'তোমরা খুনি' বলেই ইসরায়েলি পর্যটকদের বের করে দিলেন স্পেনিশ রেস্তোরাঁ মালিক
https://parstoday.ir/bn/news/world-i150632-'তোমরা_খুনি'_বলেই_ইসরায়েলি_পর্যটকদের_বের_করে_দিলেন_স্পেনিশ_রেস্তোরাঁ_মালিক
পার্সটুডে:  গাজায় গণহত্যা সমর্থনকারী ৮ ইহুদি পর্যটককে সম্প্রতি স্পেনের এক ছোট্ট রেস্তোরাঁ থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে। ঘটনাটি বিশ্বজুড়ে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে এবং নানা মহলে প্রশংসাও কুড়িয়েছে।
(last modified 2025-09-11T14:06:22+00:00 )
জুলাই ২৪, ২০২৫ ১৬:০৬ Asia/Dhaka
  • রেস্তোরাঁ থেকে ইসরায়েলি পর্যটনদের বহিষ্কার করা হয়
    রেস্তোরাঁ থেকে ইসরায়েলি পর্যটনদের বহিষ্কার করা হয়

পার্সটুডে:  গাজায় গণহত্যা সমর্থনকারী ৮ ইহুদি পর্যটককে সম্প্রতি স্পেনের এক ছোট্ট রেস্তোরাঁ থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে। ঘটনাটি বিশ্বজুড়ে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে এবং নানা মহলে প্রশংসাও কুড়িয়েছে।

গাজা উপত্যকায় চলমান যুদ্ধাবস্থার প্রেক্ষাপটে ইউরোপজুড়ে জনমতের প্রতিক্রিয়ার অংশ হিসেবে স্পেনের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের শহর ভিগোর 'মিমাসা' নামক একটি রেস্তোরাঁ হঠাৎ করেই আন্তর্জাতিক মনোযোগের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে।

ঘটনার সূত্রপাত একটি ভিডিও দিয়ে, যা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। সেখানে দেখা যায়, রেস্তোরাঁর মালিক ৮ জন ইসরায়েলি পর্যটককে স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিচ্ছেন যে, তিনি তাদের সেবা দিতে আগ্রহী নন। তিনি গাজার চলমান পরিস্থিতি নিয়ে কঠোর প্রতিক্রিয়াও জানান।

ভিডিওতে মালিক বলতে শোনা যায়: “তোমরা ফিলিস্তিনিদের হত্যা করছ, যাও গাজায় গিয়ে খাও!”

“তোমরা মানুষ হত্যা করো, তারপর বেড়াতে চলে আসো! এখান থেকে বেরিয়ে যাও!”

পাশাপাশি, ভিডিওর পেছনে ‘ফিলিস্তিন মুক্ত হোক!’ ও ‘ইহুদিবাদ নিপাত যাক!’- স্লোগানও শোনা যায়।

এই ঘটনার পর ইসরায়েলপন্থী কিছু অনলাইন গ্রুপ রেস্তোরাঁটির বিরুদ্ধে ক্যাম্পেইন চালায়, তা বয়কটের ডাক দেয়। কিন্তু এর বিপরীতে, বহু স্থানীয় মানুষ এবং এমনকি বিদেশি পর্যটকেরাও রেস্তোরাঁটির এই মানবিক ও সাহসী অবস্থানের প্রশংসা করে সেখানে ভিড় জমাতে শুরু করেন।

কয়েক দিনের মধ্যেই রেস্তোরাঁটির ক্রেতার সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে বেড়ে যায়। অনেকেই জানান, তারা একমাত্র এই প্রতিবাদী মনোভাবের প্রতি সংহতি জানাতেই সেখানে এসেছেন।

রেস্তোরাঁর মালিক পরে নিজের সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টে একটি বার্তা দিয়ে এই অভাবনীয় সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

যদিও ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম ও কিছু অনলাইন ইহুদিগোষ্ঠী এই ঘটনার সমালোচনা করেছে, তবু এটি ইউরোপজুড়ে ক্রমবর্ধমান সেই আন্দোলনের প্রতিফলন, যেখানে মানুষ ফিলিস্তিনে মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাচ্ছে।

সম্প্রতি ইউরোপের বহু দেশে ইসরায়েলসংশ্লিষ্ট কোম্পানি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে বয়কটের ডাক জোরালো হয়েছে, যারা কোনোভাবে তেল আবিবের দখলদার নীতিকে সমর্থন বা সহযোগিতা করছে।

স্পেন সরকার এখনো এ বিষয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানায়নি। তবে বিশ্লেষকদের মতে, এই ঘটনা ইউরোপের জনমনে একটি পরিবর্তনের ইঙ্গিত দেয়—একটি পরিবর্তন, যা এখন কেবল রাজপথেই নয় বরং রেস্তোরাঁ, দোকানপাট এমনকি পর্যটন ক্ষেত্রেও প্রবেশ করেছে।

এই ঘটনা প্রমাণ করে যে, যুদ্ধ ও নিপীড়নের মাঝেও ছোট ছোট ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো হয়ে উঠতে পারে বৈশ্বিক ন্যায়বোধ ও সংহতির কণ্ঠস্বর।#

পার্সটুডে/এমএআর/২৪