ইরানের বিরুদ্ধে চাপ ও হুমকির কৌশল ব্যর্থ হয়েছে: ইউরোপীয় থিঙ্ক ট্যাঙ্ক
-
ইরানের বিরুদ্ধে চাপ ও হুমকির কৌশল ব্যর্থ হয়েছে: ইউরোপীয় থিঙ্ক ট্যাঙ্ক
পার্সটুডে-ইউরোপীয় ইউনিয়ন সিকিউরিটি ইনস্টিটিউট স্বীকার করেছে যে ইরানের বিরুদ্ধে চাপ ও হুমকির কৌশল ব্যর্থ হয়েছে।
ইউরোপীয় বিশ্লেষকরা মনে করেন যে তেহরানের সাথে কূটনৈতিক অচলাবস্থা অব্যাহত থাকলে জ্বালানি সংকট, প্রতিশোধমূলক সংঘাত এবং বিশ্বব্যবস্থার পতনের একটি চক্র তৈরি হবে; এমন পরিস্থিতি সরাসরি ইউরোপীয় নিরাপত্তা ও অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। স্টুডেন্ট নিউজ এজেন্সির বরাত দিয়ে পার্সটুডে অঅরও জানায়, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ইনস্টিটিউট ফর সিকিউরিটি স্টাডিজ (EUISS) স্বীকার করেছে যে ইরানের বিরুদ্ধে চাপ ও হুমকির কৌশল ব্যর্থ হয়েছে এবং কূটনৈতিক অচলাবস্থা অব্যাহত থাকলে ইউরোপীয় নিরাপত্তা ও অর্থনীতিই হুমকির মুখে পড়বে।
EUISS সতর্ক করে দিয়েছে যে তেহরানের সাথে কূটনীতির পথ বন্ধ করলে পশ্চিম এশিয়ায় আরও বিস্তৃত সংঘর্ষের পথ তৈরি হতে পারে। ইরানের বিরুদ্ধে ইহুদিবাদী ইসরাইলের আরোপিত ১২ দিনের যুদ্ধের কথা উল্লেখ করে থিঙ্ক ট্যাঙ্ক স্বীকার করেছে: ১২ দিনের যুদ্ধের জন্য ইসরাইল এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে বিশাল মূল্য দিতে হয়েছে। EUISS অনুসারে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উন্নত ইন্টারসেপ্টর ক্ষেপণাস্ত্র মজুদের প্রায় এক চতুর্থাংশ এই যুদ্ধে ব্যবহৃত হয়েছিল। ইউরোপীয় এই থিঙ্ক ট্যাঙ্কের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, সম্পদের এই ক্ষতি ভবিষ্যতের হুমকি মোকাবেলায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইসরাইলের ক্ষমতাকে দুর্বল করে দিয়েছে।
EUISS জোর দিয়ে বলছে যে ইরান তার ক্ষেপণাস্ত্র ক্ষমতা বজায় রেখেছে এবং রাশিয়া ও চীনের সম্ভাব্য সহায়তায়, তার বিমান প্রতিরক্ষা এবং ক্ষেপণাস্ত্র মজুদ পুনর্নির্মাণ করছে।
ইউরোপের বিশ্বাসযোগ্যতার পতন
অন্যদিকে, ইউরোপীয় দেশগুলো সম্প্রতি পারস্য উপসাগরীয় দেশগুলোর সাথে একটি যৌথ বিবৃতি জারি করেছে। ওই বিবৃতিতে ইরানের তিনটি দ্বীপের (বু মুসা, তোম্বে বোজোর্গ এবং তোম্বে কুচাক) মালিকানার জন্য সংযুক্ত আরব আমিরাতের দাবি নিশ্চিত করে একটি ঝুঁকিপূর্ণ কূটনৈতিক পন্থা শুরু করেছে।
এ বিষয়ে বিশিষ্ট রাজনৈতিক বিশ্লেষক আব্বাস সালিমি নামিন বলেছেন: এই পদক্ষেপ কেবল নিরপেক্ষতা বজায় রাখার এবং আঞ্চলিক সরকারগুলোর আঞ্চলিক অখণ্ডতার প্রতি শ্রদ্ধাশীলতার ক্ষেত্রে ইউরোপীয় ইউনিয়নের ঐতিহাসিক বিশ্বাসযোগ্যতাকেই নষ্ট করে না বরং ইরানি জাতির দৃষ্টিকোণ থেকে, একটি স্বাধীন দেশের আঞ্চলিক অখণ্ডতা ভঙ্গের সুস্পষ্ট ইন্ধন হিসেবে দেখা হয়। তিনি জোর দিয়ে বলেন: এ ধরণের অবস্থানের কারণে ইরানি জনমতের দৃষ্টিতে ইউরোপের অবশিষ্ট বিশ্বাসযোগ্যতাও দ্রুত নষ্ট হবার পথে।
এই রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ ইরানের বিরুদ্ধে স্ন্যাপব্যাক মেকানিজম' সক্রিয়করণ সম্পর্কেও সমব করেন: ইউরোপের জন্য এই মেকানিজম সক্রিয়করণ কেবল যে কোনো ফলাফলই দেয় নি তাই নয়, বরং একটি আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক ও আইনি বিপর্যয়েও পরিণত হয়েছে। এই পদক্ষেপ আবারও প্রমাণ করলো যে ইউরোপীয় রাজনীতিবিদরা বিশ্বব্যাপী উন্নয়ন এবং প্রধান খেলোয়াড়দের ভূমিকা সম্পর্কে তাদের হিসেব নিকেষে গুরুতর ভুল করেছেন। এই ভুল ইরানের সাথে ইউরোপীয় সম্পর্কের ঐতিহাসিক রেকর্ডে আরেকটি কালো অধ্যায় যুক্ত করলো। এটা এমন একটি নীতি যা কূটনীতিকে সহজতর করার পরিবর্তে উত্তেজনা সৃষ্টিকারী বিভিন্ন দাবির মাধ্যমে সংঘর্ষের পথকে শক্তিশালী করে।#
পার্সটুডে/এনএম/৯
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।