটন পোস্ট আরও জানিয়েছে, স্টার্নলিখ্ত্ গত নভেম্বর মাসে নানা গণমাধ্যম ও বড় বড় ব্যবসায়ীদের সহায়তায় হামাসের বিরুদ্ধে ৫ কোটি ডলারের একটি ক্যাম্পেইন চালু করে। এই ক্যাম্পেইন বা সম্মিলিত প্রচেষ্টা ছাত্র আন্দোলন ও বাক-স্বাধীনতার মোকাবেলায় কতটা প্রভাবে ফেলেছে তা তদন্ত করা জরুরি।

এইসব ঘটনায় এটা স্পষ্ট যে অর্থনৈতিক ক্ষমতা রাজনৈতিক ও সামাজিক সিদ্ধান্তগুলোর ওপর প্রভাব রাখতে সক্ষম এবং এ জাতীয় প্রভাব স্বাধীনতা ও সামাজিক ন্যায় বিচারের জন্য ক্ষতিকর। তাই ক্ষমতা ও সম্পদের অপব্যবহার রোধের জন্য পদক্ষেপ নেয়া জরুরি। #

পার্সটুডে/এমএএইচ/২২

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।

 

       

 

 

 

 

 

ট্যাগ