১৭ হাজার ইরানি হত্যায় জড়িত সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর প্রতি পাশ্চাত্যের সমর্থন
(last modified Tue, 14 Jan 2025 13:37:10 GMT )
জানুয়ারি ১৪, ২০২৫ ১৯:৩৭ Asia/Dhaka
  • প্যারিসে ইরান বিরোধী সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর বৈঠক: ইরানের সমালোচনা
    প্যারিসে ইরান বিরোধী সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর বৈঠক: ইরানের সমালোচনা

পার্সটুডে- প্যারিসে পিপলস মোজাহেদিন নামে পরিচিত ইরান বিরোধী সন্ত্রাসী মোনাফেকিন গোষ্ঠীর বৈঠকের পর, তাদের প্রতি ফ্রান্সের সমর্থনকে ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র সন্ত্রাসবাদ ইস্যুতে ওই দেশটির দ্বিমুখী আচরণ হিসাবে অভিহিত করেছেন।

ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ইসমাইল বাকাই ফ্রান্সে ইরান বিরোধী এই সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর বৈঠক আয়োজনকে সন্ত্রাসবাদের প্রতি সমর্থন এবং ফ্রান্স সরকারের আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের স্পষ্ট উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করে এর নিন্দা করেছেন।

ফ্রান্স চার দশকেরও বেশি সময় ধরে ইরান বিরোধী এই সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর নেতাদের আতিথ্য দিয়ে আসছে। এই সন্ত্রাসী সংগঠনটি সম্প্রতি বেশ কয়েকজন ব্যর্থ ও কুখ্যাত পশ্চিমা রাজনীতিবিদদের উপস্থিতিতে একটি বৈঠক করেছে। ইউরোপীয় ও মার্কিন রাজনীতিবিদদের সাথে এ ধরনের বৈঠক করার মাধ্যমে এই সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর একটি লক্ষ্য হল পাশ্চাত্যকে খুশী করা এবং তাদের হয়ে ইরানের জনগণের বিরুদ্ধে তৎপরতা চালিয়ে যাওয়া।  

সব ধরনের অপরাধে যুক্ত এই সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর সদস্যদের সকল অপকর্মের রেকর্ড রয়েছে। ইরানে ইসলামী বিপ্লবের বিজয়ের পর থেকে তারা অসংখ্য সন্ত্রাসী অভিযান চালিয়ে প্রায় ১৭০০০ ইরানী নাগরিককে হত্যা করেছে, যাদের মধ্যে উচ্চ পর্যায় রাজনৈতিক ও সামরিক কর্মকর্তাদের থেকে শুরু করে সাধারণ নাগরিকরা পর্যন্ত রয়েছে।

ইরানের বিরুদ্ধে আরোপিত আট বছরের যুদ্ধের সময় সাদ্দাম সরকারের সহযোগিতায় ইরাকের শিয়া ও কুর্দিদের দমনেও এই সন্ত্রাসী গোষ্ঠী সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছিল। সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করার দাবিদার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপীয় সরকারগুলো যদি ইরান বিরোধী এই সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর প্রতি সমর্থন না দিত তাহলে তারা অনেক আগেই সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে যেত।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপের কয়েকটি দেশ এক সময় এই মোনাফেকিন গ্রুপটিকে সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেছিল, কিন্তু ইরানের সাথে শত্রুতার কারণে তারা এই সন্ত্রাসী গোষ্ঠীকে ব্যবহার করার জন্য তাদেরকে সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর তালিকা থেকে বাদ দেয়।  

সাদ্দামের পতন এবং ইরাক দখলের পর আমেরিকা ইরাকের আশরাফ ঘাঁটিকে এই সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর নিরাপদ আশ্রয়ে পরিণত করেছিল। কিন্তু ইরাকের জনগণ ও সরকারের চাপের মুখে মার্কিন সরকার তাদেরকে আলবেনিয়ায় স্থানান্তর করেছিল। কিন্তু ইরান বিরোধী এই গোষ্ঠীর নেতারা এখনও ফ্রান্সকে তাদের কর্মকাণ্ডের সদর দপ্তর হিসাবে ব্যবহার করছে।

প্রতি বছর প্যারিসে বৈঠকের আয়োজন করে সেখানে আমেরিকা, ইউরোপ এবং কয়েকটি আরব দেশের সাবেক ও বর্তমান রাজনীতিবিদদের আমন্ত্রণ জানানো হয়। ইরানের সাথে আমেরিকার বিদ্বেষ ও শত্রুতাপূর্ণ সম্পর্ক থাকায় প্যারিস বৈঠকে তাদের উপস্থিতি এই বৈঠককে আরো আকর্ষণীয় করে তুলেছে। ট্রাম্পের প্রথম শাসনামলে তার ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স, ট্রাম্প প্রশাসনের সেক্রেটারি অফ স্টেট মার্কো রুবিও, নিউইয়র্কের সাবেক মেয়র ও ট্রাম্পের সাবেক আইনজীবী রুডি গিউলিয়ানি এবং যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন বোল্টনের মতো ব্যক্তিরা এ ধরনের বৈঠকে উপস্থিত থাকেন।

বার্তা সংস্থা রয়টার্স এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ইউক্রেন ও রাশিয়া বিষয়ক ট্রাম্পের বিশেষ দূত ‘কিথ ক্লুগ’ শনিবার প্যারিসে ইরান বিরোধী সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। ক্লাগ এর আগেও এ ধরণের বৈঠকে অংশ নিয়েছেন এবং বক্তৃতাও দিয়েছেন। এসব বৈঠকে মার্কিন কর্মকর্তাদের উপস্থিতি থেকে যায় যে তারা সবসময় এ ধরনের বৈঠককে ইরানের বিরুদ্ধে হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহার করে। ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর তাদেরকে ইরানের বিরুদ্ধে ব্যবহারের মাত্রা আরো বাড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। #

পার্সটুডে/রেজওয়ান হোসেন/১৪

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।