'সুদানকে বিভক্ত করার মানচিত্র পর্যালোচনা করছে ইসরায়েলি ও পশ্চিমা থিঙ্কট্যাংক'
-
সুদানকে বিভক্ত করার মানচিত্র পর্যালোচনা করছে ইসরায়েলি ও পশ্চিমা থিঙ্কট্যাংক
পার্সটুডে- সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এর ব্যবহারকারীরা সুদানকে “বৃহৎ ইসরায়েল প্রকল্পের” নির্মম শিকার হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
দারফুর অঞ্চলের বৃহত্তম শহর “আল-ফাশের” দখলের পর র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস বা আরএসএফ যে ভয়াবহ হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে, তা গাজায় ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর নৃশংসতার কথা মনে করিয়ে দেয়। একই সঙ্গে এটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের ভণ্ডামিও প্রকাশ করে- যারা নিরপেক্ষ থাকার শ্লোগান দিয়ে আসলে এই হত্যাযজ্ঞকে প্রশ্রয় দিচ্ছে এবং সুদান সরকারের অস্ত্র নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে।
পার্সটুডের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এক্স ব্যবহারকারীসহ বহু নেটিজেন মনে করেন-সুদানের বর্তমান সংকট আসলে ইসরায়েল ও আমেরিকার ষড়যন্ত্র, যার উদ্দেশ্য দেশটিকে ভেঙে ফেলা। তারা জোর দিয়ে বলেছেন, সুদান “বৃহৎ ইসরায়েল প্রকল্পের” বলি হচ্ছে।
মোহাম্মদ মাহদি ইমানপুর নামের এক এক ইরানি নেটিজেন তার এক্স পেজে লিখেছেন, “সুদানের প্রাকৃতিক সম্পদ ও ভূ-রাজনৈতিক অবস্থান দেশটিকে ইসরায়েল ও আমেরিকার কাছে আকর্ষণীয় করে তুলেছে। পাশ্চাত্য ও ইসরায়েলের থিংক ট্যাঙ্কগুলো এখন সুদানকে বিভক্ত করার মানচিত্র নিয়ে কাজ করছে। এই ষড়যন্ত্রের সামনে মুসলিম বিশ্বের নীরবতা অগ্রহণযোগ্য।”
ফার্সভাষী আরেক নেটিজেন “সাবের” লিখেছেন,
“সুদানের ঘটনাগুলো আমাদের শিখিয়েছে—যখন জাতির মধ্যে বিভেদ তৈরি হয়, শত্রু সেই ফাটল দিয়েই প্রবেশ করে। যখন ভাই ভাইয়ের বিপক্ষে দাঁড়ায়, তখনই বিদেশি শক্তি বিভাজনের ষড়যন্ত্র সফল হয়। আসলে কোনো দেশকে কামান বা ট্যাঙ্ক ধ্বংস করে না, বরং অভ্যন্তরীণ বিরোধের কারণে দেশ ধ্বংস হয়। মুক্তির একমাত্র পথ হলো শত্রুর মোকাবেলায় ঐক্য, সময় থাকতেই তা করতে হবে।”
ইরানি এক্স ব্যবহারকারী “গোল বানু” লিখেছেন, “আজকের সুদান পাশ্চাত্যের সেই পুরোনো নাটকের নতুন সংস্করণ। স্বর্ণ কেবল অজুহাত, তাদের লক্ষ্য হলো-অস্থিতিশীলতা ও বিভাজন, যাতে আমেরিকা ও ইসরায়েল সেখানে নিজেদের স্বার্থ হাসিল করতে পারে। সুদান ‘বৃহৎ ইসরায়েল প্রকল্পের’ শিকার, কিন্তু জনগণ এখন সচেতন। উপনিবেশের ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি হবে না।”
তুরস্কের এক্স ব্যবহারকারী “নারগিস” লিখেছেন, “সুদানের কিছু অংশ এমন অঞ্চলে পড়ে, যাকে ইসরায়েল ‘প্রতিশ্রুত ভূমি’ বলে দাবি করে। যে ফিলিস্তিনে হামলা চালায়, সে-ই আসলে সুদানে হামলা চালায়।”
এক ইংরেজি ভাষী ব্যবহারকারী “নোহা” লিখেছেন, “ইসরায়েল সুদানের বন্দর থেকে লাভবান হয়। সুদান ও দক্ষিণ সুদান বিভক্ত হয়েছিল ঠিক তখনই, যখন খার্তুম ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে শুরু করেছিল। আজকের সুদান দ্বিতীয় গাজা।”
আরেক ইংরেজি ভাষী ব্যবহারকারী “সুজান” লিখেছেন, “আমেরিকা চায় দারফুর বিচ্ছিন্ন হোক, যাতে সুদান দুর্বল থাকে এবং ইসরায়েলের জন্য কোনো হুমকি না হয়। পুরো এই যুদ্ধ মুসলিম দেশগুলোর বিরুদ্ধে সাজানো এক ষড়যন্ত্র।”
আরবি ভাষী ব্যবহারকারী “মোহাম্মদ” জাতিসংঘের নিষ্ক্রিয় অবস্থার সমালোচনা করে লিখেছেন, “আমরা জানি, ইসরায়েল প্রস্তুত—সুদান ও তার জনগণের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চাপিয়ে দিতে। কিন্তু জাতিসংঘ কেন নীরব?”
রুশ ভাষী ব্যবহারকারী “আলেকজান্ডার” লিখেছেন, “ইসরায়েল শয়তানের সৃষ্টি; আর জায়নিস্টরা সুদানকে টুকরো টুকরো করতে চায়। বিশ্ব শুধু তাকিয়ে আছে- মনে হচ্ছে, গণহত্যা যেন নতুন ফ্যাশন হয়ে গেছে।”#
পার্সটুডে/এসএ/১২
বিশ্বসংবাদসহ গুরুত্বপূর্ণ সব লেখা পেতে আমাদের ফেসবুক পেইজে লাইক দিয়ে অ্যাকটিভ থাকুন।