বিশ্বব্যাপী জ্বালানি তেলের বাজারে পতন ও চীন-জাপান সংকটের তীব্রতা
https://parstoday.ir/bn/news/world-i154314-বিশ্বব্যাপী_জ্বালানি_তেলের_বাজারে_পতন_ও_চীন_জাপান_সংকটের_তীব্রতা
পার্সটুডে: গত সপ্তাহের শেষে বিশ্ব অর্থনীতি একসঙ্গে বেশ কয়েকটি বড় ঘটনার মুখোমুখি হয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে- সম্ভাব্য সুদের হার বৃদ্ধির উদ্বেগ এবং ডলারের শক্তিশালী অবস্থানের প্রভাবে তেলের দাম পড়ে যাওয়া, মার্কিন কর্মসংস্থানের নতুন তথ্যের প্রতি নেতিবাচক প্রতিক্রিয়ায় সোনার দর হ্রাস এবং সবশেষে তাইওয়ান ইস্যুতে বেইজিং এবং টোকিওর মধ্যে উত্তেজনা বৃদ্ধি।
(last modified 2025-11-23T12:24:35+00:00 )
নভেম্বর ২২, ২০২৫ ১৯:২৪ Asia/Dhaka
  • বিশ্বব্যাপী জ্বালানি তেলের বাজারে পতন ও চীন-জাপান সংকটের তীব্রতা

পার্সটুডে: গত সপ্তাহের শেষে বিশ্ব অর্থনীতি একসঙ্গে বেশ কয়েকটি বড় ঘটনার মুখোমুখি হয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে- সম্ভাব্য সুদের হার বৃদ্ধির উদ্বেগ এবং ডলারের শক্তিশালী অবস্থানের প্রভাবে তেলের দাম পড়ে যাওয়া, মার্কিন কর্মসংস্থানের নতুন তথ্যের প্রতি নেতিবাচক প্রতিক্রিয়ায় সোনার দর হ্রাস এবং সবশেষে তাইওয়ান ইস্যুতে বেইজিং এবং টোকিওর মধ্যে উত্তেজনা বৃদ্ধি।

গত কয়েকদিনে জ্বালানি বাজার, মূল্যবান ধাতু এবং পূর্ব এশিয়ার অর্থনৈতিক সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন এসেছে। মার্কিন সুদের হার কমানোর সম্ভাবনা কমে যাওয়ায় এবং ডলার শক্তিশালী হওয়ায় তেল ও সোনার দাম চাপের মুখে পড়েছে। একইসঙ্গে এশিয়ার দুই পরাশক্তি চীন ও জাপানের মধ্যে নতুন বাণিজ্যিক নিষেধাজ্ঞা ও উত্তেজনা পূর্ব এশিয়ার স্থিতিশীলতা নিয়ে উদ্বেগ আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।

পার্সটুডে'র এই বিশেষ প্রতিবেদনে সপ্তাহের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক ও ভূরাজনৈতিক ঘটনাগুলো পর্যালোচনা করা হলো:

তেলের দামে ধস: সরবরাহ উদ্বৃত্তের আশঙ্কা এবং ডলারের প্রভাব

বিশ্ব বাজারে টানা তৃতীয় দিনের মতো তেলের দাম ধারাবাহিকভাবে কমেছে। বিশ্লেষকদের মতে, এই পতনের দুটি প্রধান কারণ রয়েছে: প্রথমত, রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে মার্কিন শান্তি উদ্যোগ এগিয়ে গেলে বিশ্বব্যাপী সরবরাহ বাড়ার সম্ভাবনা এবং দ্বিতীয়ত, ডলারের উল্লেখযোগ্য শক্তিশালী হওয়া।

রিপোর্ট অনুযায়ী, ব্রেন্ট ক্রুডের দাম ১.৩৬% কমে ৬২ ডলার ৫০ সেন্টে এবং ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েট ক্রুডের দাম ১.৫৬% কমে ৫৮ ডলার ৭ সেন্টে দাঁড়িয়েছে। সরবরাহ উদ্বৃত্ত হওয়ার আশঙ্কায় গত সপ্তাহে উভয় সূচকই ২.৫% এর বেশি দাম হারিয়েছে।

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবিত শান্তি পরিকল্পনা পরীক্ষা করতে সম্মত হলেও, রোসনেফট এবং লুকোইলের মতো রাশিয়ান তেল কোম্পানিগুলোর বিরুদ্ধে নতুন নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। তবে, অনেক বিশেষজ্ঞ শান্তি চুক্তি চূড়ান্ত হওয়ার গতি এবং নতুন নিষেধাজ্ঞার কার্যকারিতা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন।

চীন-জাপান উত্তেজনা বৃদ্ধি: সামরিক হুমকি থেকে অর্থনৈতিক চাপ

বিশ্ব বাজারের এই ঝড়ের মধ্যেই পূর্ব এশিয়ায় নতুন সংকটের আগুন জ্বলে উঠেছে। চীন ঘোষণা করেছে, জাপান থেকে সমস্ত সামুদ্রিক খাদ্য আমদানি তারা পুরোপুরি নিষিদ্ধ করবে। এই পদক্ষেপ এসেছে জাপানের প্রধানমন্ত্রী সানাই তাকাইচির সেই বক্তব্যের জবাবে, যেখানে তিনি তাইওয়ান রক্ষায় জাপানের সম্ভাব্য সামরিক হস্তক্ষেপের কথা বলেছিলেন।

বেইজিং এই মন্তব্যকে নিজেদের ঐতিহাসিক ‘রেডলাইন' লঙ্ঘন বলে মনে করেছে। রাজনৈতিক সতর্কতার পাশাপাশি চীনা জনগণকে জাপান ভ্রমণ থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে—যা জাপানের পর্যটন শিল্পে ভারী অর্থনৈতিক ধাক্কা দিতে পারে।

বিশ্লেষকদের মতে, এই সংকট বৃহত্তর একটি প্রবণতার অংশ—যাকে বলা যায় “নিয়ন্ত্রিত শীতল যুদ্ধ”। এই পর্বে উত্তেজনা স্থায়ী থাকে, কিন্তু অর্থনৈতিক পারস্পরিক নির্ভরশীলতা দুই দেশকে খোলামেলা সংঘাতে যেতে বাধা দেয়। তবে সংকট ব্যবস্থাপনার দুর্বল প্রক্রিয়া এবং সামরিক যোগাযোগ বৃদ্ধির কারণে অপ্রত্যাশিত ঘটনার ঝুঁকি বিপজ্জনকভাবে বেড়ে গেছে।#

পার্সটুডে/এমএআর/২২