লেবাননের বিরুদ্ধে ইসরাইল-আমেরিকার যৌথ কমান্ড সেন্টার; নয়া যুদ্ধের লক্ষ্য কী?
https://parstoday.ir/bn/news/world-i153434-লেবাননের_বিরুদ্ধে_ইসরাইল_আমেরিকার_যৌথ_কমান্ড_সেন্টার_নয়া_যুদ্ধের_লক্ষ্য_কী
পার্সটুডে- লেবাননের বিরুদ্ধে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর হামলা নতুন এক পর্যায়ে প্রবেশ করেছে। ইসরায়েল যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে লেবাননের ওপর নতুন আক্রমণ শুরু করেছে। লেবানন ও ইসরায়েলের মধ্যে ২০২৪ সালের নভেম্বরে যুদ্ধবিরতি চুক্তি হয়, কিন্তু তেলআবিব বারবার তা লঙ্ঘন করে যাচ্ছে।
(last modified 2025-10-27T13:37:00+00:00 )
অক্টোবর ২৭, ২০২৫ ১৫:১৬ Asia/Dhaka
  • লেবাননের বিরুদ্ধে ইসরাইল-আমেরিকার যৌথ কমান্ড সেন্টার; এই যুদ্ধের লক্ষ্য কী?
    লেবাননের বিরুদ্ধে ইসরাইল-আমেরিকার যৌথ কমান্ড সেন্টার; এই যুদ্ধের লক্ষ্য কী?

পার্সটুডে- লেবাননের বিরুদ্ধে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর হামলা নতুন এক পর্যায়ে প্রবেশ করেছে। ইসরায়েল যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে লেবাননের ওপর নতুন আক্রমণ শুরু করেছে। লেবানন ও ইসরায়েলের মধ্যে ২০২৪ সালের নভেম্বরে যুদ্ধবিরতি চুক্তি হয়, কিন্তু তেলআবিব বারবার তা লঙ্ঘন করে যাচ্ছে।

এখন যখন গাজায় একটি ভঙ্গুর যুদ্ধবিরতি কার্যকর, তখনি লেবাননের বিরুদ্ধে নতুন যুদ্ধ শুরু করেছে। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী মার্কিন কর্মকর্তাদের সরাসরি তত্ত্বাবধানে ও সমন্বয়ে হিজবুল্লাহর অবস্থানগুলোতে ব্যাপক হামলা চালাচ্ছে। প্রশ্ন হলো—লেবাননের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের এই যৌথ সামরিক অভিযানের উদ্দেশ্য কী?

প্রধান লক্ষ্যগুলোর একটি হলো লেবানন সরকারের ওপর চা বৃদ্ধি করা, যাতে তারা হিজবুল্লাহকে নিরস্ত্র করতে বাধ্য হয়। লেবানন সরকার এর আগে বলেছিল, ২০২৫ সালের শেষ নাগাদ হিজবুল্লাহকে সম্পূর্ণ নিরস্ত্র করবে। কিন্তু লেবানন সরকারের এই প্রতিশ্রুতি হিজবুল্লাহর কঠোর বিরোধিতার মুখে পড়ে। হিজবুল্লাহর নেতারা বিশেষ করে মহাসচিব শেখ নাঈম কাসেম একাধিকবার বলেছেন, তারা কখনও অস্ত্র ত্যাগ করবেন না। সম্প্রতি কিছু আরব সুন্নি ব্যক্তিত্বও হিজবুল্লাহকে নিরস্ত্র করার বিরোধিতা করেছেন।

এ অবস্থায় যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন ও সমন্বয়ে ইসরায়েল আবারও হিজবুল্লাহর বিরুদ্ধে হামলা শুরু করেছে।

আরেকটি লক্ষ্য হলো—হিজবুল্লাহর সামরিক শক্তি পুনর্গঠনে বাধা দেওয়া। ইসরায়েল আশঙ্কা করছে, হিজবুল্লাহ সুযোগ পেলে আবারও নিজেদের সামরিক সক্ষমতা পুনরুদ্ধার করবে। সাম্প্রতিক দিনগুলোতে এমন কিছু প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে, যাতে বলা হয়েছে, হিজবুল্লাহ তাদের সামরিক ক্ষমতা পুনর্গঠন করছে এবং আগের চেয়ে আরও শক্তিশালীভাবে ইসরায়েলের মোকাবিলা করছে।

এ কারণে ইসরায়েল রাজনৈতিক সমঝোতার অপেক্ষা না করে “ধাপে ধাপে সামরিক চাপ প্রয়োগের” নীতি গ্রহণ করেছে, যাতে বাস্তবে নতুন পরিস্থিতি তৈরি করা যায়।

এই হামলাগুলোর তৃতীয় উদ্দেশ্যটি ইসরায়েলের অভ্যন্তরীণ রাজনীতির সঙ্গে সম্পর্কিত। গাজার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ও গণহত্যা চালিয়েও নেতানিয়াহু সামরিকভাবে তার মূল লক্ষ্যগুলো অর্জন করতে পারেনি বিশেষ করে ইসরায়েলি বন্দিদের মুক্তি বা হামাসকে ধ্বংস করার লক্ষ্য পূরণ হয়নি।

এ কারণে তিনি দেশের ভেতরে বিরোধীদের পাশাপাশি নিজ মন্ত্রিসভার কিছু মিত্রেরও তীব্র চাপের মুখে আছেন। এমনকি আগাম সংসদ নির্বাচন আয়োজনের সম্ভাবনা সম্পর্কেও প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। বিভিন্ন জরিপে দেখা গেছে, লিকুদ পার্টির প্রতি জনগণের আস্থা কমে যাচ্ছে এবং সংসদে তাদের আসন সংখ্যাও হ্রাস পেতে যাচ্ছে।

এ কারণে লেবাননের বিরুদ্ধে হামলার মাত্রা বাড়িয়ে নেতানিয়াহু নিজের রাজনৈতিক অবস্থান রক্ষা করতে চায়। তিনি এই হামলার মাধ্যমে নিজের ও লিকুদ পার্টির ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে চাইছেন।

একজন আরব কূটনীতিক লেবাননের দৈনিক আল-জুমহুরিয়াকে বলেছেন, এই হামলার মূল উদ্দেশ্য হিজবুল্লাহকে নিশানা করা বা হিজবুল্লাহকে নিরস্ত্র করা নয়; বরং এর পেছনে রয়েছে ইসরায়েলের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক পরিস্থিতি যা সরাসরি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর স্বার্থের সঙ্গে সম্পর্কিত।

গাজায় যুদ্ধবিরতির পর নেতানিয়াহুর বিচার ও কারাদণ্ডের সম্ভাবনা আরও বেড়ে গেছে। দোষী সাব্যস্ত হয়ে তার জেলে যাওয়ার ব্যাপক আশঙ্কা রয়েছে। তাই বিচার এড়াতে নেতানিয়াহু নতুন একটি সামরিক ফ্রন্ট খুলেছেন এবং একথা অস্বীকার করা যায় না যে, লেবাননের বিরুদ্ধে যুদ্ধ আরও বিস্তৃত হতে পারে।#

পার্সটুডে/এসএ/২৭

বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।