কেন ফার্সি ভাষা ভারতের ইতিহাস থেকে অবিচ্ছিন্ন?
(last modified Sun, 17 Nov 2024 13:42:32 GMT )
নভেম্বর ১৭, ২০২৪ ১৯:৪২ Asia/Dhaka
  • ফার্সি ভাষা ভারতের ইতিহাসের অবিচ্ছিন্ন অংশ
    ফার্সি ভাষা ভারতের ইতিহাসের অবিচ্ছিন্ন অংশ

পার্স-টুডে-আন্তর্জাতিক নুর মাইক্রোফিল্ম সংস্থা ভারতের অন্ধ্র প্রদেশে তিন কোটি ত্রিশ লাখ পাতার ফার্সি সনদকে ইলেকট্রনিক ও ডিজিটাল পদ্ধতিতে সংরক্ষণ করেছে।

ওইসব পাতা ওই প্রদেশের সরকারি দলিল-কেন্দ্রে বা মহাফেজখানায় রাখা হয়েছে। ভারতের বিভিন্ন যুগের ঐতিহাসিক এইসব দলিল-পত্র নানা শাসনামলের। যেমন, বাহমানি সুলতান, কুতুবশাহী সুলতান, আদেলশাহী শাসনামল, মুঘল ও আসেফ জাহি সরকারের, ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির যুগের এবং ভারতের স্বাধীনতা পরবর্তী যুগের। ফার্সি ভাষার সনদ বা দলিল ছাড়াও এখানে রয়েছে তেলেগু, কানাড়ি, মারাঠি, উর্দু ও ইংরেজি ভাষার দলিল। 

অন্ধ্র প্রদেশের আর্কাইভ বা মহাফেজখানার দলিল-পত্রের মোট সংখ্যা চার কোটি ত্রিশ লাখেরও বেশি। এসবের মধ্যে তিন কোটি ত্রিশ লাখ দলিলই ফার্সি ভাষায় লেখা। তাই এইসব দলিলকে ইরান ও ভারতের যৌথ উত্তরাধিকারের অংশ বলা যায়। সামরিক ব্যবস্থা, সামন্ত বা জমিদারি প্রথা, চিঠি-পত্র ও নানা ধরনের লিখিত বিষয় এইসব দলিলের বিষয়বস্তু। 

গত বছর ভারত ও ইরানের মধ্যে একটি সমঝোতার আওতায় নুর মাইক্রোফিল্ম সংস্থা প্রাচীন ও ঐতিহাসিক দলিল-পত্র সংরক্ষণ বিষয়ে কাজ শুরু করে। এই সমঝোতাকে অনেকেই ভারত ও ইরানের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সাংস্কৃতিক সহযোগিতার সনদ বলে উল্লেখ করেছেন। সংস্থাটি ওই সহযোগিতার আওতায় দলিল-পত্রের মেরামত, তালিকাকরণ ও ডিজিটালকরণ এবং সুবিন্যস্তকরণ করার কাজ করছে।

এই প্রকল্প বা পরিকল্পনার আওতায় শুরুতেই ভারতীয় আর্কাইভের ৫৩টি বইয়ের আকারে ৪২ হাজার সনদের ডিজিটালকরণ করা হয়েছে ও ৫ লাখ ৮০ হাজার পাতার দলিল মেরামত করা হয়েছে। ভারত ও ইরানের সাংস্কৃতিক উত্তরাধিকার সংরক্ষণ ও পুনরুজ্জীবন এখন এ দুই দেশের সাংস্কৃতিক সম্পর্কে দুই প্রধান গুরুত্বপূর্ণ দিক হিসেবে স্বীকৃত। 

ইরান ও ভারতের দ্বিপাক্ষিক সাংস্কৃতিক যোগাযোগ বিষয়ে গত বছর তেহরানে অনুষ্ঠিত হয়েছিল 'ভারতে ফার্সি ভাষার অবস্থান' শীর্ষক একটি বৈঠক বা সম্মেলন।  ইরানে ভারতের সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের উপদেষ্টা বলরাম শুক্লা এ বৈঠকে বলেছিলেন, ফার্সি ভাষাকে ভারতের ইতিহাস থেকে বিচ্ছিন্ন করা সম্ভব নয়, এই ভাষার মাধ্যমে ইরান ও ভারতের মধ্যে যে বন্ধন গড়ে উঠেছে তা কখনও ছিন্ন করা সম্ভব নয়। 

ইরানে নিযুক্ত ভারতের রাষ্ট্রদূত রুদ্র গৌড়াও শেরেস্তও ওই অনুষ্ঠানে ভারত ও ইরানের সাংস্কৃতিক সম্পর্কের জন্য ফার্সি ভাষা জানার গুরুত্ব তুলে ধরে বলেছিলেন, এ দুই দেশের সাংস্কৃতিক অভিন্নতায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে ফার্সি এবং এই যোগাযোগ বা বিনিময় অবশ্যই অব্যাহত রাখা উচিত।   #

পার্সটুডে/এমএএইচ/১৭

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।